আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

ব্রিটেনে ইনভেস্টর ভিসা স্থগিত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-১৫ ০১:০৯:০৪

ধনীদের যুক্তরাজ্যে আবাস গড়ার সহজ পথ হিসেবে বিবেচিত ইনভেস্টর ভিসা স্থগিত ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। অর্থ পাচার এবং আর্থিক অপরাধ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যারোলাইন নোকস বলেছেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে স্থগিতাদেশ কার্যকর হবে। তিনি জানান, এ ভিসা আবেদনকারীদের আর্থিক বিষয়াদি যাচাইয়ে একটি নিরীক্ষা প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বহির্ভূত দেশ থেকে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ আকর্ষণে স্থায়ী বসবাস সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৮ সালে বিনিয়োগ ভিসা চালু করে যুক্তরাজ্য। ‘টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসা’ নামে এটি পরিচিত।
নিয়ম অনুযায়ী ২০ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগ করে যুক্তরাজ্যে বসবাসের অনুমতি পাওয়া যেত। প্রথমে তিন বছর চার মাসের ভিসা দেওয়া হতো। তারপর আরও দুই বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা ছিল এতে। আর ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর পাওয়া যেত স্থায়ী বসবাসের সুযোগ।

অতি ধনীদের জন্য বাড়তি সুবিধা হিসেবে ২০১১ সালে সরকার নতুন ঘোষণা দেয়। তখন এক কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করলে মাত্র দুই বছর পর স্থায়ী বসবাসের সুযোগ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে এই ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চে পৌঁছে। ওই বছর মোট ১ হাজার ১৭২ জনকে বিনিয়োগ ভিসা প্রদান করা হয়। আর গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩৫০ জন। এসব আবেদনকারীদের শীর্ষে আছে চীন ও রাশিয়ার নাগরিকেরা।

গত বছর যুক্তরাজ্যের মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটি জানায়, বিনিয়োগ ভিসা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির জন্য খুব একটা উপকারে আসছে না। বেশিরভাগ আবেদনকারী সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। এটি প্রকৃতপক্ষে কোনো বিনিয়োগ নয়; বরং সরকারকে ঋণ দেওয়ার শামিল।

এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের অসাধু ব্যক্তিরা কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের হাতিয়ার হিসেবে এ সুযোগ ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যুক্তরাজ্যসহ এর সদস্যভুক্ত ২৮টি দেশের কথিত ‘সিটিজেনশিপ অন সেইল’ প্রকল্প নিয়ে তদন্ত (রিভিউ) শুরু করেছে। ইইউভুক্ত বিভিন্ন দেশে অর্থের বিনিময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার সুবিধা চালু রয়েছে।

যেমন দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টাতে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পাশাপাশি আরও ৮ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করে দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া যায়।

যুক্তরাজ্যের হোম অফিস জানিয়েছে, স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর আগামী বছর থেকে স্বাধীন নিরীক্ষকেরা আবেদনকারীদের আর্থিক ও ব্যবসায়িক সামর্থ্যগুলো বিবেচনা করবে। বিনিয়োগের জন্য ঘোষিত তহবিল অন্তত দুই বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর নিয়ন্ত্রণে ছিল কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যারোলাইন নোকস বলেন, আবেদনকারীরা নিয়মের অপব্যবহার করলে সেটি সহ্য করা হবে না। কেবল প্রকৃত আবেদনকারীরা যাতে এই সুযোগ পায় এবং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ন্যায্য অবদান রাখে—তা নিশ্চিত করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন