আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

‘স্বাধীনতাবিরোধীদের চাকরি না দেয়ার দাবি’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-১৬ ০০:৫৮:৪১

মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে চাকরি দেয়া যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছয় দফা দাবি পেশ করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ। রবিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক গণসমাবেশে সংগঠনের পক্ষে দাবিগুলো তুলে ধরেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

দাবিগুলো হলো- কোটা সংস্কারের নামে হত্যার গুজব ছড়িয়ে উস্কানি দিয়ে যারা অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জামায়াত-শিবির-রাজাকার সন্তানদের চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধীরা যারা সরকারি চাকরিতে বহাল থেকে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করছে ও মুক্তিযুদ্ধ এবং সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে চাকরি হতে অপসারণ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সব অস্থাবর-স্থাবর সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে এবং বেসরকারি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল গঠন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী ও মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের হলোকাস্ট বা জেনোসাইড ডিনাইল ল'র আদলে আইন প্রণয়ন করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দৈনিক জাগরণ সম্পাদক আবেদ খান, কামাল পাশা চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, গৌরব’ ৭১ এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, গৌরব’ ৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন প্রমুখ।
সমাবেশে নৌমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন করেছে। যেকোনো দাবি নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে হত্যাচেষ্টাকারী কারা? তাদের খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি ছাত্রদের উদ্দেশে আরো বলেন, তোমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান না করতে পারো; কিন্তু অপমান করতে পারো না। কোটা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কাদের মেধাবী বলবো? আদর্শহীন কাউকে আমরা মেধাবী বলতে পারি না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত আছি, তারা কেউই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হইনি। কিন্তু আমরা রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালনা করছেন। যেসব ছাত্র জামায়াত-শিবির, রাজাকারদের সন্তান, তাদের কি চাকরি দেয়া উচিত?
শাজাহান খান বলেন, স্বাধীনতার বিপক্ষের মেধাকে চাকরি দেয়া যাবে না। আমরা কোটার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলছি, আপনি কোটা বাতিল করেছেন মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি আপনাকে মানতেই হবে।

আবেদ খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না। এই বাংলাদেশ ৩০ লাখ শহীদের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সব ষড়যন্ত্র রুখে দেব।

কোহেলি কুদ্দুস মুক্তি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বাঙালির বীর সন্তানদের নিয়ে কোনো কটূক্তি মেনে নেব না। আমি দাবি করছি স্বাধীনতাবিরোধীদের নাগরিকত্ব বাতিল করে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার।
এফ এম শাহীন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে নতুনভাবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। মিথ্যা ও গুজবের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় একটি চক্র। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা মটিতে রাজাকার, আলবদর, আলসামসদের কোনো জায়গা হতে পারে না।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন