আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সেমাই কীভাবে ঈদের অনুষঙ্গ হয়ে উঠলো?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৬ ১১:৫৩:৫৬

বাংলাদেশে ঈদ মানেই সেমাই। সেমাই ছাড়া যেন এখানে ঈদ কল্পনা করা যায় না। ঈদের সকালে সেমাই রান্না হয় না এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না।

কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঈদের সাথে সেমাইয়ের এই যোগসূত্র কিন্তু খুব পুরনো নয়। ইতিহাসবিদদের মতে, গত শতক থেকেই ঈদে ঘরে ঘরে সেমাই তৈরির এই সংস্কৃতি গড়ে ওঠে।

শামীমা ইয়াসমিন নামের এক গৃহিনী বলেন, ‘ঈদের নামাজের পর বাড়ির পুরুষরা এসে সেমাই খাবে। গত ঈদে সবই রান্না করা হয়েছিল কিন্তু ভুল করে সেমাই রান্না হয়নি। তখন বাবা খুব রাগারাগি করলেন। তিনি বললেন, ঈদের দিন সেমাই মুখে দেবো না সে কি হয় নাকি?’

ঈদে সেমাই খাওয়ার প্রচলন শুরু হয় কবে থেকে? এমন প্রশ্নে জবাবে ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন জানান, সেমাইয়ের ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে দেখেছি এটা খুব পরনো রীতি নয়। উনিশ শতকের শেষের দিকে আমরা ঈদের বর্ণনায় সেমাইয়ের কথা পেয়েছি।

তিনি জানান, ত্রিশ-চল্লিশের দশক থেকে সেমাইয়ের জনপ্রিয়তাটা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। কিছু সেমাই হাতে তৈরি হয় আবার বাণিজ্যিকভাবেও এটা তৈরি হতে থাকে। এখন যে সেমাই আমরা দেখি সেটির প্রচলন শুরু হয়েছে পঞ্চাশের দশক থেকে।

মুনতাসির মামুন আরও জানান, মুঘল কিংবা তার আগের সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে সেমাইয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। গ্রিকদের সেমাইয়ের মত দেখতে খাবার আছে তবে সেটা উপমহাদেশের সেমাইয়ের মত নয়।

বাংলাদেশে সেমাই কেন এত জনপ্রিয়? এমন প্রশ্নের জবাবে মুনতাসির মামুন জানান, এটি দ্রুত এবং সহজে তৈরি করা যায় এবং দামেও অপেক্ষাকৃত সস্তা। ফলে এটা একটা অনুষঙ্গ হয়ে গেছে।

তার মতে, সেমাইয়ের ইতিহাস খুব একটা জানা যায় না। আবার এটি যে বহিরাগত তাও মনে হয় না। এখানকার পিঠাপুলি তৈরির পদ্ধতি থেকে পরিবর্তিত হয়ে সেমাই আজকের রূপ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত এবং পাকিস্তানেও ঈদে সেমাই খাওয়ার রেওয়াজ আছে। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ঈদে সেমাইয়ের প্রচলন খুব একটা দেখা যায় না। সূত্র: বিবিসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন