Sylhet View 24 PRINT

গণধর্ষণের শিকার মেয়েকে ফেরত দিতে মাকেও শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০২-২৬ ২১:৩৬:৪০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১৭) অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার গণধর্ষণের পর অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গত দুই মাস ধরে ভুক্তভোগী নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে অপহৃতাকে ফিরিয়ে দিতে তার মাকেও অপরাধীরা অবৈধ প্রস্তাব দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ তোলা হয়েছে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে হীরাপুর গ্রামের কাজী বাড়ির কাজী সিরাজের ছেলে ফয়সাল (২২), একই গ্রামের বেছার বাড়ির লেলন মিয়ার ছেলে জোবায়ের (২৩), পাটোয়ারী বাড়ির নূর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম ইমন (২৩) ও ছোট সোনাইমুড়ী পালের বাড়ির কামাল হোসেনের ছেলে রাসেলের (২৬) বিরুদ্ধে।

তাদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ, ধর্ষণ-অপহরণের পাশাপাশি তারা নির্যাতিতাদের ঘর থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা লুট ও বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে চাঁদাবাজি করেছে। এসব ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষণের শিকার অপহৃত মাদ্রাসাছাত্রীর মা।

মামলার বাদী বলেন, ‘আমার মেয়ে ২০১৮ সালে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় ফয়সাল, জোবায়ের, ইমন ও রাসেল উত্যক্ত করতো। বিষয়টি জানার পর আমি ঘটনাটি ওই ছেলেগুলোর পরিবার, ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ও মেম্বার আবদুল কাদেরকে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ কৌশলে আমার ঘরে ঢুকে ফয়সাল ও জোবায়ের কোমল পানীয়র সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাখে। রাতে সেই পানীয় খাওয়ার পর আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে রাত ২টার দিকে ফয়সাল ও জোবায়ের ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে। ওই রাতে তারা স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার ঘরে এনে তাকেও বিবস্ত্র করে আমার মেয়ের সাথে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।’

ভুক্তভোগীর মা আরো বলেন, ‘ঘর থেকে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা আমার আলমারি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের চেন ও দুটি আংটি নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর নিজের সম্মান রক্ষার্থে লক্ষ্মীপুরে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই। আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসলে গত বছরের ৫ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে ইমন ও রাসেল ঘরে ঢুকে আমার মুখে রুমাল চেপে ধরে অচেতন করে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার তিন মাস পর রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার মিরপুর-২, ৭ নম্বর রোডের ৩ নম্বর গলির জান্নাত নামে এক নারীর কাছ থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে আসি। ওই তিন মাসেও তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে রাসেল।’

মামলার বাদি আরো বলেন, ‘গত বছরের ২০ জুন রাসেল ও ইমন বাড়িতে হামলা চালিয়ে ফের আমার মেয়েকে ঢাকায় জান্নাতের কাছে নিয়ে গেলে পরে লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। এরপর বিভিন্ন সময় ইমন আমার বাড়িতে এসে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার মেয়েকে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমার মেয়েকে আবারও অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমি মেয়ের সন্ধান চেয়ে ইমনকে জিজ্ঞেস করলে সে তাকে ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি ইমনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজ (শুক্রবার) পর্যন্ত আমার মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। বর্তমানে আমার মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাকে প্রতিদিন হুমকি দিচ্ছে, তারা মেয়েকে মেরে ফেলবে। এভাবে হুমকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমার ছেলে বিদেশ থাকে। দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলিনি আমি।’

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার বলেন, ‘ঘটনায় নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বক ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’



সিলেটভিউ২৪ডটকম/পূর্বপশ্চিমবিডি /জিএসি-২৩

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.