আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

গরমে স্বস্তি পেতে চাই সবুজ নগরী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-২০ ০৯:৩৭:২১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: দিন দিন বেড়েই চলেছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। এর প্রভাব যে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় জোরেশোরে পড়ছে, প্রকৃতি তা টের পাইয়ে দিচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে এই বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় সবুজায়ন।

কিন্তু বিপুল জনসংখ্যায় পরিপূর্ণ এ দেশটিতে আবাদযোগ্য জমি যেমন প্রতিনিয়ত কমছে, তেমন চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে কাটা পড়ছে বৃক্ষের মতো উপকারী মানববন্ধুর। শিল্প বিপ্লব প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে গাছের সংখ্যা প্রয়োজনীয় হারে বাড়ছে না বলেই তীব্র তাপমাত্রার যন্ত্রণা বাড়ছে বলেও বিশেষজ্ঞদের।

বিপুল জনগোষ্ঠী ও কম পরিমাণ জমির থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সবুজায়ন করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা ও সময়োপযোগী পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিনিয়ত হাজির হচ্ছেন গবেষকরা। তেমন প্রমাণই মিলেছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলমান বৃক্ষমেলায়।

তাঁবুতে বাগানমেলায় দেখা গেছে কীভাবে খুব সহজে সবুজায়ন করা যায় এই নগরীকে। রাজধানীতে স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে তারা দেখাতে চেয়েছেন কিভাবে অবশিষ্ট জায়গাগুলো ব্যবহার করে গরমের তীব্রতা থেকে শান্তিতে ফিরে আসা যায়। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ফ্যাব ল্যাবের স্টলে গিয়ে দেখা গেছে এসব প্রযুক্তি।

বাস টার্মিনালের ছাদসহ সব খালি জায়গায় গুল্ম জাতীয় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে উষ্ণতা কমিয়ে আনা যায়। প্রশ্ন থেকে যায় ভবনের গায়ে মাটি রাখলে তো ভবনই নষ্ট হয়ে যাবে? তাই মাটির বদলে কোকোডাস্ট (নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি বিশেষ মাটি) ব্যবহার করেছেন বলে জানান ফ্যাব ল্যাবের গবেষণা সহকারী ফারজানা আলম ভূইয়া।

তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মাটির মতোই কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ করে পানির ড্রামের গায়ে ছিদ্র করে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে কোকোডাস্টের সঙ্গে ব্যবহার করা হয় বায়োচার (বিশেষভাবে প্রস্তুত করা কয়লা)। এটি পাইরোলাইসিস প্রক্রিয়ায় মাটিতে কার্বন ধরে রাখে ও উর্বরতা বাড়ায়। সর্বোপরি যা ভবনের কোনো ক্ষতি করে না। এছাড়া আরও আছে বিশেষভাবে তৈরি ভারমি টি (শুকনা গোবর সার)।

ঘরে বাগানফ্যাব ল্যাবের যুগোপযোগী সাফল্য সম্পর্কে তিনি জানান, বাচ্চারা যেভাবে পুতুলের ঘর বানানো নিয়ে খেলে সেভাবে তাদের জন্য রয়েছে গাছঘর। এভাবে তারা বৃক্ষ সচেতন হয়ে গড়ে উঠবে। এছাড়া রয়েছে ড্রইংরুমে রাখা যায় এমন প্লান্টেরিয়াম (সংযুক্ত অ্যাকুরিয়াম ও গাছের টব)। নিচের অংশে অ্যাকুরিয়াম ও তার থেকে মটরের মাধ্যমে পানি পৌঁছে যাবে উপরের টবের মতো জায়গায়। অ্যাকুরিয়ামে প্রায় ৫টি তেলাপিয়া মাছ ও টবে পুদিনা পাতা, মরিচ, ধনে পাতার মতো গাছ চাষ করা যাবে পরিবারের চাহিদা মেটাতে।

আবার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের জন্য আদর্শ হিসেবে তাঁবুর গায়ে গাছ লাগানোর পদ্ধতিও দেখানো হয়েছে। সবক্ষেত্রেই মাটির স্থলে ব্যবহার করা হচ্ছে কোকোডাস্ট। ৫ কেজি কোকোডাস্ট তৈরি করতে খরচ হয় ৫০০ টাকা।

সবুজায়ন ছাড়াও পরিবেশ উপযোগী সোলার প্যানেলেরও সমাহার দেখা গেছে মেলায়। এনগ্রিন লিমিটেডের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, সোলার প্যানলের মাধ্যমে সেচ পদ্ধতি, চরাঞ্চলে একইভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের টাওয়ারের বিদ্যুৎ সাপ্লাই, রাস্তায় স্পিড ব্রেকারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া। এনগ্রিন কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, শিগগিরই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ও প্রথম ৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়া স্পিড ব্রেকারে গাড়ি ব্রেক ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদ্ধতিও দেখিয়েছি আমরা।

এছাড়া পরিবেশের ক্ষতিকারক প্লাস্টিক দিয়ে বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিসপত্রের সমাহার ও আদর্শ গ্রিন সিটির মডেলও (যেখানে সবুজায়নকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে) নিয়ে হাজির হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড সোশ্যাল ক্লাব।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ জুলাই ২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন