আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

আউটসোসিং বন্ধ করে সরাসরি নিয়োগের প্রস্তাব করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-১৯ ১০:৪০:২৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আউটসোসিং এর মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির যেসব কর্মচারী নিয়োগ হচ্ছে সেগুলো বন্ধ করে সরাসরি নিয়োগের প্রস্তাব করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। আউটসোর্সিং নিয়োগের মাধ্যমে ওইসব কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার হরণ হচ্ছে বলেও মনে করে কমিটির সদস্যরা। এজন্য কীভাবে তাদের সরাসরি নিয়োগ করা যায় সেটি বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার প্রস্তাব করেছেন তারা।

বুধবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সংসদ সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব করা হয়। কমিটির সদস্যরা আউটসোসিং নিয়োগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা এটা অনৈতিক বলেও মন্তব্য করেছেন। বৈঠক শেষে কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর চতুর্থ শ্রেণির জনবল আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সংগ্রহ না করে সরাসরি নিয়োগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্তে উপনিত হবো।

নৌ-পরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর ঘুষসহ দুদকের হাতে ধরা পড়ার বিষয়ে কমিটিতে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু এজেন্ডায় ছিল না, তাই বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। একজন বিষয়টি ‍তুলেছিলেন কিন্তু মন্ত্রী দূত চলে যাওয়ায় আলোচনা হয়নি। তবে শিগগিরই আবার মিটিং হবে সেই মিটিং এ আলোচনা হবে। সেখানে আমরা জানতে চাইবো কেন বার বার এমন হচ্ছে। আমরা এটা সমর্থন করি না।

কমিটির সদস্য মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আউট সোসিং নিয়োগটা হয় তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে। এরা মন্ত্রণালয়ের অধীনে না, এভাবে নিয়োগ দেওয়াতে জবাবদিহিতাও থাকে না। তাছাড়া এ নিয়োগের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারও হরণ করা হয়। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংসদ অধিবেশনে বিষয়টি তুলবো। যাতে আউট সোসিং নিয়োগ বাদ দিয়ে সরাসরি নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পদে প্রায় ১৫০টি চতুর্থ শ্রেণির পদ খালি রয়েছে। এগুলো নিয়ে আউট সোসিং এর মাধ্যমে নিয়োগের চিন্তা ভাবনা করছে। সেজন্যই কমিটির সদস্যরা বিরোধীতা করেছে। সরকারির চাকরির ১৮, ১৯ এবং ২০তম গ্রেডের সম্মাননা কর্মচারীদেরকেই কেবল মাত্র আউট সোসিং নিয়োগ দেওয়া হয়। অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ঘুষের টাকাসহ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে ধরা পড়লেও কমিটিতে এনিয়ে কেউ আলোচনা করেনি। এমনকি বিষয়টি তাদের স্মরণেই ছিল না বলে জানান কমিটি সদস্যরা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর চতুর্থ শ্রেণির জনবল আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে সংগ্রহ না করে সরাসরি নিয়োগ করার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়।

এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের ঐতিহাসিক অবদান এবং অকুতোভয় বীর বাঙালি নৌ-কমান্ডোদের দুঃ সাহসী অভিযানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে চলচ্চিত্রের পান্ডুলিপি লেখক এবং পরিচালক হিসেবে গিয়াস উদ্দিন সেলিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে আরো উল্লেখ করা হয় যে, সমুদ্রপথে বাণিজ্যের প্রসারসহ আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ হতে জুন ২০১৭ পর্যন্ত ৪২৩ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে মোট ০৮টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ০৪টি উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে ০৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে এবং ০৮টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন আছে।

কমিটি সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) এর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, মো. নূরুল ইসলাম সুজন, এম আব্দুল লতিফ, রণজিৎ কুমার রায়, মমতাজ বেগম অ্যাডভোকেট এবং বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯এপ্রিল২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন