আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

চামড়া শিল্পের বিষ্ময়কর উন্নয়নে সরকারের অবদান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-১৮ ১১:১৯:৪১

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম কাঁচা চামড়া রফতানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত। আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি খাত চামড়া শিল্প। এ খাতে কর্মসংস্থান প্রায় ২ লাখ। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চামড়া পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বের ৮ম স্থানে ছিল। এছাড়াও সরকার এই খাতকে এগিয়ে নিতে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগে আরও দু’টি চামড়া শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২১ সালে সরকার ৬০ বিলিয়ন ডলার রফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার মধ্যে শুধু পোশাক খাত থেকে রফতানি আয় হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রফতানি আয় হবে ৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে চামড়া শিল্প থেকে রফতানি আয় ১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার। এটিকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে যা যা দরকার তার সবকিছুই করবে বর্তমান সরকার।

বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ রোধকল্পে সরকার হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প ২০১৭ সালে স্থানান্তর করেছে। আধুনিক বর্জ্য শোধনাগার ব্যবস্থা সম্বলিত ১২৮৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে। সাভারের নতুন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পরিবেশ দূষণ রোধ হবার পাশাপাশি বিদেশে গুণগত মানের চামড়া রফতানিতে সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে চামড়ার পাশাপাশি জুতা, ট্রাভেল ব্যাগ, বেল্ট ও মানিব্যাগ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া চামড়ার তৈরী নানা ফ্যান্সি পণ্যের চাহিদাও রয়েছে। বাংলাদেশে প্রচুর হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান আছে, যারা এসব পণ্য তৈরী করে বিশ্ব বাজারে রফতানি করছে। বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বড় বাজার হলো- ইটালি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স জার্মানি, পোল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। এর  বাইরে জাপান, ভারত , নেপাল ও অস্ট্রেলিয়াতেও সম্প্রতি সময়ে পণ্যটির বাজার গড়ে ওঠেছে। তবে বিশ্বে বাংলাদেশি চামড়াজাত পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলো জাপান। মোট রফতানি পণ্যের ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ যায় জাপানের বাজারে। বিশ্বে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বর্তমান বাজার ১২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা হলো শতকরা ০.৫ ভাগ ।

২০১২-১৩ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হতে আয় হয় ৯৮ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে এখাতে আয় হয় ১১২ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১১৩ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করা হয়। তারপর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয় ১১৬ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সদ্যসমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি। এতে দেখা যায় প্রতি বছরই এ খাতে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে রফতানি আয় ও পণ্যের পরিমাণ। তবে ১৫৯টি ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর ও অবকাঠামো নির্মাণজনিত সমস্যার কারণে চলতি ২০১৮ সালে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ১৩৮ কোটি ডলারের (১.৩৮ বিলিয়ন ডলার) কিছু কম হতে পারে। তবে কারখানা অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হলে আগামী বছর থেকে চামড়া পণ্য রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন