Sylhet View 24 PRINT

ভারতে পিয়াজ ছাড়াই তৈরি হচ্ছে ফিশ ফ্রাই, বিরিয়ানি ও দোসা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১২-০৬ ১৯:০১:০৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: কাঁচা পিয়াজ ছাড়া "ফিশ ফ্রাই" কিংবা পিয়াজ ছাড়া "হায়দরাবাদি বিরিয়ানি"! কখনো কি শুনেছেন? না কি ভেবেছেন কোনোদিন! পিয়াজ মহার্ঘ্য হওয়ার কারণে কলকাতাবাসীকে এখন তার থেকে মুখ ফেরাতে হচ্ছে। এমনকি দোকানদাররাও তাদের কোন খাবারের পদে পিয়াজ রাখছেন না। দিলেও তা নামমাত্র। এ নিয়ে খদ্দেরের সঙ্গে মনোমালিন্যও হচ্ছে। খদ্দেররা যেন বুঝেও বুঝতে পারছে না। বিক্রেতারাও নিরুপায়।

এক মাস আগেও কলকাতায় পিয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ২৫ রুপি। এখন সেটা জায়গা ভেদে খুচরা বাজারে ১২০, ১৪০ আবার কোথাও ১৫০ রুপি করেও বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি, তাই মানুষ নিচ্ছে কম। ফলে বিক্রিও কমেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্ক বা লেক গার্ডেনে মার্কেটে পিয়াজের দাম ১১০-১২০ রুপি। উত্তর কলকাতার পোস্তা পাইকারি বাজারে দাম ১২৫ রুপি।

উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নাটাগর বাজারের ব্যবসায়ী তপন দাস জানান, গত চার দিন ধরে তিনি পিয়াজ বিক্রি করছেন না। কারণ হিসেবে তিনি জানান, খরিদ্দার প্রথমেই দোকানে এসে পিয়াজের দাম জানতে চান। দাম বেশি হলে তারা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। এতে খদ্দেরের সঙ্গে মন কষাকষি শুরু হচ্ছে।

দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত ফিশ ফ্রাই হলো শঙ্করের "ফিশ ফ্রাই"। বরাবরই ফিশ ফ্রাই এর সাথে কাঁচা পিয়াজ দিয়ে থাকেন, তবে দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন পরিমাণে কম দিচ্ছেন। কিন্তু পিয়াজ দেওয়া বন্ধ করেননি। আবার পণ্যের দামও বাড়াননি। তবে কত দিন এই দামে বিক্রি করতেন পারবেন তা নিয়ে তিনিও সন্দিহান।

বিরিয়ানি বলতেই প্রথমেই মনে আসবে হায়দরাবাদি বিরিয়ানি কথা। কিন্তু পিয়াজের দাম বৃদ্ধির ফলে সেখানকার রেস্টুরেন্টের মালিকরাও খাবার সুস্বাদু করতে পারছেন না। কারণ পিয়াজ ছাড়াই বিরিয়ানী তৈরি করতে হচ্ছে। এমনকি দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী খাবার ধোসাতেও পিয়াজের টুকরো পড়ছে না।

ইতিহাস বলছে হায়দরাবাদে এই প্রথম পিয়াজের দাম ১৫০ রুপি ছুঁয়েছে। পাইকারি বাজারে পিয়াজের না আসার দরুন দাম আকাশ ছুঁয়েছে। মালাকপেট পাইকারি বাজারের এক বিক্রেতা জানান চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে মহারাষ্ট্র থেকে ৪০০০ কুইন্টাল পিয়াজ এসে পৌঁছেছে। খুচরো বাজারে ভালো পিয়াজ ১৫০ টাকা করে এবং নিম্ন মানের পেয়াঁজ ৯০-১৩০ রুপি বিকোচ্ছে।

অসময়ে ও অতি বর্ষণের কারণে এবছর মহারাষ্ট্রে, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পিয়াজের চাষ। বেড়েছে দাম। ফলে এই শীতেও পিয়াজে কামড় মারা দায় হয়ে উঠেছে গৃহস্থের।

এদিকে পিয়াজ সমস্যা ঠেকাতে মিশর থেকে পিয়াজ আনছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এজন্য  ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কোঅপারটিভ
মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (নাফেদ)- সাথে আলোচনা সেরে ফেলেছে তারা। প্রতি সপ্তাহে ২ শতাধিক টন হিসাবে চলতি ডিসেম্বর মাসে ৮০০ টন  পিয়াজ আসবে। মিশর থেকে মুম্বাই বন্দরে আসা ওই পিয়াজের দাম কেজি প্রতি ৫৫ রুপি, পশ্চিমবঙ্গের বাজারে তা বিক্রি হবে ৬৫ রুপি।

পিয়াজ প্রভাব ফেলেছে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও। পিয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের সংসদ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও নিশানা করতে ছাড়েনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে।

পিয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নির্ভর করে থাকতে হয় ভারতের উপর। ভারত পিয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় মিয়ানমার, চীন, তুরস্ক, মিশর ও পাকিস্তান থেকে পিয়াজ আমদানি করতে হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রায় ১৫ বছর পর পাকিস্তান থেকে পিয়াজ আসে বাংলাদেশে। গত ২০ নভেম্বর প্রথম চালানটি আসে পাকিস্তান থেকে।

সৌজন্যে :: বিডি প্রতিদিন
সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৬ ডিসেম্বর ২০১৯/জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.