আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

দর্শক কথা: ‘আগুন পাখি জ্বলছে হৃদয়ে’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-১৪ ০১:১৭:৪২

শামসুল ইসলাম শামীম :: গৌরবের এক যুগ পালন করলো নগরনাট। সিলেটের সাংস্কৃতিক এই সংগঠনটির যেমন নিজস্ব রাজনৈতিক আদর্শ রয়েছে, তেমনি তারা মননে লালন করছে সুকুমার সংস্কৃতির অঙ্গিকার। সঙ্গীত এবং নাটক, দু’টো ধারাকেই নগরনাট সমান ভাবে ধারণ করে আছে স্বকীয় মেধায়।

যুগপূরতি উপলক্ষে রোববার সন্ধ্যায় রিকাবীবাজার কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে আয়োজন করে যুগপূরতি অনুষ্ঠান ‘আগুন পাখি জ্বলছে হৃদয়ে’। অসাম্প্রদায়িকতায় প্রোজ্জ্বল, তারুণ্যদিপ্ত নগরনাট তাদের প্রতিটি পরিবেশনায় মানুষের চেতনায় নাড়া দিয়ে গেলেও বধির ‘মানুষ’ সে নাড়ায় কতোটা সাড়া দিতে পারে? এমন প্রশ্ন সহজাত ভাবেই মৌলিক মানুষের মনে দানা বাঁধে।

‘রেফারী’; নগরনাটের ‘আগুন পাখি জ্বলছে হৃদয়ে’ আয়োজনের প্রথম পরিবেশনা। স্বল্পায়ুর এই নাটিকা চেতনাবোধ সম্পন্ন মানুষের গহণ গোপনে যে ঝাঁকুনি দিয়ে গেছে তা যদি ‘রেফারী’র তোয়াক্কা না করা ‘শিকারী’দের চেতনাবোধে নূন্যতম নাড়া দিতে পারতো তবে নিঃসন্দেহে আজকের সমাজ সকলের জন্য অভয়ারণ্য হতে পারতো। কিন্তু আফসোস, মনুষ্যরুপী ‘শিকারী’দের মনুষ্যহীনতায় আজও পাহাড় অথবা নদীর তীরে পড়ে থাকে আদিবাসী প্রজাপতিমেয়ের খুবলে খাওয়া নিথর দেহ। দাঁতাল শুয়োরের কাছে পরাস্ত তরুনীর খান্ডব্দেহ সামনে নিয়ে আজও ‘অথর্ব’ পিতা রেললাইনে আত্মাহুতির দেয়ার ‘স্বপ্ন’ দেখে! ‘রেফারী’ যে বার্তা এই সমাজের নাগের ডগায় ঝুলিয়ে দিয়েছে, সে বার্তা কি আমরা নিতে পেরেছি? এই স্বগত প্রশ্ন বুকে নেয়া ভিন্ন কি আর করতে পারে অথর্ব মানুষ।

‘আগুন পাখি জ্বলছে হৃদয়ে’র দ্বিতীয় অংশে ‘গানবাহান’র পরিবেশনা ছিলো অসাধারণ। ছোট্ট গানের পাখিদের আদুরে সুরলিপি দর্শকদের চমৎকৃত করেছে। নগরনাট তাঁর নিজস্ব পরিবেশনায় চেতনার যে বহ্নি জ্বালিয়েছে দর্শক মনে তা অতুলনীয়। সঙ্গীত যে কি অসাধারণ গণজাগরন সৃষ্টি করতে পারে, তার ছোট্ট একটি উদাহরণ হতে পারে নগরনাটের ‘আগুন পাখি জ্বলছে হৃদয়ে’!

‘আগুন পাখি আগুন পাখি, দ্রোহের গান’; বন্ধু অনন্ত বিজয় চিরঞ্জীব । জয়তু নাগরনাট, আমাদের শীতক্লিষ্ট মনে এভাবেই আগুন জ্বালিয়ে যেও!

লেখক: সিলেট ব্যুরো প্রধান, বাংলাভিশন।   

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন