Sylhet View 24 PRINT

নুসরাতের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী: ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১০ ২০:৪৩:০৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: আজ ১০ এপ্রিল দেশব্যাপী আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদে নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। ১০ এপ্রিল ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে এ ঘটনা নিয়ে সমালোচনা ওঠে। একমাত্র বোনের চলে যাওয়ার দিনে ছোট ভাই রায়হান ফেসবুকে বোনের স্মৃতিচারণা করেছেন, সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন ফেসবুকে।

রায়হান লিখেছেন:


আজ ১০ এপ্রিল।

আমার প্রিয় বোন হারানোর দুই বছর। ঝড়ের বেগে যে উল্কাপিণ্ডের মতো আঘাত আমাদের পরিবারকে ক্ষতবিক্ষত করেছিল, সেই ক্ষত, সেই আঘাত এতোটুকুও শুকাইনি। এখনো দগদগে। বোনের স্মৃতি, আর্তচিৎকার আজও আমার কানে বেজে বেজে উঠে। শিউরে উঠে দেহের শিরা উপ-শিরা।

কাজের মাঝেও চলে আসে ক্লান্তি। চারদিক যেন নিরব-নিস্তব্ধ ও অন্ধকার হয়ে আসে। অশ্রুহীন চোখে কান্নার শক্তিও যেন আজ আমরা হারিয়ে ফেলেছি।

অসহায়ের মতো সেদিন কেবলই চেয়ে ছিলাম পারওয়ারদিগারের ফায়সালার দিকে। দুনিয়ার সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে আজকের দিনটিতে আপু না ফেরার দেশে চলে গেলেন। সেই যাওয়ার আজ দুই দুই বছর ফেরিয়েছে। কিন্তু আমাদের পরিবার বোনের উপস্থিতি ক্ষণিকের জন্যও আমরা ভুলে থাকতে পারিনি। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে আমাদের প্রতিনিয়ত।

হারানোর এই ব্যথা স্রষ্টা বিনে বোঝার সাধ্যও কারো নেই। অনুভূতিহীন সব ব্যথার নাম আমাদের কান্না, হৃদয়ের রক্ষক্ষরণ।

ভাই-বোনের সম্পর্ক বোধহয় এমনি!

যেদিন আপু আগুনে পুড়ে হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছিলো, সেদিন মনে হয়েছিলো তার কষ্টের সবটুকু আমি ধারণ করি। নিজের সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে বলেছিলাম কেঁদো না, তোমার ভাইতো পাশেই আছে।

হুম!

পাশেই থাকবো। যতদিন না সে-সব নরপিশাচ কুলাঙ্গারেরা আপন পাপের হিসেব শেষে ফাঁসির মঞ্চে দাড়াঁবেন, ততেদিন ভাই হিসেবে আমি-আমরা পাশেই থাকবোই।

২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। ঘটনার পরপর বাংলাদেশসহ বিশ্ববিবেককে চরম ভাবে আহত করেছিলো এই নৃশংস ঘটনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত কাছ থেকে আমাদের ও পরিবারের খোঁজ রাখছেন। পাশেই আছেন আমাদের। যার জন্যে আমরা কৃতজ্ঞ।

সাথে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ছাত্রসংগঠন শুরু থেকেই সোচ্চার ছিলেন। যাতে আমাদের ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা-প্রত্যাশা আরো অনেক বেড়েছে। আমার পরিবার কোনদিন আপনাদের এই ঋণ ভুলবে না। আপনাদের এই ঋণ শোধ করবার ও নয়।

আমরা আহ্বান করবো, মহামান্য আদালত  খুনিদেরকে যে সর্বোচ্চ রায় দিয়েছে আশা করি উচ্চ আদালতও খুনিদের সর্বোচ্চ রায় বহাল রাখবে এবং অনতিবিলম্বে আমার বোনের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ সৃষ্টি করবেন।

যাতে করে আমার বোনের মতো আর কোন নুসরাতকে এমন নৃশংস খুনের শিকার হতে না হয়। এটাই আমাদের এবং সকলের একমাত্র চাওয়া, একমাত্র দাবিও। সবশেষে মহান আল্লাহর নিকট আকুল আবেদন, হে আল্লাহ আমার বোনকে পরপারে শহীদের মর্যাদা দিয়ে তোমার জান্নাতের মেহমান করে নিও। আমাদের পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দিন।

আমিন।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)



সিলেটভিউ২৪ডটকম/ বিডি-প্রতিদিন / জিএসি-০৯

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.