Sylhet View 24 PRINT

আসুন! যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-২৩ ১২:৪০:৫৩

রমযানে শ্বশুরবাড়ি থেকে রকমারি ইফতারি এবং আম-কাঠালের জইটারিকে 'না' বলার সামাজিক উদ্যোগ এখান থেকেই নিই৷

আমার, আপনার শ্বশুরবাড়ি হয়ত অনেক পয়সাওয়ালা৷ তাদের জন্যে এসব কিছুই না৷ কিন্তু এই কুসংস্কার আমাদেরকে এমন বর্বর বানিয়েছে যে, অনেক মহিলাকে মেয়ের বাড়ি ইফতারি পাঠানোর জন্যে ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিতে আমার নিজ চোখে দেখেছি৷ কাতর হয়ে বলতে শুনেছি, মেয়ের বাড়ি ইফতারি না পাঠালে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকতে পারবে না৷ শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার সইতে হবে মেয়েটাকে৷ আরো কত কী!
ইফতারির ক্ষেত্রে আরেকটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা হচ্ছে, ইফতারি কী দিয়ে নিয়ে যাবেন৷ মাইক্রো ভাড়া করবেন, না পিকআপ ভ্যান ভরে নিয়ে যাবেন? যত বড় পরিবহন ব্যবহার করা হবে; বিয়াই বাড়ির এলাকায় তাদের মুখ ততো বেশি উজ্জ্বল হবে৷ এসবই অসুস্থ মানসিকতা৷
যেহেতু অনেকাংশে ছেলে পক্ষের চাহিদাই মেয়ে পক্ষকে এসব করতে বাধ্য করে, তাই এসব বন্ধের উদ্যোগ ছেলে পক্ষকেই আগে নিতে হবে৷ ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ে পক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে, "ইফতারির এই সংস্কৃতি ঠিক না৷ এটি একটি কুসংস্কার৷ সামাজিক অনাচার৷ আপনাদের হয়ত দেয়ার মতো সচ্ছলতা আছে৷ কিন্তু এখানে সচ্ছলতা থাকা না থাকার প্রশ্ন না; এই যুলুমবান্ধব সংস্কৃতি বন্ধের লক্ষেই আমরা ইফতারি খাবো না৷ একদিন আপনারা এমনিতেই চলে আসবেন৷ সকলে মিলে ঘরোয়াভাবে ইফতার করে নিবো৷"
সামাজিক প্রতার নামে এই জুরপুর্বক ইফতার ও জৈষ্টের আম কাটাল আদানপ্রদান বন্ধ হউক। একজন দরিদ্র বাবা কষ্ট করে তার মেয়েকে বড় করলো, আবার বিয়ের জন্য মোটা অংকের টাকা বায়না মিটিয়ে, আসবাবপত্র দিয়ে ও অনেক অথিতিকে রসালো খাবার খাইয়ে বিয়ে দিতে হয়। আবার এই দরিদ্র বাবা দারদেনা করে রমজান মাসে বড় পক্ষের চাহিদা মতো ইফতার দিতে হয় । ইফতারের রেষ কাটতে না কাটতে আবার আম কাটালের দেওয়ার পালা, কিন্তু দরিদ্র বাবার হাতে টাকা নেই তাই এখন সুদের বিনিময়ে টাকা এনে আবারো চাহিদা মতো আম কাটাল দিতে হয়। কিন্তু সারাটা বছর জুরে সুদের ঘানী টানতে হয়। এই কুসুংস্কার বন্ধ করা হউক না হলে অসংখ্য দরিদ্র বাবারা কষ্টে নীল হয়ে যাবে।
আলিম-জাহিল, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার উপর জেঁকে বসা এই কঠিন সামাজিক অনাচার বন্ধে এভাবেই উদ্যোগ নিতে হবে৷ সর্বত্র সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে৷ আজও মেয়ে জন্ম নিলে এক শ্রেণীর পিতা-মাতার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায় এসব কারণেই৷

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষিত সৌভাগ্যের বার্তাবাহী মেয়ে জাতিকে অন্ধকার যুগের অভিশাপের লিস্ট থেকে নিষ্কৃতি দিতে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত৷

লেখক : আলী ফজল মোহাম্মদ কাওসার।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ মে ২০১৮/ডিজেএস/আআ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.