আজ মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং

খাশোগি হত্যার পর প্রথম ভাষণে যা বললেন বাদশাহ সালমান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-২০ ১২:৩৪:৪৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সৌদি আরবের সুরা কাউন্সিলের ভাষণে নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। কিন্তু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করায় তিনি দেশের বিচার বিভাগের প্রশংসা করেছেন।-খবর আলজাজিরার।

সোমবারের দেয়া ভাষণে বাদশাহ সালমান ইয়েমেন যুদ্ধের অবসানে জাতিসংঘের উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছেন। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিমান হামলা ও অবরোধে ইয়েমেন দুর্ভিক্ষের কিনারে গিয়ে পৌঁছেছে।

এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক বলে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর নিহত হন।

গত সপ্তাহে দেশটির কৌঁসুলিরা বলেছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় তারা পাঁচ ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের জন্য সুপারিশ করেছেন।

বাদশাহ সালমান এমন একসময় ভাষণ দিলেন, যখন এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মার্কিন কংগ্রেস ফের নিন্দা জানিয়েছে।

খাশোগি হত্যায় এমবিএস সরাসরি জড়িত বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশের পর কংগ্রেসে এ নিন্দা করা হয়েছে।

ভাষণে বাদশাহ সালমান ফিলিস্তিনি সংকটকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সিরিয়া যুদ্ধে শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক মীমাংসায় রিয়াদের সমর্থন রয়েছে।

এ ছাড়া চিরশত্রু ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির লাগাম ধরতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এমবিএস প্রসঙ্গে বাদশাহ সালমান বলেন, তার ছেলে মানবিক সক্ষমতা বাড়াতে ও ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের জন্য নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

বাদশাহ সালমানের এ টেলিভিশন ভাষণ প্রসঙ্গে আরব সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজের পরিচালক মারওয়ান কাবাল্লান বলেন, বাদশাহ পরোক্ষভাবে নিহত সাংবাদিক জামাল খাশোগির কথা উল্লেখ করেছেন।

‘আমি মনে করি তিনি বিশ্ববাসীকে এ বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, তিনি তার সন্তানের পাশে রয়েছেন। দুটি দিক থেকে বিষয়টি পরিষ্কার। প্রথমত অর্থনৈতিক নীতিতে। কারণ তিনি যখন ব্যক্তিগত খাত নিয়ে কথা বলেন, তখন কোনোভাবে তিনি যুবরাজের ভিশন-২০৩০ এর কথা উল্লেখ করেন।’

মারওয়ান বলেন, দ্বিতীয়ত বক্তব্যের শেষে বিচার বিভাগের প্রতি নিজের আস্থার কথা জানিয়েছেন।

সুরা কাউন্সিলে ৮২ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান তার বক্তৃতায় বলেন, ইসলামিক ন্যায়বিচারের নীতি ও সমতার ভিত্তিতে রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং আমরা গর্বিত যে, বিচার বিভাগ ও পাবলিক প্রসিকিউশনে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, এই দেশে কখনও আল্লাহর নীতি ও ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন থেকে বিচ্যুত হবে না।

জামাল খাশোগি হত্যার পর থেকে কঠিন আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও তার দেশে কোনো কিছু হয়নি বলে মনে করেন বাদশাহ সালমান। ওই সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সৌদি নাগরিকদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

যুবরাজ মোহাম্মদের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে খাশোগি হত্যায় ভূমিকা থাকার অভিযোগে ১৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। খাশোগি হত্যা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি সংকট তৈরি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন