Sylhet View 24 PRINT

আমি তাদের কাউকে ছাড়ব না

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-১৬ ০০:৩০:১১

মিলা ইসলাম :: আমার সাথে যা হয়েছে, আমি গত ৬ মাস ধরে চুপ ছিলাম... সবাই জিজ্ঞেস করে যাচ্ছে মিলা মেয়েটা কি হারিয়ে গেল...?

সবাই অবাক হবে যখন জানতে পারবে আমার সাথে কি করা হয়েছে, একটা মামলার জন্য আমাকে আর আমার সকল সাক্ষীকে, আমার মেডিক্যাল রিপোর্ট গায়েব করার চেষ্টা করা হয়েছে। এমন কি আমার পুলিশ রিপোর্ট বদলাবার জন্য রিপোর্ট মাঝ রাতে ফেরত আনা হয়।যদিও পুলিশের কর্মকর্তাগণ এই অনৈতিক কাজে আসামি ও তার পক্ষের যারা কাজ করেছে তাদের কোনো রকম পাত্তা না দিয়ে আসামির নামে "খ" ও "গ" ধারায় সকল অভিযোগ প্রমাণিত করে চার্জশিট দাখিল করে।

প্রতি মুহূর্তে এই মামলার পর থেকে আমার সাথে আসামির বিভিন্ন হোমরা চোমরা হ্যাডম দ্বারা অনেক অপদস্ত করা হয়েছে। আমি এই মামলা তুলে নেইনি বলে আসামি জেলে থাকা অবস্থায় তার লোকজন দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে অনেক বদনাম করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি বুঝি না, এই ব্যক্তি কিভাবে ২০ দিনে ছাড়া পেয়ে যায় জামিন নিয়ে।

৬ মাস পার হয়ে গেছে আমি চুপ ছিলাম...কারণ অন্যায়কারী অন্য কেউ নয়...আমি বলতেও চাই না তার সাথে আমার সম্পর্কের নাম...কারণ "he is a disgrace for that holy relationship" But now it’s time, এই ছেলে আমার পিছনে কত বিশাল দল বানিয়ে আমাকে ধামা চাপা দেয়ার ট্রাই করেছে এগুলো আমি সব সামনে আনতে চাই। শুধু এই আসামি না, তার সাথে ... প্রতিষ্ঠান এর আরো দুইজন পাইলট যারা কোনোদিন আমাকে সামনা সামনি দেখেনি বা কখনো কথাও বলেনি, তারা আমাকে এমনভাবে হেনস্থা করেছে তা ভাবা যায় না...

তারা জেলে যায় আসামির সাথে দেখা করতে এবং তারাই বলেছেন আসামি তাদের বলেছিলো
"Finish her (Mila) from everywhere"

তারা তাই করেন...আমার বাবাসহ আমাকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তারা এমন কোনো নোংরা অপবাদ নাই যা দেয় নাই। তার পরিবার, তার কর্মস্থলের বন্ধুরা, এমন কি তার গার্লফ্রেন্ডরা সবাই তার পরিচালনায় আমার জীবনকে অন্ধকারে আটকে ফেলেছে।

আমি শিল্পী বা সেলিব্রেটি হওয়ার কারণে তারা আমাকে আরো বেশি নোংরা আজে বাজে কথা বলে অসম্মানিত করেন। বার বার বলেন, "baler rockstar, ai maiyare garay de"

আমি জানতে চাই, এই আসামি কিভাবে এত বড় অপরাধের পরও জামিন পেয়ে বুক ফুলায় ফ্লাই করে? জামিন পাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ পরে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয় তার কোম্পানি থেকে।

*এক তো নিয়ম অনুযায়ী এই ছেলের সাসপেন্ড হয়ে যাওয়ার কথা।

*দুই এই এয়ারলাইন এর মধ্যে থেকে এয়ারলাইনের কর্মচারীর সাথে অনৈতিক জঘন্য সম্পর্কে জড়ানোর জন্য শাস্তি হওয়া উচিত। কারণ তখন সে বিবাহিত।

*তৃতীয় এর পরেও তারা আমাকে স্ত্রী হিসেবে সন্মান না দিয়ে আরো ২ জন পাইলট উল্টা আমি রকস্টার বলে আমাকে বাজে মেয়ে বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করে এই মামলা উল্টায় দিতে চায়।

*তালাকের পরামর্শ আর তাকে মাথায় তুলে পোস্টার বয় বানায়। কোনো ব্যাপার না তোমারে আমরা বাঁচাব বলে আমার পুরো রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে যায়।

*এবং একজন জেল ফেরত perverted criminal এর যাত্রীর জীবনের দায়ভার ছেড়ে দিয়ে মস্করা করে যাচ্ছে।

অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলো, অপরাধীকে মাথায় উঠায়, তার স্ত্রীকে বেইজ্জত করে, অপরাধীর অপরাধবোধ উপলব্ধি না করে আমার মানসন্মান, আমার সংসার, আমার আত্মমর্যাদা, আমার শিল্পী হওয়ার গর্বকে কোপায় কোপায় মেরে ফেলা হলো...

আমি এদের প্রত্যেক এর বিচার চাই। আমি একজন মেয়ে আর দুর্ভাগ্যক্রমে এই দেশের একজন নারী রকস্টার হওয়ার কারণে যারা আমার এই অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার সুযোগে আমাকে লাঞ্চিত করেছে, যারা আমার মামলা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে, যারা শুধু মজা দেখার জন্য আমাকে আজ এইরকম অশান্তিতে ফেলে দিয়েছে, তাদের কাউকে আমি ছাড়বো না। আজ আমি চুপ হয়ে গেলে আর কোন মেয়ে সামাজিক ফাপর এর ভয়ে বিচার চাইবে না।

হ্যাঁ, ভালোবেসেছিলাম আমি। কিন্তু আমার এই ভালোবাসা যেভাবে আমার মানসন্মান, আমার আত্মাকে ধর্ষণ করে, এতগুলো মানুষ দ্বারা জেল থেকে নিজের গুনাহ চাপা দিতে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করে, তাকে আমি ঘৃণা করি।

দেশের মানুষদের যদি আমি কোনোদিন একটু হাসি এনে দিয়ে থাকি শিল্পী হিসেবে, তাহলে আমার প্রতিদিন এর কান্নায় ডুবে থাকা দিনগুলোর জন্য আমার মতো যত মেয়েদের এইরকমভাবে গাড়ায় দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বিচার চাইবার কারণে, আর যাতে এই দুঃসাহস না করে তোমরা প্রতিবাদ করো।

সান্ত্বনা নয়, প্রতিবাদ করো। আমার লেখাটা মন দিয়ে পড়। এটা আমার একার যুদ্ধ নয়, আমার নিজের চোখে দেখা আদালতে দাঁড়ানো অনেক মেয়ের আকুতির দৃশ্য।... আমার সান্ত্বনার দরকার নাই, আমার তোমাদের প্রতিবাদের আওয়াজ দরকার। যাতে দিনের পর দিন... বসে না থাকা লাগে, যাতে অপরাধীরা বাইরে বুক ফুলিয়ে সমাজে ফুর্তি করার সুযোগ না পায়।

যে ছেলে তার স্ত্রীকে কলঙ্কিত করতে পারে, ওই ছেলে তার...সন্মান করতে পারে না। একটি মেয়েকে তার স্বামীর হাতে আমানত হিসাবে তুলে দেয়া হয়। সেই ছেলে যখন নিজের দোষ লুকাতে তার আত্মীয় ও বন্ধুদের দ্বারা নিজের স্ত্রীকে লাঞ্চিত করে অন্ধকারে কবর দিয়ে দিতে চায় তখন তার কি শাস্তি হওয়া উচিত?

এই ছেলের জামিন বাতিল হোক, আমি গান ভুলে গিয়েছি আজকে এই মুখোশধারী... এর জন্য, আমি হাসতে ভুলে গিয়েছি, আমি স্বপ্ন দেখতে ভুলে গিয়েছি, আমি সন্মানহানি আর শিক্ষিত সমাজের মূর্খ আচরণে ধর্ষিত হয়ে আজ বাঁচতে ভুলে গিয়েছি।

আমি মিলা ইসলাম, আমার নিজের নাম ভুলে গিয়েছি, আমি হাঁসতে ভুলে গিয়েছি। আমি গান গাইতে ভুলে গিয়েছি, আমি বাঁচতে ভুলে গিয়েছি। হ্যাঁ, আমি যে পুরাটা দেশের মানুষের এত ভালোবাসা পেয়েছি, আমি তোমাদের সবার কাছে আমার সম্মান ফিরায় নিয়ে এসে, এই সামাজিক... শাস্তি চাওয়ার জন্য প্রতিবাদ করে একটি করে স্ট্যাটাস কামনা করছি। আমার বিচার এনে দাও তোমরা।

তোমাদের প্রিয়,
মিলা

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.