Sylhet View 24 PRINT

হাসিনা-ট্রুডো বৈঠক: যা বার্তা পেল বাংলাদেশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১২ ২১:৪১:৩৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৪তম জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডায় রয়েছেন। এবারের জি-৭ সম্মেলনের মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে স্থিতিশীল উপকূল ও উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন, মহাসাগর ও সমুদ্র উপকূলের পরিচ্ছন্নতা, সামুদ্রিক মৎস্য শিকার। সম্মেলন উপলক্ষে বিশ্ব অর্থনীতির সাত পরাশক্তির জোট জি-সেভেনের সম্মেলনের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হয় জি-৭ আউটরিচ মিটিং।

জি-৭ সম্মেলনে কানাডার কুইবেকে আউটরিচ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিন লগার্দ, জি টোয়েন্টি জোটের বর্তমান সভাপতি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ার হাইতির প্রেসিডেন্ট, জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট, মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী, আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ার রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট, সেসেলসের প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সেক্রেটারি জেনারেল উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-৭ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদকৃত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জি-৭ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদশে প্রাণ ভয়ে  ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছে। তারা নিজ দেশে আজ অত্যাচার, গুম, খুনের স্বীকার। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় তাদের শেষ সম্বল টুকু। বাংলাদেশের  জনগণ তাদের বাড়িঘর দুর্দশাগ্রস্থ রোহিঙ্গাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং নিজেদের খাবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের দায়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নে রাখাইন রাজ্যে কার্যকর পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। স্থায়ী ভাবে তাদের উপর অত্যাচার বন্ধ এবং মূল সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে অবশ্যই কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। রোহিঙ্গার সেখানে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। সেখানে ছিল তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব। তাদের পুরনো পরিবেশে মিয়ানমারকে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা দ্রুত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের অধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি। এই প্রক্রিয়া যাতে স্থায়ী ও টেকসই হয় সে জন্য আমরা এতে ইউএনএইচসিআরকে অন্তর্ভুক্ত করেছি।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের খুনী নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেয়ার উল্লেখ করেছেন এবং কানাডা সরকার ‘কানাডার আইন’ অনুযায়ী নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও কানাডার সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান আমাদের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী কানাডায় পাড়ি জমায়। তাদের সুযোগ সুবিধা নিয়েও আলোচনা করা হয়। টরন্টোর মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে এক নাগরিক সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রবাসীদের সাথে মত বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী।

উপরের উল্লেখিত বিষয় গুলো বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ অনেকেই বলছেন যে  প্রধানমন্ত্রীর কানাডা সফর তথা জি-৭ সম্মেলন সফল হয়েছে এবং রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.