Sylhet View 24 PRINT

জার্মানির মতো এক হচ্ছে দুই কোরিয়া!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-২২ ০০:২৫:৪১

স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউরোপের দুই দেশ পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। সেই সময় পশ্চিম জার্মানি ছিল গণতন্ত্রমনা এবং সম্পদ-ঐশ্বর্যে ভরা একটি দেশ অপর দিকে পূর্ব জার্মানি ছিল সমাজতন্ত্রপন্থি ও অপেক্ষাকৃত গরিব দেশ। একই নামের এই দুই দেশের সম্পর্ক এতটাই খারাপ ছিল যে কেউ কারও ছায়াও দেখতে চাইত না। ফলে দুই দেশের মাঝ বরাবর দেয়াল তৈরি হয়। যা বার্লিন প্রাচীর নামেই পরিচিত।
কিন্তু ১৯৯০ সালে এক পলকেই ভেঙে ফেলা হয় এই প্রাচীর। সেই সময় অসম অর্থনীতির দুই দেশ এক হয়ে যায়। সেই স্লায়ুযুদ্ধের দুই জার্মানির মতোই সাপে-নেউলে সম্পর্ক এশিয়ার এক নামের দুই দেশ উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। বছর খানেক আগে দুই দেশ একে অপরকে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দিত। উত্তর কোরিয়াতো ক্ষণে-ক্ষণেই পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে ভয় দেখাত। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিক সেই উত্তপ্ত সম্পর্কে বরফ ঠেলে একে বারে ঠাণ্ডা করে দেয়। ইতিবাচক সম্পর্কে মোড় নেয় দেয় দুই দেশের অবস্থান। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন গত তিন দিন সফর করলেন উত্তর কোরিয়া। মুনের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রায় সব বিষয়েই কথা হয়। উত্তর কোরিয়া তার যুদ্ধংদেহী মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার আশ্বাস দেয়। ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পরমাণু অস্ত্রের।
এর মধ্যে সফরের দ্বিতীয় দিনে বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন উত্তর কোরিয়ার জনগণের সামনে দেওয়া ভাষণে ‘দুই কোরিয়ার ফের এক দেশ হওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন। বুধবার পিয়ংইয়ংয়ের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় মে ডে স্টেডিয়ামে উত্তর কোরিয়ার বৃহৎ ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট ভাষণ দেওয়ার এ অভূতপূর্ব সুযোগ পান বলে খবর বিবিসির। সাত মিনিটের এ ভাষণে মুন বলেন, “আমি প্রস্তাব করছি, আমাদের উচিত গত ৭০ বছরের শত্রুতা সম্পূর্ণ শেষ করা এবং ফের এক হওয়ার জন্য বড় ধরনের শান্তির পদক্ষেপ নেওয়া।’ আরিরাং গেমস নামের যে বিশাল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে মুন ভাষণ দিয়েছেন, সেটি উত্তরের সবচেয়ে বড় প্রচারণাধর্মী আয়োজন বলে ভাষ্য বিবিসির। মনোমুগ্ধকর ছন্দোবদ্ধ নৃত্য ও শারীরিক কসরতের মাধ্যমে এ আয়োজনে হাজার হাজার উত্তরকোরীয় তাদের ইতিহাস তুলে ধরেন। চলতি বছর উ. কোরিয়া তাদের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। পিয়ংইয়ংয়ের মে ডে স্টেডিয়ামে দুই নেতার প্রবেশের সময় দেড় লাখ উত্তরকোরীয় নাগরিক দাঁড়িয়ে তাদের অভ্যর্থনা জানায়। মুনের ভাষণ দক্ষিণ কোরিয়ায় সরাসরি সম্প্রচারিত হলেও উত্তরে হয়নি। উত্তরের জনগণের উদ্দেশে দেওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের এ ভাষণকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন পর্যবেক্ষকরা। দক্ষিণের প্রেসিডেন্টের পিয়ংইয়ং সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে মুন ও কিম চীন সীমান্তের কাছে মাউন্ট পিকতুও ভ্রমণ করেন। কোরীয় উপাখ্যানে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রাখা এ পাহাড়ের কথা আছে দক্ষিণের জাতীয় সংগীতে, পিকতুর উল্লেখ পাওয়া যাবে উত্তরের প্রায় সব প্রচারণাতেও।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.