Sylhet View 24 PRINT

সুইজারল্যান্ডে নিষিদ্ধ হল ‘মুখ ঢাকা পোশাক’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৩-০৮ ১০:০০:৪৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সুইজারল্যান্ডের গণভোটে সামান্য ব্যবধানে ‘প্রকাশ্যে মুখ ঢাকা পোশাক’ নিষিদ্ধের বিতর্কিত প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে পোশাকের ধরন উল্লেখ করা না হলেও মুসলিম নারীদের বোরকা বা নিকাবকে লক্ষ্য করেই প্রচার চালানো হয়।

সুইজারল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী যেকোনও বিষয়ে এক লাখ মানুষ স্বাক্ষর প্রদান করলে সেই প্রস্তাবের ওপর জাতীয় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। গণভোটে ৫১ দশমিক দুই শতাংশ মানুষ প্রস্তাবটির পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে দেশটির ২৬টি ক্যান্টনের (প্রশাসনিক অঞ্চল) ছয়টিতে বেশিরভাগ মানুষ এই প্রস্তাব সমর্থন করেননি। এই ছয় ক্যান্টনের মধ্যে রয়েছে দেশটির সবচেয়ে বড় তিন শহর জুরিখ, জেনেভা ও বাসেল। এছাড়া রাজধানী বার্নের অধিকাংশ মানুষও ছিলেন বিপক্ষে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখতে পারবেন না। রেস্টুরেন্ট, স্টেডিয়াম, গণপরিবহণ এমনকি রাস্তায় হাঁটার ক্ষেত্রেও মুখ আবৃত করে এমন পোশাক পরা যাবে না। তবে ধর্মীয় উপাসনালয় এবং নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত কারণে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ করোনা থেকে রক্ষায় মাস্ক পরতে কোনও সমস্যা নেই। সেই সঙ্গে প্রার্থনাস্থলে এই নিয়মের ছাড় দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে দেশটির দু’টি অঞ্চলে নিয়মটি কার্যকর রয়েছে। সেটি সারাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে কিনা সেই বিষয়ে রবিবার ভোটাভুটি হয়। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।

যারা পক্ষে

সুইজারল্যান্ডে এই প্রস্তাবের কোথাও বোরকা, নিকাবের কথা আলাদা করে বলা হয়নি। তবে এর পক্ষের রাজনৈতিক প্রচারে মুসলিম নারীদের পোশাককেই সামনে আনা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল দ্য সুইস পিপলস পার্টি প্রস্তাবের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়। তাদের বিলি করা একটি প্রচারপত্রে বোরকা পরা এক নারীর চিত্র ব্যবহার করে লেখা হয়েছে, ‘ইসলামি উগ্রবাদ থামাও’।

কিন্তু বাস্তবতা হল সুইজারল্যান্ডে সচরাচর বোরকা, নিকাব পরিহিত নারীদের তেমন একটা দেখা যায় না। তারপরও এমন প্রস্তাব কেন উঠেছে সেটি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আছে। এই বিষয়ে সুইস পিপলস পার্টির সংসদ সদস্য জ্যঁ-লুক অ্যাডোর বলেন, বোরকা পরা খুব বেশি নারী সুইজারল্যান্ডে নেই সেটা সৌভাগ্যের। তার যুক্তি, “কোন বিদ্যমান সমস্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই সমাধান করা উচিত।”

যারা বিপক্ষে

তবে সরকার ও সংসদ এ নিয়ে দেশজুড়ে নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ছিল। এর মাধ্যমে অকারণ ইসলাম ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলেও মত তাদের। বিপক্ষের একটি প্রচারপত্রে বলা হয়েছে, “অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও ইসলামভীতি ছড়ানো বোরকাবিরোধী আইনকে না বলুন।”

যেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ পরিচয় নিশ্চিত হতে চাইবে সেসব ক্ষেত্রে কেউ মুখ ঢাকা পোশাক পরলেও চেহারা দেখানোর বাধ্যবাধকতার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা। নিষিদ্ধের প্রস্তাবটি ভোটে বাতিল হলে তাদের এই বিকল্প প্রস্তাব কার্যকর হতো।

মুসলিম নারীবাদীদের প্রতিবাদ

প্রস্তাবটিতে যেসব কথা বলা হয়েছে সেগুলোকে বর্ণবাদী হিসেবে উল্লেখ করেছে মুসলিম নারীদের সংগঠন পার্পল হেডসকার্ভস।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে সংগঠনটির মুখপাত্র ইনেস এল-শিখ বলেন, প্রস্তাবিত আইনে যা সমস্যা নয় সেটিকে একটি সমস্যা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ পুরো সুইজারল্যান্ডে মাত্র ত্রিশজন নারী বোরকা পরেন।

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৮৬ লাখ জনসংখ্যার সুইজারল্যান্ডে মাত্র পাঁচ দশমিক পাঁচ ভাগ মুসলিম। সূত্র: ডয়েচে ভেলে

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/মিআচৌ-১

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.