আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কমার্স পড়ুয়ারা যখন রোহিঙ্গা...

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৩-২৮ ১১:৩০:৫৮

জুনেদুর রহমান :: ডাক্তারদের জন্য যদি আলাদা বিসিএস দিতে হয় তবে ব্যাংক জব শুধু কমার্সের স্টুডেন্টদের জন্য রাখা উচিৎ এবং ক্যাডারে অন্তভুর্ক্ত করা উচিৎ।কমার্সে পড়ে জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল করেছি, যেটা এখন বুঝতে পারছি।

আমাদের পোস্টে সবাই আবেদন করতে পারে, ইঞ্জিনিয়ারও পারে আবার ডাক্তাররাও পারে। কিন্তু আমরা তাদের পোস্টে আবেদন করতে পারি না, আর সেটা করা সম্ভবও না।

কিন্তু, একজন ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ডাক্তার ব্যাংকে আবেদন করতে পারে। বিসিএস টেকনিক্যাল,স্বাস্থ্য ও সাধারণ তিনটিতেই পারে। কমার্স মূলত ফালতু একটা বিষয়। এর কোন কিছুই জবের পরীক্ষায় আসে না।

অথচ, বাংলাদেশের বেশিরভাগ স্টুডেন্ট কমার্সের। ব্যাংক এর ১০০ মার্কের প্রিলি আর ২০০ মার্কের রিটেনেও ১ টি নাম্বার ও কমার্সের সাবজেক্ট থেকে আসে না।অথচ আমরা সারাজীবন ব্যাংক নিয়া পড়লাম, চুড়ান্ত হিসাব মিলাইলাম। কিন্তু শেষমেষ জীবনের চুড়ান্ত হিসেবেই ধরা খেয়ে গেলাম।

সবার সিলেবাসের সাথে পরীক্ষার প্রশ্নের একটা না একটা মিল আছে কিন্তু বিবিএ,এমবিএ ব্যাকগ্রাউন্ডের কোন মিল নাই। প্রাইভেট সেক্টরেও একই হাল প্রায়। এখন আর কাউকে কমার্স নিতে বলি না।

যদি কেউ বলে ভার্সিটিতে একাউন্টিং পাইছি। তখন তাকে বলি ইতিহাস নিয়া পড় ভাই। সারাবছর চাকরির পড়া পড়বি আর একাডেমিক পড়া পরীক্ষার আগের দিন। দিনশেষে তুই হিরো আর বিবিএ,এমবিএওয়ালারা জিরো (সরকারি চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে)। আর সারাবছর প্রাইভেট পড়ার ঝামেলা নাই।

অনেকে বলবে, পারেন না বলে এগুলো বলছেন। আরে ভাই, আমরা তো সারাবছরই ডেবিট ক্রেডিট নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার সময়ও আমাদের কমার্সের সাবজেক্ট পড়তে হয়েছে, যেখানে অন্যরা জবের পড়াগুলো পড়েছে। আপনারা কেউ ইংরেজি, কেউ ম্যাথ, কেউ বাংলা, কেউ ইতিহাস নিয়ে পড়েছেন, তার সাথে জবের পড়া। পাচ ছয় বছর পর আপনাদের ধরা কি আমাদের পক্ষে এত সহজ?

ইতিহাসের ছাত্র হয়ে যায় ব্যাংকার, আর বিবিএ এর ছাত্র হয় অফিস সহকারী! হায় আফসোস!

সিংহভাগ স্টুডেন্ট এর জন্য কোনো সুযোগই নাই। যেহেতু স্টুডেন্ট ৫০% এর উপরে, সেহেতু আমাদের প্রায়োরিটি দিয়ে সার্কুলার দেওয়া উচিৎ। ব্যাংক খাতে হাজার কোটি খেলাপী ঋণ একসময় লক্ষ কোটি হবে যদি না কমার্সের স্টুডেন্ট নিয়োগ না দেওয়া হয়।

সরকারি ব্যাংকের অবস্থা দেখেন আর প্রাইভেট ব্যাংকের অবস্থা দেখেন। প্রাইভেট এ কমার্সের স্টুডেন্ট বেশি আর সরকারি তে কম।

বড়ই আশ্চর্যের দেশ বাংলাদেশ, উদ্ভট সব নিয়ম কানুন। কমার্সের স্টুডেন্ট মানেই যেনো রোহিঙ্গা। এই দেশে শরনার্থী হিসেবে থাকছি এটাই মনে হয় অনেক সময়। সত্যিই আমরা বঞ্চিত, সত্যিই আমরা রিফিউজি। কোন সাংবাদিক ভাইও আমাদের পক্ষে কখনও কথা বলে না, লিখেও না।

কমার্স রিলেটেড সব পরীক্ষায় কমার্স ভিত্তিক প্রশ্ন করা হোক, অথবা কমার্স উঠিয়ে দেওয়া হোক। এটা এখন সময়ের দাবি।

লেখক: শিক্ষার্থী, বিবিএস (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়)

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন