আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

৭ জেলায় 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৭

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-২৩ ১১:৪৭:৪৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: দেশের ৭ জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দকযুদ্ধে ৭ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ও বুধবার ভোরে ঠাকুরগাঁও, জামালপুর, রংপুর, কুমিল্লা, ফেনী, গাইবান্ধা ও কুষ্টিয়ায় এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

জামালপুরের শহরতলীর ছনকান্দা মাদ্রাসা বালুঘাট এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।

জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, ভোরে একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক ক্রয় বিক্রয় করছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে এক মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। এ সময় অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাসিমুল ইসলামসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা, ১০০ গ্রাম হেরোইন, একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভাতারমাড়ী ফার্ম নামক স্থানে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আলতাফুর নামে একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, সে একজন মাদক ব্যবসায়ী। বুধবার ভোর ৪টার দিকে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে টেলিফোনে জানানো হয়েছে।

জেলা পুলিশ জানায়, পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী দুই থানার পুলিশের এক যৌথ অভিযানের সময় মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালালে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে আহত হয়ে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমানসহ দুই পুলিশ সদস্য।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রাজু মিয়া নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে গাইবান্ধার র‌্যাব-১৩ এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নিহত রাজু পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের রাইগ্রামের মৃত আব্দুল জোব্বারের ছেলে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে উপজেলার বিশ্রামগাছি গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালান রাজু। এ সময় র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে রাজু নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন র‌্যাবের দুই সদস্যও। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ও গাঁজা জব্দ করা হয়েছে। রাজুর বিরুদ্ধে পলাশবাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর ব্রিজ সংলগ্ন সামারচর এলাকায় ডিবি ও থানা পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইসহাক ওরফে ইছা নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাহউদ্দিন, এসআই মারুফ ও কনস্টেবল মিজানসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর ব্রিজ সংলগ্ন সামারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ৪০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ইছা একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, পুলিশের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে মঙ্গলবার বিকালে ইসহাককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সদর উপজেলার সামারচর এলাকা থেকে ফেনসিডিল উদ্ধার শেষে ফেরার পথে ইছার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে ইছার সহযোগীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ১১টি মামলা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

ফেনী জেলা শহরের কালিপাল নামক স্থানে র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মোহাম্মদ ফারুক (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সে চট্টগ্রামের চন্দনাঈশ এলাকার অলি আহম্মদের ছেলে। র‌্যাবের দাবি, তার বিরুদ্ধে থানায় মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

ফেনীস্থ র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক সাফায়াত জামিল ফাহিম জানান, মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব ফেনী ক্যাম্পের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেনীর শহরের কালিপাল এলাকায় চেক পোস্ট স্থাপন করে। এসময় মাদক ব্যবসায়ী ফারুক চট্টগ্রাম থেকে মাদক নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। ফারুক র‌্যাবের চেক পোস্ট ভেঙে প্রাইভেটকার নিয়ে চলে যাওয়ার সময় র‌্যাবের সাথে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। র‌্যাব পরে তার গাড়ি তল্লাশি করে ২২ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটারগান, ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।

কুষ্টিয়ায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী ইটভাটা মাঠে পুলিশের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও লিটন শেখ (৪০) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। ফটিক কুমারখালী উপজলার এলেঙ্গীপাড়ার মৃত ওসমান গণির ছেলে এবং লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা লাহিনীপাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য কর গুলি ছুড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে ফটিক ওরফে গাফফার গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আরও জানান, ফটিক ওরফে গাফফার পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি, ৭শ’ পিস ইয়াবা ও ৫শ’ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ভেড়ামারা উপজেলার হাওয়াখালী ইটভাটা মাঠে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন নিহত হন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫০০ পিস ইয়াবা ও ২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ মে ২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন