আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিআইপি হলেন ৩৫ প্রবাসী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-১৬ ০১:১৬:৫৫

৩৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বিদেশে গিয়ে পরিশ্রম করে আয় করা অর্থ বৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে এ খেতাব পাচ্ছেন ২৯ জন প্রবাসী। বাকি ছয়জন বিদেশে থেকে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করে ওই সব দেশে বিক্রি করে এ তালিকায় জায়গা পেয়েছেন।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তালিকায় জায়গা পাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকায় থাকাদের জায়গা হয়নি। কারণ ওই সব দেশে যেসব বাংলাদেশি থাকেন তাঁরা নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর বদলে সেখানেই বাড়ি-গাড়ি কিনে বসবাস করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাঁরা যান তাঁরাই মূলত পরিবারের জন্য বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠান। তাই বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সিআইপি হওয়া ২৯ জনের মধ্যে ২২ জনই মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। বাকি ৯ জন যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরপ্রবাসী। আর প্রবাসী আমদানিকারক হিসেবে যে ছয়জন সিআইপি হচ্ছেন তাঁদের মধ্যে একজন রাশিয়ার মস্কোতে থাকেন। বাকি পাঁচজনই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থেকে ব্যবসা করছেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট জারি করা হয়েছে বলে জানান তাঁরা।

রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুষ্ঠান করে সিআইপি হওয়া ব্যক্তিদের সনদ, পরিচয়পত্র ও ক্রেস্ট দেয় সরকার। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁরা দাওয়াত পান। সিআইপি নির্বাচিত হওয়া এই ৩৫ জন আগামী এক বছর এসব সুবিধা পাবেন। সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে—তাঁরা আগামী এক বছর সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। দেশে-বিদেশে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অগ্রাধিকার পাবেন। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাবেন।

এ ছাড়া প্রবাসী সিআইপিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতোই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ব্যবসাসংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেল, সড়ক ও জলযানে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। সিআইপিদের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ‘চ্যামেলী’ ব্যবহার ও স্পেশাল হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা পাবেন।

বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সিআইপি হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন দুবাইপ্রবাসী কুমিল্লার মোসাম্মৎ জেসমিন আক্তার, আবুল কালাম, সিলেটের মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান, কক্সবাজারের মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রামের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, নুরুল আলম, মোহাম্মদ আলী, মোরশেদুল ইসলাম, মোহ. ফরিদ আহমেদ, মৌলভীবাজারের মোহাম্মদ হাসিম, ঢাকার এ এইচ এম তাজুল ইসলাম, আবদুল গণি চৌধুরী ও হবিগঞ্জের রাখাল কুমার গোপি।

ওমানপ্রবাসীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামের মোহা. মোসাদ্দেক চৌধুরী, মোহাম্মদ আশরাফুর রহমান, মোহাম্মদ শামসুল আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরী, হাফেজ মোহাম্মদ ইদ্রিস ও লক্ষ্মীপুরের আবদুল জলিল। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মৌলভীবাজারের মোহাম্মদ আবদুর রহিম, ঢাকার মোহাম্মদ আদনান ইমাম, মোহাম্মদ মহসিন আলম, সিঙ্গাপুরপ্রবাসী ঢাকার মো. সাজ্জাদ হোসাইন, কাতারপ্রবাসী ঢাকার আহম্মদ আল জামান, চট্টগ্রামের মোহা. আবু তালেব, পাবনার আবদুল আজিজ খান, অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ঢাকার শহিদ হোসাইন জাহাঙ্গীর, হংকংপ্রবাসী নোয়াখালীর মো. মাহমুদুর রহমান খান ও জাপানপ্রবাসী ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কাজী সোহরাব হাবীব।

বিদেশে বাংলাদেশ পণ্যের আমদানিকারক হিসেবে সিআইপি খেতাব পাচ্ছেন ছয়জন প্রবাসী বাংলাদেশি। তাঁরা হলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী চট্টগ্রামের মোহাম্মদ সেলিম ও নুরুল আলম, ওমানপ্রবাসী চট্টগ্রামের এ এইচ বদর উদ্দিন, রাশিয়াপ্রবাসী ঝিনাইদহের খান মো. ফিরোজ উল আলম, কুয়েতপ্রবাসী চট্টগ্রামের আবুল কাশেম ও কাতারপ্রবাসী চট্টগ্রামের মোহা. আবু তালেব।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন