Sylhet View 24 PRINT

মাওলানা সাদকে নিয়ে কেন এত বিতর্ক

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০১-১৩ ০০:৪৮:১২

দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের অন্যতম শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি। ‘তাবলিগ করা ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না’ বলে মন্তব্যের পর তিনি বিতর্কিত হয়ে পড়েন। কয়েক বছর ধরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাত পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এবারের ইজতেমায় তার অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে গত জোড় ইজতেমা থেকে তাবলিগ জামাতের মুরব্বি ও ইজতেমা আয়োজকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাবলিগ জামাতের একাংশের মুরব্বিরা বলছেন, মাওলানা সাদ বেশকিছু বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন যা  কোরআন-সুন্নাহ্ বিরোধী। তাই তাকে ইজতেমায় তারা অংশ নিতে দেবেন না। অবশেষে গতকাল সিদ্ধান্ত হয়েছে, মাওলানা সাদ ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন না। তিনি এ সময় কাকরাইল মসজিদে অবস্থান করবেন এবং সুবিধাজনক সময়ে দিল্লি ফিরে যাবেন।

মাওলানা সাদ কান্ধলভির অন্তত ২৬টি বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর এসব বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তিনি সম্মত হননি। মাওলানা সাদের বিতর্কিত বক্তব্যের মধ্যে রয়েছে— ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল রাখা হারাম। কেউ পকেটে ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল রেখে নামাজ পড়লে তার নামাজ শুদ্ধ হবে না। মোবাইল ফোনে কোরআন শরিফ পড়া এবং শোনা প্রস্রাবের পাত্র থেকে দুধ পান করার মতো। যে উলামায়ে কেরাম ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল রাখেন, তাঁরা উলামায়ে ছূ। এমন আলেমরা হলো গাধা।

মাওলানা সাদের মতে, কোরআন শরিফ শিখিয়ে যাঁরা বেতন গ্রহণ করেন, তাঁদের বেতন বেশ্যার উপার্জনের চেয়ে খারাপ। যে ইমাম এবং শিক্ষকরা বেতন গ্রহণ করেন, তাদের আগে বেশ্যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। মাদ্রাসাগুলোতে জাকাত না দেওয়া হোক। মাদ্রাসায় জাকাত দিলে জাকাত আদায় হবে না। রসুল (সা.)-এর পর কেবল তিনজনের বাই’আত পূর্ণতা পেয়েছেন, বাকি সবার বাই’আত অপূর্ণ। এই তিনজন হলেন— শাহ ইসমাঈল শহীদ (রহ.), মাওলানা ইলিয়াছ (রহ.) ও মাওলানা ইউসূফ (রহ.)। দাওয়াতের পথ নবীর পথ, তাছাউফের পথ নবীর পথ নয়। রসুল (সা.) দাওয়াত ইলাল্লাহ’র কারণে এশার নামাজ দেরিতে পড়েছেন। অর্থাৎ নামাজের চেয়ে দাওয়াতের গুরুত্ব বেশি।

মাওলানা সাদের আরও বিতর্কিত মন্তব্য হচ্ছে, হযরত মুসা (আ.) দাওয়াত ছেড়ে দিয়ে কিতাব আনতে চলে যাওয়ার কারণে পাঁচলক্ষ সত্তর হাজার লোক মুরতাদ হয়ে গেল। হযরত মূসা (আ.) কর্তৃক হারুন (আ.)কে নিজের স্থলাভিষিক্ত বানানো উচিত হয়নি। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে জিজ্ঞাস করবেন, তা’লীমে বসেছিলে কি না, গাশত করেছিলে কি না? প্রত্যেক সাহাবী অপর সাহাবীর বিরুদ্ধাচরণ করছেন। আযান হল তাশকীল। নামায হল তারগীব। আর নামাযের পর আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া হল তারতীব।

মাওলানা সাদের বিতর্কিত বক্তব্যে আরও রয়েছে, হেদায়েতের সম্পর্ক যদি আল্লাহর হাতে হতো, তাহলে নবী পাঠাতেন না। কোরআন শরীফ বুঝে শুনে তেলাওয়াত করা ওয়াজিব। তরজমা না জেনে তলাওয়াত করলে ওয়াজিবের গুনাহ হবে। বড় গুনাহ-চুরি, যিনা। কিন্তু তার চাইতে বড় গুনাহ হলো খুরুজ না হওয়া।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.