Sylhet View 24 PRINT

৭৫ এর হত্যাকাণ্ড, ৭১ এর পরাজয়ের প্রতিশোধ: আব্দুর রহমান

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৯-২৭ ২১:০২:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস :: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা আজ মা হারা, বাবা হারা, তিনি ভাই হারা। তিনি শুধু মাত্র একটি ছোট বোনকে নিয়ে সেই ১৯৭৫ সালের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য নিয়ে তিনি বেঁচে ছিলেন। ১৯৭৫ সালে যে হত্যাকাণ্ড ঘটনো হয়েছিল, সেটা কেবল মাত্র বঙ্গবন্ধু বা তার পরিবারকে হত্যা করার জন্য ছিল না, সেই হত্যাকান্ড ছিল একেবারেই সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিয়েই। সেই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল তারা।

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত চিত্র প্রদর্শনীর তৃতীয় দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছিল। এছাড়া বাংলাদেশের দেহ থেকে প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমাদের চেতনা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে সেই দিন জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেইদিন প্রতিবাদ করার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না। সেই দিন অন্ধকার ছিল। কিন্তু ১৯৮১ সালে শত বাঁধা উপেক্ষা করে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। সেই দিন বিমানবন্দরে লক্ষ লক্ষ মানুস স্লোগান দিয়েছিল। সেই দিন শেখ মুজিবের বেশে শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। তিনি দেশে আসার পর ২১ বার তার জীবনের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব আক্রমণ ও বিএনপি জামায়াতের যড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই বাংলাদেশকে পৃথীবির কাছে তুলে ধরেছেন। তাই আজ সারা বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব অনুসরণীয়। শেখ হাসিনা মানেই গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়নের বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা মানেই হল জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ।

গৌরব ৭১ আয়োজিত ‘প্রজন্মের প্রার্থনা, শতায়ু হোক শেখ হাসিনা’ স্লোগানে আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ৭৪টি ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে। ওই ছবিগুলোতে জননেত্রী শেখ হাসিনার খন্ড খন্ড চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তবে এমন কিছু ছবি এখানে তুলে ধরা হয়েছে; যেগুলো আগে কখনো জনসম্মূখে আসেনি। এই ছবিগুতোতে শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবন ও তাঁর পারিবারিক জীবনের দৃশ্য ফুটে উঠেছে।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্র নায়ক বা রাজনৈতিক নেতাই নন, তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে আর্শিবাদ এবং বাঙ্গালি জাতির কাছে তিনি বাতি ঘর।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে ‌অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আগামী ১০০ বছরের দেশ কোথায় যাবে, সেই পরিকল্পনাও শেখ হাসিনার মাথায় রয়েছে।

শেখ হাসিনা একজন সফল মা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, তার দুই সন্তান দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বের কাছে তাদের যোগ্যতার কথা জানান দিয়েছেন। করোনাকালেও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এ দেশের উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশে লোকচক্ষুর আড়ালে অনেক মেগা প্রকল্প চলমান। এছাড়াও তরুণ প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোগ তৈরীর কাজও করছেন।

তিনি বলেন, বার বার শেখ হাসিনার উপর হামলা হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনো সাহস হারাননি। উনার (শেখ হাসিনার) ভরসার জয়গা হলো আওয়ামী লীগ ও এ দেশের জনগণ। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাগুলো সবাই নিজেরা নিজের জায়গা থেকে বাস্তবায়ন করার আহবান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান বলেন, নারীর মুক্তির জন্য যদি কেউ সত্যিকারে কাজ করে থাকেন তিনি শেখ হাসিনা। তিনি এই শিক্ষা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার থেকেই পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অন্ধকারে রেখে কখনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। তিনি সেই ছাপ তৃনমুলের নারী থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদে রেখছিলেন। সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৩৫ থেকে ৫০ এ উন্নীত করা তারই অবদান। নারী পুরুষ যে হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে, নারীর সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক মুক্তির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ শেখ হাসিনার প্রতি। তিনি বিশ্বাস করেন আমাদের বাজেট যদি জেন্ডার সংবেদনশীল না হয় তবে দেশের ঊন্নতি সম্ভব না। আজকে দেশের সকল সেক্টরে নারী পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে কেবল তারই দুরদর্শী পরিকল্পনার কারনেই। নারী শিশু মৃত্যহার রোধ করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যাোগটি দেশে বিদেশে সমানভাবে সমাদৃত। দক্ষিন এশিয়ার যেকোন দেশের চেয়ে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেকাংশেই এগিয়ে।

সাবেক ছাত্রনেতা শাহিনুর রহমান টুটুল বলেন, ১৯৪৭ সালে আমার নেত্রী যখন জন্মগ্রহন করেন তখন পিতা মুজিব ছিলেন জেলে, নিপীড়ন জেল জুলুম ছিল তার নিত্য দিনের সঙ্গী। পিতার মতই মক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির কাছে অত্যাচারিত হয়ে নেত্রী উঠে এসেছেন বাংঙালী জাতির মুক্তির শপথ নিয়ে। নিষ্পেষিত মানুষের ত্রানকর্তা হিসেবে তিনি আর্বিভূত হয়েছিলেন, সেই সংগ্রাম তিনি এখনো অব্যাহত রেখেছন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। জাতির কষ্ট বেদনা কাছ থেকে উপলব্দি করেছেন। ৭৫ এর ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চেয়েছিল, ৮১ তে নেত্রী দেশে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে জাতির মনে সাহস সঞ্চার করেছিলেন। সেই থেকে তিনি বাঙালীর রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, স্বৈরশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, ২১ বার মৃত্যুমুখে পতিত হয়েও দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন।

সাবেক ছাত্রনেতা সুজাতুর রহমান সুজাত বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় থাকা প্রধানমন্ত্রী। তার আজকের এই অবস্থান একদিনের নয়, অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে এখনো তিনি দেশের হাল শক্ত হাতে ধরে রেখেছিলেন। ২০০৮ এ তিনি বলেছিলেন "আমরা পরিবর্তনে বিশ্বাস করি "। তারই ধারাবাহিকতায় দেশ পরিবর্তন ও সংস্কারের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি আমরা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করলে, আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় রাখলে এদেশের উন্নতি কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।

এর আগে রবিবার দুপুরে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেনবাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মারুফা আক্তার পপি, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ইলিয়াস শরীফ এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০/ কেআরএস/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.