Sylhet View 24 PRINT

কোরবানির পশু নির্বাচনে সতর্কতা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-১২ ০০:৪১:৪১

ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ সমাগত। আমরা যারা কোরবানির পশু ক্রয় করতে হাটে যাই, তাদের বেশির ভাগ মানুষেরই পশু পছন্দ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই অথবা থাকলেও খুব কম। তাই পশু নির্বাচনের কিছু মৌলিক বিষয় আমাদের জানা থাকলে নির্বাচনের ভুল-ভ্রান্তি কম হবে এবং একটি উত্কৃষ্টমানের পশু ক্রয় করা সম্ভব হবে। পশু জবাই করার পর পশু আর পশু থাকে না হয়ে যায় কোরবানির মাংস। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা কি কোরবানির মাংস পেতে চাই, না কি কোরবানির চর্বি পেতে চাই?

আমাদের বেশির ভাগ মানুষই চর্বিযুক্ত নাদুস-নুদুস পশু নির্বাচন করে থাকি এটা  একটি ভুল চিন্তা বা আমরা ব্যাপারটা এতটা তলিয়ে কখনো ভাবিনি। পশুর চর্বি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি করে হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ ও শারীরিক ওজন বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। তাই স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করেও চর্বি সম্পন্ন পশু নির্বাচন যুক্তিযুক্ত নয়। পশুর চর্বিতে প্রচুর পরিমাণে দুষ্ট কোলেস্টেরল বিদ্যমান থাকায় তা হৃৎপিণ্ডে ব্লক তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এত সব বিবেচনা করলে কম চর্বিসম্পন্ন পশু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তবে কীভাবে পশু দেখে তা বোঝা যাবে তার কিছু মৌলিক বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে।

পশুর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখে তা চেনা যেতে পারে যেমন : অধিক চর্বিসম্পন্ন পশু দেখতে নাদুস-নুদুস হবে, পেট সাধারণত বুক থেকে নিচে নেমে থাকবে, পশুটি তুলনামূলকভাবে কম নড়াচড়া করবে, মানে পশুটি একটু অলস প্রকৃতির হবে, পশুর শরীর লক্ষ করলে দেখা যায় যে এটা অনেকটা বেলুন আকৃতির, মানে চামড়ার উপরে কোনো রকম উঁচু-নিচু বা গর্ত পরিলক্ষিত হবে না, পশুটি তুলনামূলকভাবে কম আওয়াজ করবে, পশুটি চলাফেরা করার সময় চামড়ার নিচে মাংসে সংকোচন ও প্রসারণ মানে মাংসের নড়াচড়া চোখে পড়বে না, পশুটি তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী হবে। যদি পশুটিকে বেশি করে স্টেরয়েড জাতীয় মেডিসিনের মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়ে থাকে, তবে এসব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে আরও একটি বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয় যে, এর শরীরে হাতের আঙ্গুল দিয়ে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড চাপ দিয়ে ধরে থাকলে চামড়ায় একটি গর্ত সৃষ্টি হবে এবং আঙ্গুল সরিয়ে নেওয়ার পর অনেক সময় ধরে গর্তটি বিদ্যমান থাকবে।

এসব পশুর শরীরে লোমের পরিমাণ কমে যেতে পারে। কম চর্বিসম্পন্ন পশু নির্বাচন করতে চাইলে পশুটি হওয়া চাই যথাসম্ভব কম বয়স্ক, চঞ্চল যা বেশি নড়াচড়া করতে থাকবে, পশুটি হবে শক্তিশালী, বেশ বড় করে আওয়াজ করবে, পেট অপেক্ষাকৃত ছোট, শারীরিক গঠনে উঁচুনিচু বা গর্তের মতো জায়গা চামড়ার উপরে ভেসে উঠবে। চলাফেরার সময় চামড়ার নিচের মাংসপেশির নড়াচড়া নজরে আসবে যেমন বডি বিল্ডারদের শরীরে পেশিগুলো নজরে আসে। যারা অনেক দামি পশু কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন তারা একটি বড় নাদুস-নুদুস পশু না কিনে শারীরিক যোগ্যতাসম্পন্ন একাধিক পশু ক্রয় করতে পারেন। যদি কেউ বড় পশু কিনতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই হিসাবটা আলাদা হতে পারে। কোরবানির পশু নির্বাচন একটি জটিল বিষয় তবে মৌলিক ধারণা থাকলে জটিলতা অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব।

ডা. এম শমশের আলী (কার্ডিওলজিস্ট)
সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.