Sylhet View 24 PRINT

আল্লাহ হজের নির্দেশ দেন ইবরাহিম (আ.)-কে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-২৫ ০০:২৭:৩৬

মুহম্মাদ ওমর ফারুক :: কাবা ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতাদের দ্বারা। আল্লাহর আরশে মুয়াল্লার ছায়াতলে সপ্তম আসমানে অবস্থিত মসজিদ বায়তুল মামুরের আকৃতি অনুসারে এই পবিত্র ঘরের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। আল্লাহ কাবাঘরকে মানবজাতির কেন্দ্রস্থল হিসেবে নির্দিষ্ট করেন। নির্মাণের পর প্রথমে ফেরশতারা এখানে ইবাদত করেন।

আল্লাহতায়ালা কাবাঘর পুনর্নির্মাণের পর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে নির্দেশ দেন, ‘(হে ইবরাহিম!) তুমি মানুষের কাছে হজের ঘোষণা দাও। তারা হেঁটে এবং সর্বপ্রকার কৃশকায় উটের পিঠে সওয়ার হয়ে দূরদূরান্ত থেকে পথ অতিক্রম করে তোমার কাছে আসবে।’ আল্লাহর এই হুকুমের পর হজের বিধান চালু হয়েছে। শত শত বছর ধরে কাবা শরিফ বিশ্বাসীদের মহামিলনকেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

হজ মুসলমানের মধ্যে যারা কাবা শরিফে যাওয়া-আসার আর্থিক সামর্থ্যের অধিকারী তাদের জন্য ফরজ ইবাদত। হজ পালনকারীকে প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হতে হবে।

হজ ফরজ হওয়ার শর্তগুলো পূর্ণ হলেই হজ পালন করতে হবে। হজ পালন ওয়াজিব হওয়ার শর্ত পাঁচটি যথা— ১. শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা। ২. বন্দীদশা অথবা শাসকের পক্ষ থেকে নিষেধ না থাকা অর্থাৎ সম্পূর্ণ স্বাধীন হওয়া। ৩. পথঘাট নিরাপদ হওয়া (উপরোক্ত তিনটি শর্ত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযোজ্য)। ৪. মহিলাদের জন্য স্বামী অথবা অন্য কোনো মাহ্রাম সঙ্গে থাকা। ৫. মহিলাদের ইদ্দত পালনের অবস্থা থেকে মুক্ত থাকা।

হজ সহি হওয়ার শর্তসমূহ—

১. মুসলমান হওয়া, মূলত মুসলমান হওয়া প্রতিটি ইবাদত আদায়ের পূর্বশর্ত। ২. ইহরাম— যদি কেউ ইহরাম না বেঁধে হজের যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে, তবু হজ আদায় হবে না। ৩. জিলহজ মাসে হজের নির্ধারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা। অর্থাৎ নির্ধারিত সময় মোতাবেক তাওয়াফ, সায়ি, অকুফে আরাফাহ, রমি বা কঙ্কর নিক্ষেপ প্রভৃতি সম্পন্ন করা। ৪. নির্দিষ্ট স্থানে হজের প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করা যেমন— অকুফ বা অবস্থান (আরাফাতের ময়দানে), তাওয়াফ (মাসজিদুল হারামে), কোরবানি (হারামের মধ্যে), কঙ্কর নিক্ষেপ মিনায়। হজের কোনো ওয়াজিব অথবা সুন্নত যাই হোক, তার নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্যত্র সমাপন করা হলে তা পালিত হবে না।

হজ ফরজ হওয়ার পরও যে ব্যক্তি হজ আদায় করবে না তার ব্যাপারে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘর (কাবা) পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য রাখা সত্ত্বেও হজ আদায় করল না, সে ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করুক অথবা খ্রিস্টান হয়ে, তাতে আল্লাহর কিছু যায় আসে না।’ তিরমিজি।

একজন মুসলমানের ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর তার কর্তব্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব তা আদায় করা। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করার ইচ্ছা করে সে যেন দ্রুত তা সম্পন্ন করে। কারণ কখনো কখনো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে, বাহন হাতছাড়া হয়ে যায় এবং বিভিন্ন প্রয়োজন দেখা দেয়।’ মুসনাদে আহমাদ।

হজ পালনের আগে হজকারীর জন্য কর্তব্য হলো হজের ফরজ, ওয়াজিব-গুলো আগে থেকেই ভালোভাবে আত্মস্থ করা। কোনো ভুলের কারণে নিজের হজ যাতে বরবাদ (ভণ্ডুল) হয়ে না যায় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কাবার তাওয়াফ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানসহ যাবতীয় বিধান শুদ্ধভাবে আদায় করাও জরুরি। উচ্চৈঃস্বরে বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করতে হবে— ‘হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই, আমি হাজির। সব প্রশংসা, নিয়ামত ও রাজত্ব তোমারই। তোমার কোনো শরিক নেই।’ আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে মকবুল হজ করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.