Sylhet View 24 PRINT

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কোন পথে?

মেজর মো. আখতারুজ্জামান (অব.)

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৯-১২ ০০:৫০:৪০

মেজর মো. আখতারুজ্জামান (অব.) :: মিয়ানমার অত্যন্ত সুকৌশলে এবং চতুরতার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে নিজেদের নাগরিকত্বের সমস্যাকে বাংলাদেশের মানবতার সমস্যা তথা উদ্বাস্তু সমস্যা বানিয়ে দিয়েছে। এখন আর মিয়ানমারে কার্যত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নেই এবং রোহিঙ্গা সমস্যাও নেই।

জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা রাষ্ট্র ও প্রভাবশালী ইসলামী রাষ্ট্রের কূটকৌশলের চাপে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ ও থাকার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। ফলে এখন রোহিঙ্গা সমস্যাটি বাংলাদেশের জন্য মানবিক সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এই কয়েক লাখ রোহিঙ্গার ভরণ-পোষণ ও প্রতিপালনের দায়িত্ব বাংলাদেশের কাঁধে পড়েছে। হয়তো বিশ্ববাসী সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের মানবিক সমস্যা সমাধানে কিঞ্চিত পরিমাণ সাহায্য করতে পারে কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা বাংলাদেশকে একাই বহন করতে হবে। বাংলাদেশের মানবিক রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আবার জাতিসংঘের কাছে উদ্বাস্তু সমস্যা হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে। কাজেই জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পুঁজি করে বিশ্বব্যাপী চাঁদাবাজি করার সুযোগটি বহুদিন কাজে লাগাবে তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশন ইতিমধ্যেই বিরাট অঙ্কের একটি বাজেট করে ফেলেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটির বাজার এখন খুবই গরম এবং সবারই মানবিক অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দেবে! এ মুহূর্তে মিয়ানমারও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সাহায্য করতে দরাজ দিলে এগিয়ে আসতে পারে, চীন ভারত তো আসবেই। তারা কৃতজ্ঞতা জানাবে জাতিসংঘ উদ্বাস্তুবিষয়ক হাইকমিশন এবং বিশেষ করে কফি আনানকে রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তু বানাতে বিরল অবদান রাখার জন্য। কফি আনান ২৪ আগস্ট একটি আন্তর্জাতিক কমিশনের প্রধান হিসেবে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ, তাদের নাগরিকত্ব দান এবং অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কফি আনান যে কমিশনের প্রধান ছিলেন সে কমিশনটি কিন্তু মিয়ানমার সরকার তথা সে দেশের মূল নেতা অং সান সু চিই গঠন করে দিয়েছিলেন। কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিয়ানমারের সব রোহিঙ্গাকে বাঙালি বানিয়ে সু চির সরকার রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া করল। রোহিঙ্গামুক্ত মিয়ানমার সু চিকে উপহার দেওয়ার জন্য কফি আনানের পক্ষের তাবৎ পশ্চিমা গোষ্ঠী অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কলকাঠি নাড়ছে।
বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গাদের বাঙালি বানানোর স্কিম সফল করার জন্য মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। শুধু তাই নয়, খোদ মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় ছুটে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ ও আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করেছেন। অথচ সরকারের নীতিনির্ধারকরা একবারও পড়ে দেখলেন না কফি আনানের রিপোর্টে কী আছে, রিপোর্টের বক্তব্যের তাত্পর্য কী, কফি আনানের রিপোর্ট মিয়ানমার সরকার কীভাবে নিয়েছে বা নেবে, মিয়ানমার সরকার যদি কফি আনানের রিপোর্টের বক্তব্য না মানে তাহলে তাদের আশু এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ কী হবে তা বিস্তারিত পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ না করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে ও আশ্রয় দেওয়া সরকারের জন্য কতটুকু সুবিবেচিত সিদ্ধান্ত হয়েছে তা এখন ইতিহাসের বিবেচ্য বিষয়। তবে বিশ্ববাসীর কাছে এখন এটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে যারা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বলে আশ্রয় নিয়েছে তারা আদৌ রোহিঙ্গা কিনা? এ প্রশ্নের জবাব এখন বাংলাদেশকেই দিতে হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু এখন বাংলাদেশের মানবিক ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তা উদ্বাস্তু সমস্যা হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মিয়ানমারের সমস্যা এখন বাংলাদেশের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববাসীকে মিয়ানমার নেত্রী সু চি কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে দাবি করেছেন যে রাখাইন প্রদেশে কোনো সমস্যা নেই এবং রাখাইনবাসী শান্তিতে ও নিরাপদে আছে। রাখাইনবাসী নিয়ে বিশ্ববাসীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সু চির এ বক্তব্যের সঙ্গে ভারত ও চীন একমত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করে সু চির অবস্থান সমর্থন করেছেন। সু চি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকার করেন না। সু চি তার এই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে যেমন বলেছেন, তেমন তুরস্কের রাষ্ট্রপতিকে টেলিফোনে জানিয়ে দিয়েছেন। উদ্বাস্তু সমস্যা বাংলাদেশের হওয়ায় অনেক দেশ বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াতে চাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তুরস্কের ফার্স্ট লেডিসহ অনেকেই বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে দেখে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউই এখনো রাখাইন বা মিয়ানমারে যাননি বা যাওয়ার চেষ্টা করেননি। অথচ সেখানে গেলে সবাই সরেজমিন রোহিঙ্গাদের বাস্তব অবস্থাটি দেখে আসতে পারতেন। কিন্তু চরম বাস্তবতা হলো আজ পর্যন্ত একজন সাংবাদিকও সেখানে যাননি, এমনকি লুকিয়ে মিয়ানমারের ভিতরে প্রবেশ করে একটি ছবিও নিয়ে আসেননি। হয়তো ভবিষ্যতে সবাই যাবেন তখন কিন্তু মিয়ানমার সরকারের তাণ্ডবের কোনো প্রমাণ সেখানে থাকবে না। রোহিঙ্গাদের যত ছবি, রিপোর্ট তার প্রায় সব বাংলাদেশের ভিতরের। বিদেশি নেতা, রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠানের সফর বাংলাদেশের ভিতরে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যত মতবিনিময় বা খোঁজখবর সব বাংলাদেশের ভিতরে। তাহলে রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমার থেকে আসছে তার প্রমাণ কে দেবে? ওদিকে ভারত দাবি করছে বাংলা ভাষাভাষী ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ভারতে আছে! ভারত তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে কিনা তার হদিস আমাদের জানা নেই! এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই বিশ্ববাসী নির্দ্বিধায় হয়তো স্বীকার করে নেবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের কোনো সমস্যা নেই এবং বাংলাদেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আছে যাদের কোনো রাষ্ট্র নেই এবং যারা উদ্বাস্তু। এই রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এসে জড় হয়ে বাংলাদেশের জন্য মানবিক সমস্যা সৃষ্টি করছে, যার জন্য বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।

বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান অনেক বেশি জটিল ও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে আমার ধারণা। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল সমাধান হতে হবে মিয়ানমারের ভিতরে রাখাইন প্রদেশের মধ্যে এবং এর কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত দিতে হবে একমাত্র মিয়ানমার সরকারকে। কিন্তু এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে এনে দাঁড় করানো হয়েছে যে, মিয়ানমার এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার মনে হয় না সহজে রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসতে রাজি হবে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সরকারকে তিনটি পথে এগোতে হবে। প্রথম পথটি হলো দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার একটি যুক্তিসংগত ও গ্রহণযোগ্য পথ বের করা। যদি মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না করা যায় তাহলে সরকারকে অবশ্যই তৃতীয় পক্ষ ধরে দরকষাকষি করে এবং চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা সমস্যার একটি ন্যায়সংগত সমাধানে আসতে বাধ্য করতে হবে।

প্রথম যে পথটি আমাদের সবার সামনে খোলা তা হলো মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা। কিন্তু ইতিমধ্যেই মিয়ানমার সরকার যে ভঙ্গিমায় কথাবার্তা বলছে তাতে তারা শালীনতা রেখে কথা বলছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশ সরকার অনেকটা অসহায়ের মতো। এত ডামাডোলের মধ্যেও চাল কিনতে আমাদের খাদ্যমন্ত্রী মিয়ানমার গিয়েছিলেন। অভাব বড় নিষ্ঠুর। সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের নাকি আর মাত্র ৫০ দিনের চাল আছে। নতুন চাল উঠতে এখনো ৯০ দিনের বেশি বাকি। তাই খাদ্যমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে ১০ লাখ টন চাল আনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমার সাফ জানিয়ে দিয়েছে ডিসেম্বরের আগে অর্থাৎ ৭৫ দিনের আগে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হবে না এবং ডিসেম্বর থেকে চড়া দামে মাসে মাত্র ৩ লাখ টন চাল দেবে। এই চালের মাধ্যমে মিয়ানমার বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে মিয়ানমার দরকষাকষির ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্ব দেয়। কাজেই বিষয়টি মিয়ানমার স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার কোনো আলোচনায় আপাতত বসবে না এবং আমি মনে করি খুব নিকট ভবিষ্যতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার কোনো সুযোগ পাওয়া যাবে না। অতএব দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পথ শূন্যের কোঠায়।

এবার দেখা যাক দ্বিতীয় পথটির সম্ভাবনা কতটুকু খোলা। দ্বিতীয় পথটি অর্থাৎ তৃতীয় কোনো পক্ষ ধরে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমারকে নমনীয় করা যায় কিনা। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। মিয়ানমার বহুদিন থেকেই জাতিসংঘের তোয়াক্কা করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তো সে কোনো ব্যাপারেই পাত্তা দেয় না। পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে মিয়ানমার তার গার্লফ্রেন্ড মনে করে। ইসলামী শক্তিগুলোকেও মিয়ানমার যে খুব একটা পাত্তা দেয় না তার যথেষ্ট প্রমাণ সে বিশ্ববাসীকে ইতিমধ্যেই দেখিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেশী আশিয়ান রাষ্ট্রগুলোও মিয়ানমারকে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি আপন হিসেবে জানে তা যদি আমরা বুঝতে না পারি তাহলে সেটা আমাদের পোড়া কপাল। জাপান, কোরিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, পুরনো ও বিশ্বস্ত। চীন তো তাদের জন্মদাতা পিতা। বাকি থাকল একমাত্র ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে পড়াশোনা করা মিয়ানমার নেত্রী সু চির পানে আকৃষ্ট হবেন তা খুবই স্বাভাবিক। অতএব তৃতীয় পক্ষের চাপ সোনার পাথরবাটি বা অন্ধের সূর্যের আলো দেখার মতো দুর্লভ কামনা। অতএব দ্বিতীয় পথে হাঁটাও আমাদের জন্য হবে আরেকটি অমার্জনীয় পাপ। যে পাপের ভাগিদার হতে কস্মিনকালেও রাজি হওয়া যাবে না।

তৃতীয় পথটি নিয়ে আলোচনার করার আগে বর্তমান প্রেক্ষাপটটি বিবেচনা করা দরকার। সু চির মনোনীত আনান কমিশনের রিপোর্টটি সম্পূর্ণভাবে রোহিঙ্গাদের পক্ষে দেওয়া হয়েছে। যেমন রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, নাগরিকত্ব দিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে। তা ছাড়া রিপোর্টটি নাকি মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সম্মতিতেই প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হয়েছে। তাই যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে কেন রোহিঙ্গারা একযোগে বিভিন্ন পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করবে? তার মানে পর্দার আড়ালে থেকে কেউ মিয়ানমারের পক্ষে খেলছে এবং রাখাইন থেকে মুসলমানদের চিরতরে বের করে দেওয়ার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে সরাসরি মিয়ানমারকে সাহায্য করছে। সেই নীলনকশা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের খুবই সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিশ্বশক্তি সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে পরোক্ষ সহযোগিতা দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সবাই এখন বাংলাদেশ সরকারকে বাহ্বা দিচ্ছে কিন্তু মূল সমস্যা সমাধানে কোনো উৎকণ্ঠা তাদের মধ্যে নেই। তার মানে হলো ১৫ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইনে সহজে ফিরে যাচ্ছে না। আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় এই হলো বর্তমান রোহিঙ্গা প্রেক্ষাপট, যার ওপর ভিত্তি করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান খুঁজে নিতে হবে।

তাহলে এবার আসুন আলোচনা করি তৃতীয় পথটি। আমি মনে করি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একমাত্র তৃতীয় পথেই আমরা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যার যুক্তিসংগত সমাধানে দ্রুত সময়ে পৌঁছাতে পারব। আমার কাছে তৃতীয় বা সর্বশেষ সমাধানের একমাত্র পথটি হলো ইস্যু অব কনফ্লিক্ট। আমাকে আমার ভাষায়, আচরণে, ব্যবহারে আমার বন্ধু মিয়ানমারকে বুঝিয়ে দিতে হবে বন্ধু তোমাকে আমি ছাড় দেব না। জীবন বাজি রেখে হলেও তোমার অন্যায় আবদার বা খামখেয়ালি মেনে নেব না। মিয়ানমারের ঔদ্ধত্যপনায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা ধ্বংস হয়ে যাবে, তা আমরা বাংলাদেশিরা মেনে নেব না। সরকার সীমান্ত খুলে দিয়েছে বাংলার জনগণকে রোহিঙ্গাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর জন্য। এই ভাষা, এই প্রত্যয়, এই অঙ্গীকার যদি সরকার প্রথম দিনের সকালেই ঘোষণা করত তাহলে শতভাগ আস্থা নিয়ে বলতে পারি, আজকের রোহিঙ্গাদের অবস্থা অন্যরকম হতো।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.