আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

টাইফুন মাংখুটের তাণ্ডবে ফিলিপিন্সে নিহত ২৫

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-১৬ ১০:৫২:৩১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো টাইফুন মাংখুটে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা।

এদের মধ্যে ২০ জন ফিলিপিন্সের প্রধান দ্বীপ লুজনের কর্দিলিয়ারা অঞ্চলে, চার জন নুয়েভো ভিজকাইয়া প্রদেশের আশপাশে ও অপরজন ইলোকস সুর প্রদেশে নিহত হয়েছে বলে রোববার টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন ফ্রান্সিস তোলেন্তিনো।

কর্দিলিয়ারা ও নুয়েভো ভিজকাইয়ায় নিহতদের অধিকাংশই ভূমিধসের শিকার হয়েছেন, অপরদিকে ইলোকস সুর প্রদেশে নিহত ব্যক্তি উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুর্তার্তের এ রাজনৈতিক উপদেষ্টা।

নিহতের এ সংখ্যায় স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত পরিস্থিতি প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তোলেন্তিনো। তিনি প্রধান দুর্যোগ মোকাবিলা সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, মাংখুটে লুজনের উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য এলাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনে আসা অব্যাহত আছে।

কর্দিলিয়ারা থেকে আসা নিহতের সংখ্যাটি সমর্থন করেছেন বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের এমানুয়েল সালামাত। পুলিশ প্রতিবেদনেও সেখানে ২০ নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

টাইফুন মাংখুট ফিলিপিন্সের প্রধান দ্বীপ লুজনের মধ্য দিয়ে পশ্চিমমুখে চীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ফিলিপিন্সের সরকারি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, টাইফুনটির তাণ্ডবে তুগেগ্যারাও শহরের প্রায় সব ভবন কিছু না কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

টাইফুনটি ঘন্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এর গমনপথে ৪০ লাখ লোকের বসবাস। টাইফুনের কারণে ছয় মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাসে উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার লোককে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রবল ঝড়ে উপকূলীয় শহর আপারির আশ্রয় কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শহরটির ফোন নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ফিলিপিন্সের স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর প্রায় ১টা ৪০ মিনিটের দিকে কাগায়ন প্রদেশের বাগগাও এলাকা দিয়ে টাইফুনটি স্থলে উঠে আসে। এরপরও বাগগাওতে কেউ নিহত হননি বলে জানিয়েছেন ফিলিপিন্সের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান রিকার্দো জালাদ।

স্থলে উঠে আসার পর টাইফুনটির বাতাসের বেগ কিছুটা হ্রাস পায়। এতে কিছুটা দুর্বল হয়ে সুপার টাইফুনের অবস্থা থেকে এটি প্রায় চার মাত্রার সমতুল্য একটি হারিকেনে পরিণত হয়।

স্থানীয়ভাবে ওমপোং নামে পরিচিতি টাইফুনটির মেঘের বহর প্রায় ৯০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং এটি ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার বেগে পশ্চিমমুখে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এই টাইফুনটিকে চলতি বছর এ পর্যন্ত আঘাত হানা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে ঘোষণা করেছে।

রোববার বিকালে মাংখুট হংকংয়ের কাছ দিয়ে বয়ে যাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার টাইফুনটি দুর্বল হয়ে একটি ক্রান্তীয় নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে পূর্বাভাসে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে।

এই টাইফুন ২০১৩ সালে আঘাত হানা ফিলিপিন্সের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন হাইয়ানের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে। হাইয়ানের আঘাতে সাত হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল। তবে ওই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে ফিলিপিন্সের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি ও লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া উন্নত হওয়ায় মাংখুটে হতাহতের সংখ্যা কম হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬সেপ্টম্বর২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন