Sylhet View 24 PRINT

বিরোধী দলের নেতার ওপর আক্রমণ নিন্দনীয়

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৬-২০ ০১:০৭:২৮

প্রধান বিরোধী দলকে ত্রাণ কাজে বাধা দেওয়া গণতান্ত্রিক দেশের জন্য চরম লজ্জা। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সেখানে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী আক্রমণ গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণের শামিল। সরকারি দল এবং প্রশাসন বলছে তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করা হবে। শুধু বিচার কেন, আগে থেকে তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি কেন? প্রধান বিরোধী দলকেই যদি সরকার যথাযথ নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর এই উলঙ্গ আক্রমণ দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণের শামিল। আমি এর নিন্দার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। সময় থাকতে সরকারকে এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে কোনো নেতার উৎসাহ বা উসকানিতে যদি এসব হয়ে থাকে সময় থাকতে সেসব নেতাকে লাগাম দিন। না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে।

ঈদ মোবারক। দেখতে দেখতে রমজান শেষ। আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দের ঈদ। সবার জন্য ঈদ নির্মল আনন্দময়, কণ্টকমুক্ত হোক—দয়াময় প্রভুর কাছে এ প্রার্থনাই করি।

মাননীয় সেতু ও সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী দয়া করে মানুষ বাঁচান। আগেই আলামত ভালো না, ঈদুল ফিতরে কী হবে বলতে পারি না। ১৬ জুন টাঙ্গাইলে কাজ থাকায় সাহরির পর ফজরের নামাজ সেরে গাড়িতে উঠেছিলাম। ভেবেছিলাম, টাঙ্গাইল গিয়ে একটু বিশ্রাম নেব। আল্লাহর রহমতে শরীর ভালোই আছে। তবু বয়স হয়েছে, কিছুটা কষ্ট তো অবশ্যই হয়। ওপার যাওয়ার সময় কাছাকাছি, তাই অত কষ্ট ভালো লাগে না। মাননীয় মন্ত্রী, আপনি আমার মোহাম্মদপুরের বাড়ি চিনেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই গরিবখানায় পদধূলি দিয়েছেন, আপনি অনেকবার এসেছেন। তাই না বোঝা বা না চেনার কথা নয়। আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে কল্যাণপুর বড়জোর হাজার-বারোশ গজ। সেখানে জ্যামে পড়ে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টায় আমিন বাজার পৌঁছেছিলাম। এক-দেড় কিলোমিটার পৌনে দুই ঘণ্টায় তাও আবার ৪টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা—এত ভোরে যদি অমন হয় তাহলে মানুষজন যাবে কোথায়? রাতদিন চলাফেরা করি, মারাত্মক যানজটে পড়ি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যানজটের কোনো কারণ দেখি না। গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে তো আছেই, ১০-২০ মাইল এগিয়ে খুঁজি কী কারণে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল বুঝতে পারি না। সে দিনও যানজটের কোনো কারণ খুঁজে পাইনি। না, কোথাও কোনো গাড়ি খারাপ কিংবা কোনো দুর্ঘটনা—কোনো কিছু ছিল না।

১৮ জুন নাটোরে গুরুদাসপুর চাচকৈরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের শহীদ মুন্সীর ইফতার মাহফিলে গিয়েছিলাম। সেখানে যেতে বিড়ম্বনার শেষ ছিল না। জোহরের নামাজ আদায় করে গাড়িতে বসেছিলাম। যেটুকু পথ তাতে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি লাগার কথা না। যমুনা পার হতে সময় লাগেনি। রাস্তা ফাঁকাই ছিল। কিন্তু সিরাজগঞ্জের কড্ডা পার হয়ে বিশাল জ্যাম কেন বুঝতে পারছিলাম না। ভর দুপুরে প্রচণ্ড গরমে প্রায় দুই ঘণ্টা এক জায়গায় ঠাই দাঁড়িয়ে থেকে যখন যানজটের কারণ দেখলাম তখন নলগা সেতুতে রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজের পণ্ডিতরা দুটি ট্রাক ফেলে ৭-৮ জন গদাই লস্করির চালে নুড়ি দিয়ে সেতুর এখানে ওখানে মেরামতের চেষ্টা করছিল। দুদিকে পুলিশ রাস্তা বন্ধ করেছিল। একটু সাবধান হলে দুদিকের গাড়িই চলতে পারত। কিন্তু অনভিজ্ঞ পুলিশ মনে হয় কিছুটা ফুর্তি করেই দুদিকের গাড়ি আটকে রেখেছিল। তাতে ঢাকার দিকে ১৫-২০ কিলোমিটার, রংপুর-বগুড়ার দিকে কতটা বলতে পারব না। নাটোরের পথে ছিলাম, সে পথেও প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা যানজট লেগেছিল। অসুস্থ রোগীদের কথা বলছি না, ছোট্ট ২-৩ বছরের বাচ্চারা অতিষ্ঠ হয়ে কাপড়-চোপড় ফেলে উদাম গায়ে রাস্তায় যখন ঘুরছিল বড় কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু কেউ নেই। হাজার হাজার মানুষ এখানে ওখানে অযথা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে দেখার কেউ নেই, বড় কষ্ট হয়, ভীষণ অসহায় লাগে।

মাননীয় মন্ত্রী, মনে হয় বছর পেরিয়ে যাচ্ছে সাভার ক্যান্টনমেন্টের কাছে উল্টোপথে আমার সঙ্গে আপনার দেখা হয়েছিল। আপনি আমায় সোজা পথে ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে বেশ ভালো লেগেছিল। কিন্তু আপনাকে এখন পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও ভালো পথ ধরাতে পারলাম না। আর অচল রাস্তাও সচল হলো না। স্বাধীনতার পর রাস্তা এবং গাড়ি দুটোই খারাপ ছিল তারপরও ঢাকা-টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল-ঢাকা এক ঘণ্টা ১৫-২০ মিনিটে যাতায়াত করতাম। এখন রাস্তা ভালো, গাড়ি ভালো তারপরও ৩ ঘণ্টার নিচে যাতায়াত করা যায় না। কখনো সখনো ৪-৫ ঘণ্টা লাগে। একবার ভেবে দেখুন, রাস্তাঘাটে যানজটের জন্য যে জ্বালানি খরচ হয় যানজট না হলে দেশের জ্বালানি খরচ অর্ধেক কমে যেত। শুধু জ্বালানি নয়, পরিবেশও এমন বিষাক্ত হতো না। একটু দেখুন দেশবাসীর প্রতি সামান্য দয়া করুন। এত কষ্ট করছেন, রোদ-বৃষ্টিতে তোলপাড় করেছেন, কাজ তো করছেনই আর একটু দয়ামায়া নিয়ে করুন, নিয়ম-কানুন মেনে করুন। দেখবেন অনেক ফল পাবেন। রাস্তার দুই পাশে অকেজো গাড়ি-ঘোড়া, ইট-পাটকেল, দোকানপাট সরান। কখনো ভেবে দেখেছেন, রাস্তা নির্মাণের আগেই নষ্ট হয়ে যায় কেন? একটু তলিয়ে দেখুন না। রাস্তায় যানজট দূর করতে তেমন কী দরকার, সামান্য নিয়ম-কানুন আর কিছু পরিশ্রম। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভালো ট্রাফিক এবং চালকদেরও কিছুটা সাধারণ জ্ঞান। মানুষ ভালো থাকতে কেউ খারাপ হতে চায় না। যে জানে না, তার জন্য যদি যানজট হয় তাকে কি দোষ দেবেন? দেশে কোনো নতুন চালক তৈরির আগেই গাড়ি আমদানি সবকিছু কিস্তিতে, গাড়িও কিস্তিতে। নিয়ন্ত্রণ দরকার। ইচ্ছে হলেই যার যা খুশি করা উচিত নয়। অনুরোধ করি দেশের সম্পদ এবং জানমাল বাঁচাতে দয়া করুন। মাননীয় সেতু ও সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী শুধু কথার ফুলঝুরি না ছড়িয়ে কিছু কাজের কাজ করুন। মানুষ দোয়া করবে। দুর্ঘটনায় যখন একটা সোনার সংসার ভেঙে খানখান হয়ে যায়, তখন যার যায় সেই বুঝে। হৃদয় না থাকলে অন্যরা বোঝে না। যদিও হৃদয়হীনদেরই এখন বেশি প্রাধান্য।

১৪ জুন ছিল আমার জন্মদিন। ব্যাপারটা আমার নিজেরই তেমন মনে থাকে না। আমি প্রতিদিনই জন্মদিন মনে করি। বিশেষ কোনো দিন নিয়ে ভাবি না। তবু একটা নির্দিষ্ট দিনে সবার জন্ম হয়, আমারও হয়েছে। জন্মদিনে কেউ এটা ওটা নিয়ে এলে ভালো লাগে না, বরং বিরক্ত লাগে। তবে এবার আমার জন্মদিনে সুজনের দেওয়া কলম মনে হয় শ্রেষ্ঠ উপহার। সুজন মির্জাপুরের ছোট্ট এক পাগল আমার বাড়িতে থাকে সে প্রায় ৫-৬ বছর। এখন কিছুটা ছাগল দাড়ি হয়েছে। আসলেই পাগল। পাগল না হলে রাতদিন অত কাজ করতে পারে? সারা দিনই এটা-ওটা করে। ওর শিশুশ্রমের জন্য আমাদের শাস্তি হতে পারে। ওকে কোনো কাজের কথা বলতে হয় না। বরং আমরা থামিয়ে রাখার চেষ্টা করি। তাও পারা যায় না। সেই সুজন আমায় কলম দিয়েছে। যা হৃদয় স্পর্শ করেছে। তার ইচ্ছা এবার ঈদে বাড়ি যেতে তাকে আমি মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমার লেখা ‘স্বাধীনতা ৭১’ বইটি উপহার দেই। শুধু সেটি নয়, আরও ২-১টি বই ওকে এবার আমি আনন্দের সঙ্গে উপহার দেব।

গুরুদাসপুরে চাচকৈর বাজারে শহীদ মুন্সীর নেতৃত্বে অসাধারণ ইফতার মাহফিল হয়েছে। সাবেক এমপি আবুল কাশেম সরকারসহ অনেক গণ্যমান্য লোক ইফতারিতে শরিক হয়েছিলেন। প্রথম চাচকৈর গিয়েছিলাম আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কদ্দুসের অনুরোধে। বিএনপির আমলে জনাব কদ্দুস এলাকায় যেতে পারতেন না। কত বন্ধু-বান্ধব-সহকর্মী ছিল তখন। ধীরে ধীরে আবার নতুনের সমাবেশ ঘটছে। শহীদ মুন্সী এক মারাত্মক কথা বলেছে। শুরু করেছিল ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে। একলা চলো একলা চলো রে...। ’ কবিগুরুর এ কবিতার সঙ্গে চমৎকার তাল মিল রেখে শহীদ মুন্সী যখন বলল, ‘একলা একলা চলতে চলতে এখন আর শহীদ মুন্সী একলা নহে রে। ’ সত্যিই সাধারণ মানুষের অসাধারণ অনুভূতি। যাওয়ার পথে নিদারুণ কষ্ট দেখে ফেরার পথে সিরাজগঞ্জের এসপিকে ফোন করেছিলাম রাস্তার খবরা খবর নিতে। ভদ্রলোকের সঙ্গে আগে কোনো দিন কথা হয়েছে কিনা বলতে পারব না। ভদ্রলোক ভালো সাড়া দেননি বা দিতে পারেননি। বলছিলেন, ‘স্যার, রাস্তা ঠিক করছিল তাই সারা দিন যানজট ছিল। এখন নেই। কিন্তু সারা দিন যা মেরামত করেছে বৃষ্টিতে সবই ধুয়ে মুছে গেছে। ’ বলেছিলাম, আমরা ফিরছি একটু খবর রাখবেন। তিনি কোনো উত্তর দেননি, খবরও রাখেননি। অথচ রাস্তা যানজট মুক্ত ছিল না। জানি না তিনি খুব বেশি দলকানা কিনা। দেশ ভালো চলতে হলে সরকারি কর্মচারী কোনো দলের হবে না, দেশের হবে, সরকারের হবে। সরকারও কোনো দলের হবে না, সরকারও হবে দেশের। মনে হয়, এসপি আমার সঙ্গে কথা বলে খুশি হতে পারেননি। কথা বলতেই মনে হয়েছে অনীহা। ১টা ১০ মিনিটে টাঙ্গাইল থেকে রওনা হয়ে ৫টা ২০ মিনিটে গুরুদাসপুরের চাচকৈরে পৌঁছে ছিলাম। আবার সেখান থেকে ৭টা ৩০ মিনিটে রওনা হয়ে রাস্তায় অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে মসজিদ না পেয়ে এবার রমজানে এই একবার এশার এবং তারাবির নামাজ পড়তে না পেরে এক বুক কষ্ট নিয়ে রাত সাড়ে ১২টায় টাঙ্গাইল ফিরেছি। পথ স্বাভাবিক থাকলে সেখানে সাড়ে ৯টায় ফিরতাম। তাতে জ্বালানি খরচ কম হতো এবং পরিবেশ ভালো থাকত। কিন্তু কী করব, উপায় নেই।

বহুদিন পর গিয়েছিলাম সৈয়দ আবুল হোসেনের অফিসে। ভদ্রলোক সদা হাসি বিনয়ী মানুষ। সব সময় তাকে ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবাসি, স্নেহ করি। বিত্তশালীরা যেমন হয় তার মধ্যে তার অনেক কিছুই নেই। বরং খারাপের চাইতে ভালো আছে অনেক বেশি। অনেক দিন পর অনেক কথা হলো। ভদ্রলোক সব সময়ই ভালো কিছু ভাবার চেষ্টা করেন। মনে হয় আমাকে পেলে তার সব চিন্তা হুমড়ি খেয়ে বেরিয়ে আসতে চায়। আমি কিছুদিন থেকেই একটা জিনিস পছন্দ করতে পারছি না। একে তো শুধু মেধা মেধা, সব মেধা আমার অন্তরে সমান শ্রদ্ধা বা মর্যাদা পায় না। ফসল ফলাতে যেমন নার্সিং করতে হয়, সার দিতে হয়, মেধার ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমন। ভালোকে ভালো পরিবেশে রেখে ভালো স্কুলে পড়ার মেধা আর ভুখা পেটে থেকে মেধা এক নয়। তাই মেধা অনুসারে সবকিছু অনেক ক্ষেত্রেই আমার পছন্দ নয়। যার প্রাইমারিতে বিপুল মেধা সে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মেধাহীনও হতে পারে। আমার বাবা জন্মনিয়ন্ত্রণের পক্ষে ছিলেন না। মাঝে সাজে বলতেন, ‘এক-দুই সন্তান এটা যদি হতো তাহলে আমি বজ-কে কোথায় পেতাম। বজ তো আমার চতুর্থ সন্তান। ’ বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী তার শিক্ষা বা বিদ্যাকে কাজে লাগাননি। আজ জ্ঞানের বিকাশ ঘটেছে, বাংলাদেশে তার মতো লেখাপড়া জানা এখন খুব বেশি মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু তিনি মেট্রিকে অঙ্কে ফেল করেছিলেন। প্রথম শ্রেণির নম্বর পেয়েও কম্পার্টমেন্টাল। তাই আবার পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেবারও দ্বিতীয় বিভাগ। যারা তাকে পড়িয়েছেন তাদের অনেককেই তিনি এখন পড়াতে পারবেন। তার নিচু ক্লাসে ফল ভালো ছিল না বলে তিনি যদি উঁচু ক্লাসে পড়তে না পারতেন তাহলে কী হতো? এরকম একটি কথাই সৈয়দ আবুল হোসেন হঠাৎই তুলেছিলেন। বলছিলেন, ‘ভাই যখন সামর্থ্য হলো তখন ভাবলাম এলাকার মানুষরা যাতে শিক্ষার আলো পায় সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করি। মা-বাবার কথায় সেভাবে যতটা পেরেছি করেছি। কিন্তু শিক্ষানীতির কারণে এখন দেখছি স্কুল-কলেজ করে এলাকার শিক্ষার জন্য কোনো লাভ হচ্ছে না। তারা সেখানে পড়তে পারছে না। এলাকার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর মার্কস ভালো থাকলে ভালো কলেজে জায়গা হবে, বাড়ির কাছে হবে না। যার বাড়ির কাছে পড়ার সুবিধা তাকে দূরে গিয়ে পড়তে হবে। সে কোথায় থাকবে, কোথায় খাবে, কী করে পড়বে? মারাত্মক অসুবিধা। ’ আমিও কথাটি অনেকদিন থেকে ভাবছিলাম। বিত্ত থাকুক আর না থাকুক জনসেবা করার বাতিক ছিল আজীবন। তাই সম্পূর্ণ নিজের পয়সায় না হোক ২-৪টা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরাও করেছি। কিন্তু সেখানে এখন আর এলাকার ছেলেমেয়েরা পড়তে পারে না, বাইরের ছেলেমেয়েরা পড়ছে। এবার আমার এক ভাস্তি বাড়ির কাছে ২-৩টি কলেজ, কিন্তু সে ভর্তি হয়েছে অনেক দূরের কলেজে। বাড়িতে খেয়ে পড়তে পারলেও অতটা দূরে যাতায়াত করে তার পড়া অসম্ভব। কী যে সব বিধি-বিধান, সব কম্পিউটার। আবেগ-বিবেক, ভালো-মন্দ বিচার-বিবেচনার লেশ নেই। এমন যান্ত্রিক ব্যবস্থা এর আগে কেউ কখনো দেখিনি বা শুনিনি। ফেরার পথে সৈয়দ আবুল হোসেন বেশ কিছু উপহার দিয়েছিলেন। যখনই যাই তখনই খালি হাতে ছাড়েন না, কিছু না কিছু হাতে তুলে দেন। এবার উপহারে দুটি বই ছিল। একটা ‘আমার কথা’ সৈয়দ আবুল হোসেন, অসাধারণ। বইটা যে পড়বে সেই কিছু না কিছু উপকৃত হবে। আমার মনে হয় সৈয়দ আবুল হোসেনের এই উপহার পণ্যমূল্যে অমূল্য, হাজার কোটির বেশি।

৫-৭ বছর পর একই দিন আবদুল আউয়াল মিন্টুর অ্যাঙ্কর ভবনে গিয়েছিলাম। গেলে বড় ভাই বলে আঁতকে ওঠেন। বহু বছর লেখালেখি করেন। ইতিমধ্যে পিএইচডি করেছেন। কোনো লেখা হলেই আমাকে পাঠান। তেমন বাতিক সৈয়দ আবুল হোসেনেরও আছে। কয়েক বছর আগে ‘সন্তানকে পিতার কথামালা’ একটা বই দিয়েছিলেন। বইটা পড়ে মুগ্ধ ও অভিভূত হয়েছিলাম। ভুলে গিয়েছিলাম অনেক কিছু। সেদিন আবার দিয়েছিলেন। তার ছেলে তাবিদকে লেখা চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার জাহাজ থেকে আমেরিকার বন্দরে নেমে পড়া, অচেনা-অজানা এক আমেরিকানের সহযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের জন্য পোস্টার লিফলেট লেখা ও প্রচার করা।

সেই সঙ্গে বাড়ি রং করে এবং বিরাট বিরাট আঙিনার গাছের পাতা পরিষ্কার করে সাথী লালের সঙ্গে বেশ কিছু টাকার মালিক হওয়ার ঘটনা অনবদ্য, চমৎকার। ছেলের লেখাপড়া নিয়ে কখন কী করতে হবে—নিখুঁত দিক-নির্দেশনা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গে পৃথিবীর সেরা লেখার চাইতে খুব একটা কম কিছু নয় ‘সন্তানকে পিতার কথামালা’। মনে হয় বইটি সবার পড়া উচিত। বিশেষ করে বিত্তশালী পিতা-মাতার।

লেখক : রাজনীতিক।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.