আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ও কোন সাধারণ মেয়ে নয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০২-২৭ ০০:৩২:২৪

খোরশেদ আলম :: জন্মগতভাবে মেয়েটির দুই হাত নেই। প্রতিবন্ধী এই মেয়েটা নিজেই নিজের অনুপ্রেরণা। দুই হাত নেই, অসচ্ছল পরিবারে জন্ম, তারপরও মেয়েটা স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা করে অনেক বড় কিছু হবে।

দিনমজুর শাহাদত হোসেনের তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় এই মেয়েটার নাম সোনিয়া আক্তার প্রিয়া। পায়ে লিখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে ক্লাস ফাইভে জিপিএ-৪.১৮ (পিএসসি) এবং অষ্টম শ্রেণিতে (জেএসসি) জিপিএ-২.৯০ অর্জন করে।

নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায় দিনমজুর বাবার আর্থিক অবস্থার কারণে। যে পরিবারে শ্রমিক বাবা এক মাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি আর দুইজন সুস্থ সন্তানকে পড়াশোনা করাতে হচ্ছে সেখানে প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে পড়াশোনা করাটা কষ্টকর ব্যাপার। মার্চ মাস চলে আসতেছে তারপরও নবম শ্রেণিতে তার ভর্তি কার্যক্রম ও পড়াশোনা শুরু হয়নি।

আমার নজরে আসামাত্রই বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম স্যার এবং ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার জনাব শাহ মিজান শাফিউর রহমান (বিপিএম), (পিপিএম) স্যারকে জানাই।
অতঃপর, সোনিয়া আক্তার প্রিয়ার পড়াশোনার দায়িত্ব বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা নিলাম।

মেয়েটার ইচ্ছা শক্তি অর্থের কাছে হার মানতে পারেনা। ওর স্বপ্ন পূরণের জন্য পাশে আছি আমরা।

আজ থেকে ও পড়াশোনা করবে, ক্লাসে যাবে। সোনিয়া আক্তার প্রিয়াদের কাছে এটা দুঃস্বপ্ন। আমরা ওর দুঃস্বপ্ন পূরণে পাশে আছি। সাভারের বিখ্যাত ও প্রাচীন প্রতিষ্ঠান অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে তাকে ভর্তি করানো হলো মানবিক বিভাগে। ধন্যবাদ প্রধান শিক্ষক রতন পিটার গোমেজকে।

আপনাদের আশেপাশে এ রকম প্রিয়াদের পাশে সকলে দাঁড়ালে ওদের স্বপ্নগুলো হারিয়ে যাবে না। সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন।

হাত-পা ছাড়া সফল, শিক্ষিত মানুষ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিক ভুজিসিক। যে নিজের গল্পটা লিখেছিল তার প্রথম বইতে 'লাইফ উইদাউট লিমিটসঃ ইন্সপাইরেশন ফর এ রিডিকুলাসলি গুড লাইফ'।

কে জানে? হয়ত একদিন আমরা সোনিয়া আক্তার প্রিয়ার গল্প শুনবো তার লিখায়।

(অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কেল, ঢাকা)

(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন