আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

দুই বউ নিয়ে বিপাকে, আত্মগোপনে যুবক

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১০ ০১:০৯:২২

প্রতীকী ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’জনকে বিয়ে করে চরম বিপাকে পড়েছে এক যুবক। বর্তমানে তার বাসায় দুই বউ অবস্থান করায় বর ও বরের বাবা আত্মগোপনে রয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধুকুরঝাড়ী গ্রামের বিপ্লব চন্দ্র সিংহ নামে এক যুবক সাত দিনের ব্যবধানে ২ কিশোরীকে বিয়ে করে এখন বিপাকে পড়েছে। এখন দুই নববধূ স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে ওই যুবকের বাড়িতে অবস্থান করছে। এ অবস্থায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে বর বিপ্লব চন্দ্র সিংহ ও তার অভিভাবকরা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ধুকুরঝাড়ী গ্রামের অমূল্য চন্দ্র সিংহের ছেলে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অফিস সহায়ক বিপ্লব চন্দ্র সিংহ পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের অতুল চন্দ্র বর্মনের কন্যা কলেজ পড়ুয়া দিপিকা রানীর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ চুটিয়ে প্রেম করে আসছিল। প্রেমের স্বার্থকতার জন্য গত ১০ জুন বিপ্লব চন্দ্র সিংহ দিপিকা রানীকে ঠাকুরগাঁও নোটারী পাবলিকে এফিডেভিটমূলে বিয়ে করে। তবে শর্ত ছিল বিয়ের বিষয়টা গোপন রাখ। শর্ত মোতাবেক বিয়ে করার পর দিপিকা রানী তার পিত্রালয়ে ফিরে যায়। দিপিকা বিপ্লবের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও বিপ্লব ফোন রিসিভ করেনি। ফোন রিসিভ না করায় দিপিকা রানী ২৫ জুন তার বাড়িতে খোঁজ নিতে আসে। সেখানেই সে জানতে পারে তাদের বিয়ের কয়েকদিন পরেই সে আরেকটি বিয়ে করেছে। তখন থেকেই তার বাড়িতেই বিয়ের স্বীকৃতির দাবী আদায়ের জন্য অবস্থান করছে।

অন্যদিকে, গত ১৮ জুন বিপ্লব চন্দ্র সিংহ সদর উপজেলার চাপাতি গ্রামে জগদীশ চন্দ্র সরকারের কন্যা মৌসুমী রানীকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে। অগ্নি সাক্ষী রেখে সাত পাকের বন্ধনে বিয়ে করা বধূ মৌসুমীকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। বর্তমানে দুই স্ত্রী একই বাড়িতে অবস্থান করছে।

এদিকে প্রেমিকার আগমণের সংবাদ জানতে পেরে প্রেমিক বিপ্লব চন্দ্র সিংহ ও তার বাবা গা ঢাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রেমিকা দিপিকা রানী জানান, বিপ্লব চন্দ্র সিংহ আমাকে রাষ্ট্রীয় বিধি মোতাবেক বিয়ে করেছে। আমি গত ১৩ দিন যাবৎ এখানেই অবস্থান করছি। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবো। কোন কারণে আমাকে ফিরিয়ে দিলে আমি আত্মহত্যা করে প্রাণ বিসর্জন দিব। দিপিকা অভিযোগ করে বলেন, আমাকে বিপ্লবের পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। কিন্তু এ অভিযোগ জানাবার মাধ্যম একমাত্র মোবাইল ফোনটিও তারা কেড়ে নিয়েছে। কোথাও যোগাযোগ কিংবা কথা বলতে দিচ্ছে না।
 
অপরদিকে প্রেমিক বিপ্লব চন্দ্র সিংহ জানান, দিপিকা রানী ও তার লোকজন কৌশলে ঠাকুরগাঁও শহরে ডেকে নিয়ে তাকে এফিডেভিটমূলে বিয়ে করতে বাধ্য করে। তাদের হুমকির কারণে সে ঘটনাটি প্রকাশ করতে পারেনি। আমি বাসায় না থাকলে কি হবে। তারা তো দু’জনেই ভালই আছেন। রান্না-বান্না হচ্ছে, তারা খাচ্ছেও। কিন্তু মধ্যে পড়েছি আমি ফাঁটা বাঁশের চিপায়। তারা দু’জনেই যদি মিলেমিশে থাকতে চায় আমার সংসার করতে আপত্তি নাই।
 
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যাটার্জী নূপুর প্রেমিকা ও স্ত্রী একই বাড়িতে অবস্থানের কথা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে ওই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবে খুব শিগশিরই বিষয়টি সুরাহা করা হবে।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি (তদন্ত) সিফাতুল ইসলাম জানান, ওই ঘটনায় কোন পক্ষ এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন