Sylhet View 24 PRINT

পাপিয়ার যৌনবাণিজ্যে ১২ রুশ সুন্দরী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২৬ ২২:০০:০৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: সদ্য বহিষ্কৃত নরসিংদী যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউকাণ্ডে তোলপাড় সারাদেশ। বেরিয়ে আসছে অনেক রথী-মহারথীর নাম। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনের দেয়া তথ্য, একাধিক মোবাইল ফোনের কললিস্ট, কলরেকর্ড, ভিডিও ক্লিপস ও ছবির সূত্রে শত শত নারী-পুরুষের সম্পৃক্ততার হদিস মিলেছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একের পর এক পাপিয়ার ছবি আর ভিডিও।

রাজনীতির আড়ালে করতেন দেহ ব্যবসা। বিভিন্ন সুবিধা আদায়ে অনেক নেতাই তরুণীর যোগান দিতে যুব মহিলালীগের সাবেক নেত্রী পাপিয়ার সহায়তা চাইতেন। ওই নেতাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অনেক ছবিই পাপিয়া কৌশলে তুলে রেখেছেন। ওইসব ছবি দিয়েই ব্ল্যাকমেইল করতেন পাপিয়া। ওইসব ছবি ব্যবহার করে সমাজের উঁচু স্তরের লোকদের ব্ল্যাকমেইল করা ছাড়াও বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ বাণিজ্য করতেন পাপিয়া।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, পাপিয়ার উত্থানের পেছনে কাদের ভূমিকা ছিল, কারা পাপিয়া গংদের কাছ থেকে নিয়মিত সুবিধা নিতেন, তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

রাজনীতিতে উত্থানের নিয়ামক হিসেবে দুজন প্রভাবশালী নেত্রীর নাম বলেছেন পাপিয়া, জানালেন ওই কর্মকর্তা।

পরে তারাও নিয়মিত পাপিয়ার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তাদের একজন আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক এমপি। পাপিয়ার সঙ্গে তার গাড়ির ব্যবসাও রয়েছে।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনে পাপিয়া বলেছেন, বিভিন্ন সুবিধা আদায়ের জন্য অনেক নেতাই তরুণীর জোগান দিতে পাপিয়ার সহায়তা চাইতেন। ভিআইপিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে ১২ রুশ তরুণীকে ব্যবহার করতেন যুব মহিলালীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া।

সূত্রে আরও জানা গেছে, এক শীর্ষ কর্মকর্তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওয়েস্টিনে। নিয়মিত সকালের নাশতা ও মধ্য রাত পর্যন্ত তিনি থাকতেন ওয়েস্টিনে। পাপিয়া বেশ কিছু দিন আগে রাশিয়া থেকে ১২ নারীকে ঢাকায় এনেছিলেন। যাদের বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হয়। কিন্তু ওই শীর্ষ কর্মকর্তা তাদের ছেড়ে দেন।

এই ১২ রুশ তরুণী ছিল পাপিয়ার প্রধান টোপ। এদের পাঠানো হত ভিআইপিদের কাছে। ভিআইপিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে ১২ রুশ তরুণীকে ব্যবহার করতেন পাপিয়া। তাদের মূল ব্যবসা ছিল উঠতি শিল্পপতি-ব্যবসায়ীসহ সমাজের উঁচুস্তরের লোকদের ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়।

পাপিয়াকে উদ্ধৃত করে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশেষ ক্যামেরা দিয়ে ভিআইপিদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখা হত। পরবর্তী সময়ে সেই ফুটেজ ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হত মোটা অংকের টাকা।

এসব কাজে স্বামী সুমন চৌধুরী পাপিয়াকে সহায়তা করতেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘনিষ্ঠ অনেক ভিআইপির নামও প্রকাশ করেছেন এই দম্পতি। আর এসব তথ্য পেয়ে বিব্রত হচ্ছেন তারা।

কারা তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, বিভিন্ন কমিটিতে বড় পদ পাইয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছেন এবং কারাই বা তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন- সব তথ্যই এখন তদন্ত কর্মকর্তাদের হাতে।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাপিয়ার অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুদক পাপিয়া-সুমন দম্পতির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজ নিতে রাজস্ব বোর্ডকে খুব শিগগিরই চিঠি দেবে বলে জানা গেছে। এই দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্যও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেবে দুদক।

দুদক বলছে, পাপিয়া থেকে সুবিধা নেয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের তালিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তালিকা পাওয়ার পর তাদেরও নজরদারির আওতায় আনা হবে। এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলাম ধর্মের অনুসারী হলেও পাপিয়া নিয়মিত কালীমন্দিরে যেতেন।

তিনি শিব লিঙ্গেরও পূজা করতেন। পাপিয়ার এক হাতে পবিত্র কাবা শরিফের এবং অন্য হাতে মন্দিরের ছবি আঁকা রয়েছে। এটি অকপটে স্বীকারও করেছেন পাপিয়া।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, আইনগত বাধা এড়াতে মামলাটির তদন্ত হাতে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদ করে পাপিয়ার কাছ থেকে আমরা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।

আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছি।

সৌজন্যে : পূর্বপশ্চিম
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০/জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.