Sylhet View 24 PRINT

ইসলামে ঋণ পরিশোধের গুরুত্ব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-১০ ০০:৫২:৫৫

যুবায়ের আহমাদ :: বিপদে-আপদে বিভিন্ন প্রয়োজনে কারও কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের অনুমতি দিলেও ইসলাম তা পরিশোধের নির্দেশও দিয়েছে কঠোরভাবে। ঋণ পরিশোধে আন্তরিক নয়, এমন লোকদের জানাজা রসুলুলস্নাহ (সা.) পড়তেন না। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুলস্নাহ (সা.) একদা নবীজি (সা.)-এর কাছে এক ব্যক্তির জানাজা নিয়ে আসা হলে নবীজি বলেন, তোমরা তোমাদের সাথীদের জানাজা পড়; কারণ সে ঋণী। তখন হজরত আবু কাতাদা বললেন, তার ঋণের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। নবীজি বললেন, তুমি কি তার ঋণ পরিশোধ করবে?

তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর নবীজি (সা.) তার জানাজা পড়লেন। তিরমিজি। ঋণখেলাপিরা কেয়ামতের দিন নিজের সারা জীবনের আমল দিয়েও হয়তো রেহাই পাবে না ঋণের বোঝা থেকে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির যদি কোনো নেক আমল থাকে তাহলে আলস্নাহতায়ালা সেই নেক আমল প্রাপককে প্রদান করে ন্যায়বিচার করবেন। পাওনা পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত নেক আমল না থাকলে মজলুমের গুনাহের বোঝা মাথায় নিয়ে জাহান্নামে যেতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুলুলস্নাহ (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে প্রকৃত দরিদ্র হলো সেই ব্যক্তি, যে কেয়ামতের দিন প্রচুর নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত নিয়ে আসবে, কিন্তু সে কাউকে গালি দিয়ে আসবে, প্রহার করে আসবে অথবা কারও সম্পদ আত্মসাৎ করে আসবে। এরপর এসব (মজলুম) ব্যক্তির মধ্যে তার পুণ্যকর্ম দিয়ে দেওয়া হবে। যখন পুণ্যকর্ম ফুরিয়ে যাবে মজলুমদের পাপ কাজ তার ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ মুসলিম, তিরমিজি। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আপনি ঋণ পরিশোধ করেননি, এমতাবস্থায় আপনার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে কে বইবে আপনার ঋণের বোঝা?

‘ভবিষ্যতে একান্তই দিতে হলে দিয়ে দেব; আর না দিয়ে পারলে তো বাঁচা গেল’- ঋণগ্রহীতার এমন মনোবৃত্তি কাম্য নয়। এ ধরনের খেলাপির ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুলস্নাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পরিশোধ করার নিয়তে মানুষের সম্পদ গ্রহণ করে আলস্নাহ তাকে পরিশোধ করার ব্যবস্থা করে দেন। আর যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ ধ্বংস করার জন্য গ্রহণ করে আলস্নাহতায়ালা তাকে ধ্বংস করবেন। সহিহ বুখারি। অনিবার্য কারণবশত ঋণ পরিশোধে অপারগতা দেখা দিলে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া কিছুতেই উচিত নয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই অবহিত করতে হবে ঋণদাতাকে। সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে লজ্জায় ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুধু পরস্পরের সম্পর্কোচ্ছেদকেই ত্বরান্বিত করবে। মুমূর্ষু ব্যক্তির ঋণজনিত কোনো হক অনাদায়ী থাকলে তার কর্তব্য হলো তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে তা পরিশোধের অসিয়ত করা। সূরা নিসার ১১ নম্বর আয়াতে মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধের পর তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, বাইতুশ শরিফ মসজিদ, বোর্ডবাজার, গাজীপুর।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.