আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

স্মরণ: বাবার চলে যাওয়ার ১৫ বছর

আহাদ চৌধুরী বাবু

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-০৩ ১২:৪১:১৫

আহাদ চৌধুরী বাবু

১লা জুলাই ২০০৩; আমাদের শ্রদ্ধেয় আব্বা আলহাজ্ব আলাউদ্দিন চৌধুরী ইন্তেকাল করেন৷ মরণব্যাধি ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেন তিনি৷ যদিও সিঙ্গাপুর ভারতসহ অনেক প্রচেষ্টা ছিল। তবুও নিয়তির কাছে হার মানেন৷

গত ১ জুলাই ছিল বাবার মৃত্যুদিবস। আজ ১৫টি বছর হলো তিনি আমাদের মাঝে নেই। তাঁর অনুপস্থিতি প্রতিনিয়তই অনুভব করি। আমাদের বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবাদের একজন। তাঁর আমাদের মাথার উপরের ছায়া বটো বৃক্ষ সমাজের বাতিওয়ালাকে হারালাম।

আব্বা শুধু একটি পরিবারের প্রতি দায়িত্ববান ছিলেন না। তিনি ছিলেন সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে নিবেদিত এক পরীক্ষিত রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক কীর্তিমান পুরুষ৷ সততা আর ব্যক্তিত্বের প্রকাশ স্পষ্টবাদি স্মার্ট, ধার্মিক পরিশ্রমী, শিক্ষিত একজন মানুষ৷

সিলেটবাসীর দাবী দাওয়া এবং শিক্ষা বিস্তারের কল্যাণে কাজ করে গেছেন আমৃত্যু৷ ষাট দশকে নারী শিক্ষার প্রসারে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন বালিকা বিদ্যালয়৷ সিলেট নগরীর খাসদবীর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৪ সালে দূর্বৃত্তরা জ্বালিয়ে দেয়। পরে তাঁর নেতৃত্বে সেটি পুন:নির্মাণ হয়৷

সিলেটের দারুস সালাম মাদ্রাসার সভাপতি, রসময় মেমোরিয়াল হাইস্কুলের দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশী সময়কাল তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনই শুধু নয় একটি পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন৷

মদন মোহন কলেজ গভর্নিং বডিতে তৎকালিন অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমানের এবং অধ্যক্ষ ও সাবেক প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলামের আগ্রহের কারণে যোগ দেন৷ সিলেট ল’কলেজসহ অসংখ্য স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা, সিলেটে শিক্ষাবোর্ড স্থাপন বা উন্নয়নের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি৷

প্রবীণ জনগোষ্টির সুবিধার প্রয়োজনে এক আলোচিত মহৎ কর্মকান্ডের দ্বারা সিলেটে উদাহরণের মাত্রা ছিলেন৷ সিলেটে প্রবীণ হৈতিষী সংঘ প্রতিষ্ঠা এবং বাগবাড়ীতে হাসপাতাল নির্মাণ করেন।

সিলেটে বিভাগ আন্দোলনের একজন প্রথম সারির নেতা ছিলেন আমার বাবা৷ একজন সমাজকর্মী হিসাবে সর্বমহলে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি হিসাবে গ্রহণযোগ্য ছিলেন তিনি৷

মানবতাবাদি বিশাল মনের মানুষ আমাদের শক্ত ভীতের উপর দাঁড় করানো শ্রেষ্ঠ পুরুষ ৷ প্রিয় বাবা  রাজনীতি সমাজ ও নেতৃত্ব প্রদানে একজন আইকন ছিলেন ৷

সিলেটের প্রথম শ্রেণীর কন্ট্রাকটর হিসাবে তাঁর প্রতিষ্ঠানের সুনাম এখনও পর্যন্ত বিদ্যমান৷ ব্যক্তিগতভাবে একজন ন্যায় বিচারক এবং স্পষ্টবাদিতার জন্য সিলেটে পরিচিত ছিলেন ৷

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৮ ছেলে ও এক মেয়ের পিতা ছিলেন৷ সন্তানরা বাবার দেখানো পথে হাটছি৷ সন্তানদের মধ্যে সিলেটের রাজনীতি তথা স্বৈরাচার বিরুধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাবেক জনপ্রতিনিধি মরহুম সোয়েব চৌধুরী, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্হার সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আলহাজ্ব ফেরদৌস চৌধুরী রুহেল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমসহ বাকীরা নিজ নিজ অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত৷

মৃত্যু বার্ষিকীতে মহান রাব্বুল আল আমিনের নিকট দোয়া কামনা করি তিনি যেনো আমাদের প্রিয় আব্বাকে জান্নাতবাসী করেন এবং তাঁর কর্মকে মর্যাদা দান করেন৷ আমিন৷

আহাদ চৌধুরী বাবু
নির্বাহী সম্পাদক, ব্রিটবাংলা টুয়েন্টিফোর ডটকম

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন