আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

আমার গ্রাম আমার শহর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-১৮ ২০:১৯:১৮

টানা দশ বছর সাফল্যের সাথে দেশ পরিচালনা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের উন্নয়নহীনতার দিনগুলোকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সুষম উন্নয়নে একের পর এক মাইলফলক স্পর্শ করে বহিঃবিশ্বে প্রিয় স্বদেশ আজ মর্যাদার আসনে।
১৯৯৬-২০০১ মেয়াদেও যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটায় আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু গভীর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে এক অন্ধকার সময়ে নিয়ে যায়। থেমে যায় সকল উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। মুখ থুবড়ে পড়ে অর্থনীতির। গ্রাম হয় তুমুল বৈষম্যের শিকার। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে সার, বিদ্যুৎ যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়। সার ও বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে চালানো হয় গুলি, ঝরে যায় ৩৮টি তাজা প্রাণ।

বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত লুটপাতে গ্রামবাংলা রূপ নেয় দুর্ভিক্ষ কবলিত অঞ্চলে। উত্তরবঙ্গে মঙ্গায় মানুষের মৃত্যু হতে থাকে। জনসাধারণ খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানের মতো মৌলিক অধিকার থেকেও হয় বঞ্চিত।

কেবল গ্রামই নয়, শহরেও বিরাজ করে উন্নয়নহীনতা ও নাগরিক সুযোগ সুবিধার অভাব। পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে জনগণের রাস্তায় নেমে আসার দৃশ্য ভুলার নয়। ২০০৪ সালে তৎকালীন ঢাকা-৪ আসনের বিএনপি দলীয় সাংসদ সালাউদ্দিন আহমেদকে ধাওয়া দেয় জনতা।  সাধারণ জনগণের ধাওয়ায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৌড় দিয়ে পালান তিনি। এরপর থেকে তিনি পরিচিতি পান দৌড় সালাউদ্দিন নামে।

নাগরিক ভোগান্তি আর সরকার দলীয় এমপির ধাওয়া খাওয়ার সেসব দিন এখন অতীত। উন্নয়নকামী জনগণ বরং আওয়ামী লীগের সাংসদদের ফুল দিয়ে বরণ করছেন বারবার।

শহরের পাশাপাশি গ্রামেও হয়েছে সুষম উন্নয়ন। নাগরিক সুবিধাগুলো এখন হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ আজ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। কৃষকের কাছে বিনামূল্যে চলে যাচ্ছে সার, বীজ। সারা বাংলাদেশ আজ মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায়। ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও পাচ্ছেন আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা। মফস্বল শহর কিংবা নিভৃত পল্লীর তরুণ-তরুণীরাও ফ্রীল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে উপার্জন করছেন বৈদেশিক মুদ্রা, হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী বিপ্লব।  আর এর সবই সম্ভব হয়েছে গণমুখী আওয়ামী লীগ সরকারের সুবাদে।

এ স্বপ্নযাত্রায় এগিয়ে যেতে হবে আরও অনেকটা পথ। আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গ্রামকে শহরে রূপান্তর করতে চায় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি।

‘আমার গ্রাম আমার শহর’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তাদের ইশতেহারে বলছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরই গ্রামকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কেন্দ্রীয় দর্শন হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। স্বাধীন দেশে জাতির পিতা সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে অঙ্গিকার যুক্ত করেছিলেন। বর্তমান সরকার প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে।

লক্ষ্য ও পরিকল্পনা
উন্নত রাস্তাঘাট, যোগাযোগ, সুপেয় পানি, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা ও সুচিকিৎসা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কম্পিউটার ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ মানসম্পন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামকে আধুনিক শহরের সকল সুবিধাদি দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গ্রামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ আরও বাড়ানো ও নির্ভরযোগ্য করার লক্ষ্যে গ্রুপভিত্তিতে বায়োগ্যাস প্লান্ট ও সৌরশক্তি প্যানেল বসানোর উৎসাহ ও সহায়তা দেয়া হবে।

গ্রাম পর্যায়ে কৃষিযন্ত্র সেবা কেন্দ্র, ওয়ার্কশপ স্থাপন করে যন্ত্রপাতি মেরামতসহ গ্রামীণ যান্ত্রিকায়ন সেবা সম্প্রসারণ করা হবে এবং এসবের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান করা হবে। কৃষি খাতের এসব সেবার পাশাপাশি হাল্কা যন্ত্রপাতি তৈরি ও বাজারজাত করতে বেসরকারি খাতের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।

বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারেন, শেখ হাসিনাই পারবেন। উন্নয়ন আর শেখ হাসিনা একে অপরের সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে বহু আগেই। তাই, গ্রামে সুষম উন্নয়নের রূপকার শেখ হাসিনার দলের ইশতেহারেই বাংলাদেশে আস্থা রাখে। জয়তু শেখ হাসিনা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন