আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বন্যা মোকাবেলায় ৩০ জেলায় বিশেষ প্রস্তুতি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১০ ১১:০৪:১৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বন্যার আশঙ্কায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে বন্যা মোকাবেলায় জোর প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জেলা প্রতি নিয়মিত বরাদ্দের পাশাপাশি ২০০ মেট্রিকটন চাল ও দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ পাঠিয়েছে। এছাড়া যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজনে আরো বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে মন্ত্রণালয়।
 
আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র জুলাই মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, উজানে মৌসুমি ভারী বর্ষণের কারণে চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে।
 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সোমবার (০৯ জুলাই) বিকেলে জানিয়েছে, যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি সমতলে স্থিতিশীল রয়েছে। আবার মেঘনা অববাহিকার মনু নদ ছাড়া অন্যান্য প্রধান নদীর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পানি সমতলে হ্রাস পেতে পারে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
 
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র আরো জানায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা নদীর পানি সমতলে হ্রাস আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি সমতলে আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃদ্ধি পেতে পারে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বগুড়া, জামালপুর এবং সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল সোমবার বলেন, উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও রোববার থেকে কমতে শুরু করেছে। উজানে আর বর্ষণ না হলে পানি বাড়বে না।
 
বন্যা মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সচিব বলেন, এরইমধ্যে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আয়োজনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ব্যবহার উপযোগী রাখা এবং জানমালের ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ দুর্যোগ লাঘবে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে ফলোআপ জানাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সচিব শাহ কামাল।
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক ছয় জেলায় অতিরিক্ত জিআর ক্যাশ ও চাল বরাদ্দ দিয়েছি। এছাড়া প্রতিবছর সব জেলার জন্য বরাদ্দ থাকে।
 
সচিব বলেন, বন্যা দুর্গতদের জন্য লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুরে প্রতি জেলায় ২০০ মেট্রিকটন জিআর চাল ও দুই লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত খরচ করলে আমাদের জানালে আবার বরাদ্দ দেওয়া দেবো।
 
গত তিন-চার বছরে আমাদের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে দাবি করে সচিব শাহ কামাল বলেন, আশা করি বন্যা মোকাবেলায় কোন সমস্যা হবে না।
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ বলেন, বন্যা মোকাবেলায় ৩০ জেলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
 
তিনি বলেন, জেলাগুলোতে শুকনো খাবার পৌঁছে গেছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোকে মিটিং করে ফলোআপ জানাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মেডিকেল টিম গঠন করতে বলা হয়েছে।
 
রিয়াজ আহমেদ জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় সাধারণত প্রতি জেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ করে টাকা বরাদ্দ থাকে। বন্যার শঙ্কায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, বগুড়া, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরসহ ৩০ জেলায় বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতি জেলায় ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ বলেন, এবার একটু বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উজানে ভারতে বৃষ্টি হলে এদিকে পানি বাড়ে। তবে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বন্যা মোকাবেলায় যতোটুকু প্রয়োজন ততোটুকু করবে সরকার।
 
মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে বিতরণের জন্য গত মাসে ২৯ জেলায় জিআর ক্যাশ হিসেবে এক কোটি চার লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানায় অধিদফতর।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১০ জুলাই ২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন