আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়িতে বন্যা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৩ ১২:১৩:২০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে খাগড়াছড়ির নদীর পানি। সবার ধারণা ছিলো বন্যা হলে জেলার নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হবে। কিন্তু সোমবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে বদলে যায় দৃশ্যপট।

টানা চারদিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রভাবিত হতে থাকে। এতে নদী সংলগ্ন গঞ্জপাড়া, শান্তিনগর, মুসলিম পাড়া, বটতলী, কালাডেবা, শব্দ মিয়া পাড়াসহ আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়।

ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে পানি ওঠে খাগড়াছড়ির প্রাণকেন্দ্রের শাপলা চত্বর, ভাঙাব্রিজ, মাস্টারপাড়া এলাকাসহ আরও বিভিন্ন গ্রামে। গভীর রাতে ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় তাৎক্ষণিক জিনিসপত্র গোছাতে পারেনি বন্যার্তরা। এছাড়া দীঘিনালা, মহালছড়ি, মানিকছড়ি, রামগড়সহ অন্য উপজেলাগুলোতেও মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে বহু কাঁচা ঘর ও জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাজুড়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। তবে আস্তে আস্তে পানি কমলেও বৃষ্টি থাকায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা।

সর্বশেষ ২০০৭ সালে এমন বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মানুষ। তবে অনেকে বলছে, এবারের বন্যা ২০০৭ সালের বন্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিতে বসবাসরতদের নিরাপদে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শহরে মাইকিং করা হয়েছে। খোলা হয়েছে আটটি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৩শ’ পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার (১২ জুন) সকাল থেকে বন্যা কবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট, খাগড়াছড়ি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

দীঘিনালায় মাইনী নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণের কারণে উপজেলার ছোটমেরুং এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ছোটমেরুং বাজারটিও ডুবে গেছে। এছাড়া সড়কে পানি ওঠায় দীঘিনালা-মেরুং-লংগদু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

পাহাড়ি ঢলের কারণে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-ফেনী-ঢাকা সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি ওঠায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে পড়েছে।

বন্যার্তদের দেখতে গেছেন শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স-এর চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তিনি গোলাবাড়ি এলাকা, শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্তদের খোঁজ খবর নেন। এসময় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খানসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রশাসন যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষগুলো সরে যেতে বলা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ জুন ২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন