Sylhet View 24 PRINT

যেকোনো ইস্যুতে আলোচনায় রাজি ভারত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১০-১৯ ১১:০৩:৩৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: কভিড পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগে যে কিছুটা ভাটা পড়েছে, তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠার কথা বলেছিলেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। গত ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন শুরুর পর থেকে গত ১০ দিনের প্রায় প্রতিটি কর্মদিবসেই তিনি সরকারের মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো না কোনো বৈঠক করেছেন। পরিচিতিমূলক এসব সাক্ষাৎ ও বৈঠকে বার্তা মোটামুটি একটিই। তা হলো বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় ভারত। দেশটি যেকোনো ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে এখানে কোনো রাখঢাকের বিষয় নেই। দুই দেশই আলোচনার মাধ্যমে অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি এবং সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে।

ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী গতকাল দুপুরে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন ভারতীয় হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্পর্শকাতরতাগুলোর বিষয়ে নতুন হাইকমিশনার ভালো বোঝেন।

জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনারের প্রথম সাক্ষাৎ সৌজন্যমূলক হলেও তা রূপ নেয় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা পর্বে। বিশেষ করে, গত মাসে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। হাইকমিশনার ভারতের ঋণে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি জোরদারেও গুরুত্ব দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। আমাদের বিজয়, ভারতেরও বিজয়। এটি একসঙ্গে উদযাপন করা উচিত।’

ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ভারত সেই আমন্ত্রণ নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তীর পাশাপাশি মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠান আয়োজনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যৌথভাবে বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানী শহরে অনুষ্ঠান আয়োজন করে দ্বিপক্ষীয় সুসম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ভারতবাসীসহ সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ কর্মসূচি পালনের বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।

এদিকে কভিড মহামারির মধ্যে স্বাভাবিক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এয়ার বাবল ব্যবস্থাপনার আওতায় আগামী ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারত ফ্লাইট চালু হচ্ছে। একই সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে ভারতীয় ভিসা দেওয়া শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করছেন, দুই দেশের মধ্যে স্থল এবং রেল যোগাযোগও দ্রুতই চালু হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করে। এর কোনো বিকল্পও নেই। ১৯৭৭ সালে তৎকালীন সরকার গঙ্গার পানির বিষয়টি জাতিসংঘে তুলেছিল। উদ্দেশ্য ছিল শুধুই লোকজনের বাহবা পাওয়া, সমাধান নয়। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইস্যুটি জাতিসংঘ থেকে প্রত্যাহার করে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং এর ফলে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি হয়েছে। একইভাবে স্থলসীমান্ত সমস্যারও সমাধান হয়েছে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে সবার জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভারতের ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নীতির সবার আগে আছে বাংলাদেশ। এই সম্পর্ককে বিশেষ বলেই মনে করে নয়াদিল্লি। দুই দেশের জনগণ ও সামরিক বাহিনী মিলে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয়রাও রক্ত দিয়েছে, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরো বেড়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ অক্টোবর ২০২০/ডেস্ক/মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.