Sylhet View 24 PRINT

ছুটির দিনে রক্তাক্ত মিয়ানমার, ঝরে গেল ১৮ প্রাণ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০২-২৮ ২০:৩৫:৩৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিতে নিহত বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।

রোববার দেশটির ইয়াঙ্গুন, দাওয়েই ও মান্দালয় শহরে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এদিন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলির পাশাপাশি স্টান গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

রোববার সকাল থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেয়। আগের দিন অনলাইনে বড় ধরণের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এতে সাড়া দেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে সরাসরি গুলি ছোড়ে পুলিশ।

জ হেইন নামে একজন উদ্ধারকর্মী জানান, দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে তিনজন নিহত হন। এসময় রাবার বুলেটে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ইয়াঙ্গুনেও বড় বিক্ষোভ হয়েছে। শহরটিতে শিক্ষকদের একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ব্যবহার ও গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় এক নারী মারা যান।

এছাড়া বুকে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক।

একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক অ্যামি কিয়াও বলেন, আমরা বিক্ষোভে নামামাত্র পুলিশ গুলি চালানো শুরু করে। তারা সতর্ক করতে টু শব্দটিও উচ্চারণ করেনি। গুলিতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় কিছু বিক্ষোভকারী আশপাশে বাড়িঘরে আশ্রয়  নেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াঙ্গুনের রাস্তা থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ছেন। কয়েকজন লোককে ধরাধরি করে প্রতিবাদ থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে, তাদের দেহ রক্তাক্ত।

এছাড়া মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়েও দুজন নিহত হয়েছেন। সেখানেও সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর লাশিও এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মায়িকেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির প্রথম ক্যাথলিক কার্ডিনাল চার্লস মাউং বো টুইটারে বলেছেন, মিয়ানমার যুদ্ধক্ষেত্রের মতো হয়ে গেছে।  

এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হন। এদিন রাতে ইয়াঙ্গুনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আরেক বিক্ষোভকারী। এর আগের দিন রাজধানী নেপিদোয় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় এক তরুণীর।

মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী। তারা পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে।

এদিন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

সেনাবাহিনী সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। সঙ্গে দমন–পীড়নও জোরদার করছে নিরাপত্তা বাহিনী।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/ যুগান্তর /জিএসি-১৫

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.