আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বিএনপির কাছে সেই প্রশ্নের উত্তর চান ওবায়দুল কাদের

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৯-১৭ ১৪:৩৭:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস :: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, আমি বার বার একই প্রশ্ন করছি বিএনপির নেতৃত্বের কাছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত। সেই খুনিদের বিচারের পথ বন্ধ করতে কেন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। কেন এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে বাংলাদেশের লাখো শহীদের রক্তের আখরে রচিত সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে। এই প্রশ্নের জবাব বিএনপি আজও দেয়নি। আমি আবারো সেই প্রশ্নের জবাব চাচ্ছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অনলাইন সাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশের একজন জেনারেল জিয়াউর রহমান, মেজর ডালিমের সঙ্গে দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য করেছিল ‘ওয়েল ডান, মেজর ডালিম; কনগ্রাচ্যুলেশন।’ তার অর্থটা কি? এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে তিনিও আছেন।

তিনি বলেন, যে খুনিদের আজকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কূটনৈতিক প্রয়াস নিয়েছি, এমনকি মামলা পর্যন্ত করতে হচ্ছে সেই খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কে? জিয়াউর রহমান। এই খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন কে? জিয়াউর রহমান। এই খুনিদের বিচার হবে না এই মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন কে? জিয়াউর রহমান? এবং এই খুনিদের বিচার কাজ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে পঞ্চম সংশোধনীতে আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন কে? জিয়াউর রহমান।

আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কাজ শেষ হয়েছে এবং হত্যাকারীদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে আমার জানা মতে ছয়জন খুনি বিদেশে আছেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন খুনি রাশেদ চৌধুরী, তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আমাদের আলাপ আলোচনা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারও আমাদের সহযোগিতা করছে। সেখানে একটা মামলা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। তেমনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পিটিশন দেয়ার লক্ষ্যে এখানে সাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচির উদ্বোধন হলো।

তিনি আরো বলেন, নূর চৌধুরীর ব্যাপারে কানাডার একটি আইন আছে, সেটা হলো কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান সেদেশের আইনে নেই। এই কারণে আইনটিকে শিথিল করে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কানাডায় একটি মামলাও বাংলাদেশ সরকার করেছে এবং সেখানে আলাপ আলোচনা অব্যাহত আছে।

সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব ৭১, কানাডা আওয়ামী লীগ অল ওভারসিস বাংলাদেশি, মুভমেন্ট ফর ডিপারটেশন অব কিলার নূর চৌধুরী টু বাংলাদেশ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, গৌরব ৭১’এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি, সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন, বিবার্তা২৪ ডটনেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি প্রমুখ।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিক। দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

দীর্ঘদিন বিচার বন্ধের পর শুরু আইনি প্রক্রিয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে ২০১০ সালে। বাকিদের একজন মারা গেছেন এবং ছয়জন পলাতক আছেন।

পলাতকরা হলেন- আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮/কেআরএস/এসডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন