Sylhet View 24 PRINT

২৬০২০ পিস ইয়াবাসহ আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সদস্য আটক

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৮-১৯ ১৩:০৯:৫৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: একটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাকারবারি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা ইয়াবা কৌশলে আকাশপথে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করেছে- এমন একটি বিশেষ গোয়েন্দা তথ্য আসে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১ এর কাছে। র‌্যাব ১ এর অনুসন্ধানী দল উক্ত চক্রের কতিপয় সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদকের একটি বড় চালান ঢাকা থেকে দুবাইয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এর প্রেক্ষিতে মাদক চোরাকারবারি চক্রটিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র‌্যাব ১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং তাদের গতিবিধি অনুসরণ করতে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৮ আগস্ট রাত অনুমানিক সাড়ে ৮টায় র‌্যাব ১ এর একটি চৌকস  আভিযানিক দল রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৩ নম্বর সেক্টরের রবিন্দ্র সরণির ১৫ নম্বর রোডের একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাকারবারি চক্রের সক্রিয় সদস্য মো. নাসির উদ্দিন সরকার (৩৫)-কে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার নিকট রক্ষিত আচারের ২টি বয়াম থেকে ২৬০২০ পিস ইয়াবা ও ১টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাসির উদ্দিন সরকার আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে। দুবাইয়ের আবুধাবিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের জনৈক সোহেল এই চক্রের মূল হোতা। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার কুমিল্লা দক্ষিণ সদর থানায়। সে দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সাথে জড়িত। বাংলাদেশে তার নিয়ন্ত্রণে উক্ত মাদক সিন্ডিকেটে ১৫-২০ জন যুক্ত রয়েছে। এই সিন্ডিকেট দেশের অভ্যন্তরেও মাদক কারবারে যুক্ত রয়েছে বলে জানা যায়।

মাদকের সিন্ডিকেটে যুক্ত হবার প্রক্রিয়া সম্পর্কে গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাসির উদ্দিন সরকার জানায়, সে ২০০৮ সালে ৩ বছর মেয়াদি ভিসা নিয়ে দুবাই যায়। সেখানে আবুধাবির মোসাম্বা শহরে বহুতল ভবনের জন্য এসি তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে এসি ডাক্টিং ম্যান হিসেবে কাজ করে। সোহেলের সাথে সেখানে তার পরিচয় হয়। সোহেল উক্ত প্রতিষ্ঠানে ফেব্রিকেটর হিসেবে কর্মরত ছিল। পরবর্তীতে কম্পানিটি বন্ধ হয়ে গেলে ২০০৯ সালের শেষের দিকে নাসির দেশে ফিরে আসে। দেশে ফেরার পর সে একটি মোবাইলের দোকান দেয় কিন্তু সেখানে লোকসান হওয়ায় সে ড্রেজার মেশিনে চুক্তিভিত্তিক মাটি কাটার কাজ শুরু করে। দেশে ফেরার পর মাঝে মাঝে সোহেলের সাথে তার কথা হতো। একপর্যায়ে সোহেল তাকে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মাদক কারবারের কথা বললে সে তার কথায় রাজি হয়। সে স্বল্প সময়ে অধিক উপার্জনের আশায় সোহেলের কথামতো তার মাদক চোরাকারবারি সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। এ পর্যন্ত সে এই সিন্ডিকেটের হয়ে ২০-২৫টির মতো মাদকের বড় চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবারহ করেছে বলে জানায়।

সে আরো জানায় যে, এই চক্রের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করায় সোহেল তাকে মাদকের একটি চালান নিয়ে দুবাইয়ে তার কাছে যেতে বলে। এতে তাকে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানের প্রলোভন দেখানো হয় এবং দুবাই গমনের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ও টিকিট বুকিংসহ সকল কাজ সেহেলের লোক করে দেয়। এ ছাড়াও তাকে অগ্রীম ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। বিমানবন্দরে চেকিং এর সময় যাতে মাদকের উপস্থিতি বোঝা না যায় সে জন্য একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয়। সে সোহেলের নির্দেশে ইয়াবাগুলো প্রথমে কার্বন পেপারে মুড়িয়ে নেয় এরপর তার ওপর কলো স্কচ টেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ২টি আচার ভর্তি বয়ামের ভেতর নেয়। এই প্রক্রিয়ায় বর্ণিত সিন্ডিকেটের সদস্যরা এই পর্যন্ত অসংখ্যা মাদকের চালান আকাশপথে দেশের বাহিরে নিয়ে গেছে বলে আসামি জানায়।

ধৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে এই চক্রের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম প্রকাশ পেয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যহত আছে। উপরি-উক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ আগস্ট ২০১৯/মিআচ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.