আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

এবার ট্রেন যাবে সমূদ্রকন্যা কক্সবাজারে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১১ ১১:৩৮:৩৮

বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ট্রেনে চেপে সৈকত দেখবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এরই মধ্যে । ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনদুম রেললাইন বসানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের প্রায় ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে।

১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া; কক্সবাজারের চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাহ, রামু, সদর ও উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম স্টেশন নির্মাণকাজও শুরু হচ্ছে। কিন্তু রামুতে নতুন সেনানিবাস হওয়ায় রামু-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণকাজ আপাতত থেমে গেছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটন খাতের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি বাস্তবায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এ প্রকল্পে অর্থের জোগান দিচ্ছে।

গত বছর জুলাইয়ে চীনের বৃহত্তম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও দেশীয় তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানি যৌথভাবে এ কাজ শুরু করে।

প্রকল্পের কাজ ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা আছে। সেই অনুযায়ী ২০২২ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে জমি অধিগ্রহণপ্রক্রিয়া দেরি হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় আছে।

রেলের প্রকৌশলীরা জানান, প্রকল্পের আওতাধীন চারটি বড় সেতুসহ ২৫টি সেতুর নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। বড় সেতুগুলো নির্মিত হচ্ছে মাতামুহুরী নদী, মাতামুহুরী শাখানদী, খরস্রোতা শঙ্খ এবং বাঁকখালী নদীর ওপর।

তারা জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় রেললাইনের স্থান চিহ্নিত করে রেলপথ তৈরির জন্য মাটি ভরাটের কাজ বেশ এগিয়েছে। রাত–দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হলে মূল রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে।

এরই মধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চন্দনাইশে ১০ একর, সাতকানিয়ায় ১৭৬ একর, লোহাগাড়ায় ১৭৭ একর, চকরিয়ায় ৫১৪ একর, কক্সবাজার সদরে ২১০ একর ও রামুতে ২৭৯ একরসহ মোট ১ হাজার ৩৬৬ একরের মধ্যে বন বিভাগের ১৬৫ একর ছাড়া বাকি সব জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

এটি বাস্তবায়িত হলে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হবে। ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কের আওতায় এই রেলপথ সিঙ্গাপুর, চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও কোরিয়া হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হবে। পর্যটনশিল্পের বিকাশের পাশাপাশি বিস্তৃত হবে ব্যবসা বাণিজ্যও।

সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন