Sylhet View 24 PRINT

দোয়ারাবাজার উপজেলার ইতিহাস ও কিছু কথা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-০৯ ১৯:৪৮:০৮

আল-আমিন :: বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদীয় আসন ২২৮ সুনামগঞ্জ-৫ এর ছাতক দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্যতম উপজেলা দোয়ারাবাজার উপজেলা। দোয়ারাবাজার উপজেলার উত্তরে ভারতের চেরাপুঞ্জি, মেঘালয় রাজ্য। পূর্বে ছাতক উপজেলা, দক্ষিণ ও পশ্চিমে সুনামগঞ্জ জেলা। সুনামগঞ্জ থেকে দোয়ারাবাজারের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কি.মি.। সিলেট থেকে প্রায় ৬৫ কিঃমিঃ। দোয়ারাবাজার সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে হওয়ায় সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ নেই।

এই উপজেলায় নয়টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে: ১. বাংলাবাজার ইউনিয়ন, ২. নরসিংপুর ইউনিয়ন, ৩. দোয়ারাবাজার ইউনিয়ন, ৪. মান্নারগাঁও ইউনিয়ন, ৫. পাণ্ডারগাঁও ইউনিয়ন, ৬. দোহালিয়া ইউনিয়ন, ৭. লক্ষীপুর ইউনিয়ন, ৮. বোগলাবাজার ইউনিয়ন এবং ৯. সুরমা ইউনিয়ন।

দোয়ারাবাজার নামটা এসেছে মূলত উপজেলার বাজারটি দুইবার স্থানান্তর করা থেকে। সুরমা নদীর নদীভাঙনের ফলে বাজারটিকে দুইবার স্থানান্তর করতে হয়েছে। আঞ্চলিক সিলেটি "দুই আরা" বা দুই বার থেকে দুয়ারা বা দোয়ারা শব্দটি এসেছে। এই উপজেলা ১৯৮৫ সালে ছাতক উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন করে দোয়ারা বাজার উপজেলা হিসেবে গঠিত হয়। উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন কে তিনটি ইউনিয়ন করে বর্তমানে নতুন এই তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে মোট নয়টি ইউনিয়ন।

দোয়ারাবাজার উপজেলার নদী সমূহ হচ্ছে সুরমা নদী, খাসিয়ামারা নদী, বগরা নদী, যাদুকাটা নদী, নয়াগাঙ নদী, চিলাই নদী এবং মৌলা নদী।

এই উপজেলার আয়তন মোট ৩২৪.১৯ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারি রিপোর্ট অনুসারে জনসংখ্যা মোট ২,৩৭,১৮০ জন। যেখানে ঘনত্ব ৯১০ কিমি ২৩০০ বর্গমাইলে জনগোষ্ঠী বসবাস করেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলারটি ২৪ক্ক৫৮´ থেকে ২৫ক্ক১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১ক্ক২৪´ থেকে ৯১ক্ক৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এর অবস্থান। এর উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ছাতক উপজেলা, পূর্বে ছাতক ও সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা।

এই উপজেলার জনসংখ্যা ২৩৭১৮০ জনের মধ্যে পুরুষ ১২৩১২৩ জন, মহিলা ১১৪০৫৭ জন। মুসলিম ২২৩০৪৪ জন, হিন্দু ১৩৭৯৪ জন, বৌদ্ধ ৩১১জন, খ্রিস্টান ২১জন এবং অন্যান্য ২০ জন।

২.
দোয়ারাবাজার উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রধান নদী সুরমা, যাদুকাটা, বগরা অতিবাহিত হয়েছে। দোয়ারাবাজারে স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে থানা গঠিত হয় এবং থানাকে ১৯৮৫ সালে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। উপজেলায় নয়টি ইউনিয়নে ১৭৬ টি মৌজা ও ২৯৫ টি গ্রাম রয়েছে। শিক্ষার হার উপজেলা সদর ৩০.৮% এবং গ্রাম ২৯.২৬%। দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের জিও কোড ২৭ এর আয়তন ৯৮৩৮ একর, জনসংখ্যা পুরুষ ৮৯৪০জন, মহিলা ৮২৭৯ জন।শিক্ষার হার ২৮.৮১%।
দোহালিয়া ইউনিয়নের জিও কোড ৩২ এর আয়তন ৬৫৩৯ একর, জনসংখ্যা পুরুষ ১০২৮৯ জন, মহিলা ৯৯৩০ জন। শিক্ষার হার ২৩.৩০%।

নরসিংপুর ইউনিয়নের জিও কোড ৯২এর আয়তন ১১৩২১একর, জনংখ্যার পুরুষ ১১১৮০ জন, মহিলা ১০৭১০জন। শিক্ষার হার ২৯.৪৬%।

পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের জিও কোড ৭৮ এর আয়তন ৭৪৯৪ একর, জনসংখ্যার পুরুষ ১০২৫৩ জন, মহিলা ৯৪৯৮ জন। শিক্ষাহার ২৭.১১%।

বাংলাবাজার ইউনিয়নের জিও কোড ৮৬ এর আয়তন ৭৫৩৫ একর। জন সংখ্যার পুরুষ ১৩৮২১ জন, মহিলা ১৩৪৮০ জন। শিক্ষার হার ২৯.৯৩%।

বোগলা বাজার ইউনিয়নের জিও কোড ৬১ এর আয়তন ৪২০৬ একর, জনসংখ্যার পুরুষ ৫৭৮১ জন, মহিলা ৫৪৬৩ জন। শিক্ষার হার ২৭.২৫%।

মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জিও কোড ৬৭ এর আয়তন ৮০৯৭ একর, জনসংখ্যার পুরুষ ১১২২৯জন, মহিলা ১০৬৪৬ জন। শিক্ষার হার ৩৩.০১%।

লক্ষীপুর ইউনিয়নের জিও কোড ৬১ এর আয়তন ১৯৫৫১ একর, জনসংখ্যার পুরুষ ২৬১৯১ জন, মহিলা ২৪৭৫৫ জন, শিক্ষার হার ৩৫.৯৮%।

সুরমা ইউনিয়নের জিও কোড ৬১ এর আয়তন ৬৪৬৭ একর, জনসংখ্যার পুরুষ ৯৪৩৯ জন, মহিলা ৮৯২২ জন। শিক্ষার হার ২৮.৫০%।

৩.
উপজেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- বগুলা রোছমত আলী- রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্টিত হয়। বড়খাল বহুমুখী স্কুল ও কলেজ ১৯৭০ সালে প্রতিষ্টিত হয়। সমুজ আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্টিত হয়। দোয়ারাবাজার কলেজ ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্টিত হয়। টেংরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্টিত হয়। আমবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্টিত হয়। ঘিলাছড়া মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলাউড়া দারুসছুন্নাহ ফাজিল মাদ্রাসা ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্টিত হয়। এছাড়াও পেঁশকার গাঁও ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ইসলামপুর সিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসা,বড়ুই উড়ি আলিম মাদ্রাসা, চামতলা দাখিল মাদ্রাসাও অন্যতম।

উপজেলার কলেজ রয়েছে ৫ টি। ডিগ্রী সরকারী কলেজ ১ টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২ টি, নিম্ন মাধ্যমিক ২ টি, মাদ্রাসা ৮ টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৩টি, মসজিদ-২৯৫ টি। মন্দির ১৫টি, গীর্জা ৪ টি। নিবন্ধনকৃত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১০টি এবং খেলার মাঠ ২টি রয়েছে।

উপজেলার আবাদী জমির পরিমাণ-২৭৬৪৫ হেক্টর, অর্থকরী ফসল-ধান, আখ। দর্শনীয় স্থান বাঁশতলা স্মৃতি সৌধ, মৌলা নদীর সুইস গেইট, টেংরা টিলা গ্যাসফিল্ড, পান্ডারখাঁল বাঁধ, দোহালিয়া জমিদার বাড়ী।

এই উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.১৪%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৮৫%, শিল্প ০.৩২%, ব্যবসা ৮.৪২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১%, চাকরি ২.৫৯%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৬১% এবং অন্যান্য ৭.৮৮%। উপজেলার কৃষিভূমির মালিকানা অনুপাত ভূমিমালিক ৫৪.৭২%, ভূমিহীন ৪৫.২৮%। শহরে ৪৪.০৭% এবং গ্রামে ৫৫.৪৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ডাল, আলু, আদা, তুলা। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তামাক।
প্রধান ফল- ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, আনারস, লেবু। যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫৭.২৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯১ কিমি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়, মহিষের গাড়ি। কুটিরশিল্প বাঁশ ও বেতের কাজে পরিচিত।

৪.
এই উপজেলায় হাটবাজার ২২টি। দোয়ারাবাজার, লক্ষীপুর বাজার, আমবাড়ী বাজার, টেংরা বাজার, বালিউড়া বাজার, বোগলা বাজার এবং মাছিমপুর ও জালালপুরের বাজার উল্লেখযোগ্য বাৎসরিক মেলার জন্য খুব পরিচিত। উপজেলার বোগলা বাজার, বালিউরা বাজার,দৌলতপুর বাজার (পশ্চিম বাংলাবাজার), বাংলাবাজার গরুর হাটের জন্যও বিখ্যাত।

এই উপজেলার প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, মাছ, চুনাপাথর, বনজসম্পদ। বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। প্রাকৃতিক সম্পদ চুনাপাথর ও গ্যাস। জলাশয়ের মাছ এবং বালুমহল উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ।

এখানকার পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭২.৭৫%, পুকুর ১১.৭৭%, ট্যাপ ০.৪৬% এবং অন্যান্য ১৫.০২%। উপজেলার ৯৩৪টি নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে এবং এই পানি খাবার পানি হিসেবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এই উপজেলার ১৫.৪২% (গ্রামে ১৪.১০% ও শহরে ৩৩.৯৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৬.৭৬% (গ্রামে ৬৮.৬২% ও শহরে ৪০.৬১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৭.৮২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র রয়ছে।

৫.
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৯১ সালে শিলাঝড়ে গাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ২০০৪ সালে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকা। ঐ বন্যায় বিভিন্ন পুকুর সহ বিভিন্ন জলাশয়ের কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ ক্ষতি হয়েছে। ২০০৫ সালে টেংরাটিলায় গ্যাসকূপ পরীক্ষার সময় প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটলে মাসখানেক আগুন জ্বলে। এতে অন্যান্য সম্পদসহ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার গ্যাস সম্পদ বিনষ্ট হয়।

এখানকার দর্শনীয় স্থান বাঁশতলা শহীদ স্মৃতিসৌধ যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৫ নাম্বার সেক্টরের সাবসেক্টর। এখানে রয়েছে এগারটি কবরস্থান যেখানে চিরনিদ্রায় শাযড়ত আছেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী বীর সন্তানেরা । বাঁশতলার প্রাকৃতিক পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। উত্তরে ভারতের সীমান্তবর্তী সবুজ পাহাড় আর পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা সর্পিল নদী যে কারো ভালো লাগবে। এখানে জুমগাঁও বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে পরিচিত জুমগাও বাঁশতলা শহীদ স্মৃতিসৌধ এর সামান্য পশ্চিমে অবস্থিত একটি জনপদ যা সম্পুর্ণভাবে পাহাঙের উপর গঙে ঊঠেছে । গারো নৃগোষ্ঠীর মাধ্যমেয় সেখানে জনবসতি শুরু হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এই স্থানটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই উপজেলাটি মেঘালয়ের দ্বারপ্রান্তে বলে শীত মৌসুমে প্রচুর শীত পড়ে।

দোয়ারাবাজার সদরের একেবারেই গাঁ ঘেষে প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের এক অনন্য নিদর্শন কাজল হাওর এবং দেখার হাওর। এই হাওরের কাজল বর্ণের ছলছল জলের দুর্বার আকর্ষন যে কাউকে মোহময় করে তুলবে। বর্ষায় এর জলরাশি প্রবল শক্তিতে আছড়ে পড়ে উপজেলা সদরের উত্তর পশিম অংশে আর শীতকালে হয়ে উঠে ফসলের চাদরে আবৃত ভূসর্গ। পান্ডারখালের বাঁধ এখানে কৃত্রিমভাবে তৈরি এ বাঁধটি যে কারো নজর কাড়বে। দোয়ারাবাজার সদর ও পান্ডারগাও ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগকারী এই বাঁধটি পান্ডারখালকে দুইভাগে বিভিক্ত করে নিজের বুকে গড়ে তোলেছে সবুজের ছায়াঘেরা নান্দনিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।

৬.
শিক্ষাক্ষেত্রে এককালে পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলটি বর্তমান সময়ে অনেকটাই এগিয়ে যাচ্ছে। দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অধ্যয়ন করা ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই আজ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যাংক অফিসারসহ নিজ নিজ অবস্থানে যোগ্যতার সাথে দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালন করছেন ।

কৃষি, ও মৎস্য, নির্ভর অর্থনীতির এ এলাকাটি বর্তমানে কিছুটা উন্নত হলেও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ব্যাপক সম্ভবনাময় উপজেলাটি অবকাঠামোগত উন্নয়নহীনতা ও জনপ্রতিনিধিদের সুপরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে এখনো বাংলাদেশের পশ্চাৎ পদ উপজেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। উল্লেখ্য বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বন্ধ গ্যাসক্ষেত্র টেংরাটিলা এখানেই অবস্থিত। সর্বশেষ নাইকো মামলায় এই গ্যাস কোম্পানি বন্ধ রয়েছে।

এই উপজেলায় বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, দার্শনিক.সাহিত্যিক ও সমালোচকও জন্মগ্রহন করেছেন।

দোয়ারাবাজারে জন্মগ্রহণ করেছেন এক সময়কার বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ আজরফ। তিনি একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

কাকন বিবি নামে এক মুক্তিযুদ্ধা, ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এক বীরযোদ্দা, বীরাঙ্গনা ও গুপ্তচর ছিলেন। এই উপজেলায় আরো দুই জন বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।

বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের প্রাণের জনপদ দোয়ারাবাজার রাজনীতির যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে আসছে। এই অঞ্চলের মানুষজন অত্যন্ত সামাজিক ও বন্ধুসুলভ কিন্তু যথার্থ ঐক্যের অভাবে যোগাযোগ, শিক্ষা ও অবকাঠামোগতভাবে মারাত্বকভাবে পিছিয়ে পড়া এক জনপদ। স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দী পাড় হয়ে গেলেও এর উপজেলা সদর এখনো দেশের মূল ভূখন্ডের সাথে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হতে পারে নাই। এছাড়া উপজেলার আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও সুবিধাজনক না।

এই উপজেলায় উপজেলা পরিষদের চেয়্যারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ডা. আব্দুল রহিম, ডাঃ আব্দুল কুদ্দুস বর্তমানে দায়িত্বে আছেন ইদ্রিস আলী বীরপ্রতীক।

সুনামগঞ্জ জেলার এই উপজেলাটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটির একাংশ। এটি সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ২২৮নং আসন।

সীমানা সুনামগঞ্জ-৫ আসনটি সুনামগঞ্জ জেলার এই দোয়ারাবাজার উপজেলা থেকে সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে জুন মাসে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনিত মুহিবুর রহমান মানিক। ২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে কলিম উদ্দিন মিলন। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মুহিবুর রহমান মানিক এবং সবর্শেষ আবারো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে মুহিবুর রহমান মানিক এযাবৎ পর্যন্ত সংসদ সদস্য হয়ে এই মেঠো পথ ঢালা জনপদের সাংসদ হিসেবে রয়েছেন।

তথ্যসূত্র :
১। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)।
২। সুনামগঞ্জ জেলার তথ্য কেন্দ্র (এক নজরে দোয়ারাবাজার)।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই, ২০১৫।
৩। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, আদমশুমারী রিপোর্ট- ২০১১।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.