Sylhet View 24 PRINT

মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট, ‘মুভমেন্ট পাস’ না থাকলে বাসায় ফেরত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১৪ ১৪:৪৭:৫৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। এ ৯ দিনে জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে রাজপথে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধে দেখা যাচ্ছে গত সপ্তাহের বিপরীত চিত্র। রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের চেকপোস্ট। এই চেকপোস্ট অতিক্রম করে কেউ যেতে পারছেন না। সবাইকে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পার হতে হচ্ছে। এদিন মুভমেন্ট পাস ছাড়া কাউকে চেকপোস্ট অতিক্রম করতে দেখা যায়নি।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

রাজধানীর সড়কে খুব কম মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। দেখা যায়নি গণপরিবহন। চলছে অল্প কিছু ব্যক্তিগত যানবাহন। গতবার সড়কে চোখে পড়ার মতো রিকশা চলাচল করতে দেখা গেলেও এবারের চিত্র ভিন্ন।

এদিন সকালে দেখা গেছে, নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ঘরের বাইরে থাকা নাগরিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনুমপ বলেন, আজ সকাল থেকেই আমাদের চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। রাস্তায় যারা বের হয়েছে তাদের মুভমেন্ট পাস আছে কিনা চেক করা হচ্ছে। যারা মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হচ্ছেন না তাদেরকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন হওয়ায় কেউ কেউ মুভমেন্ট পাস না নিয়েই বের হয়েছেন। জরুরি কাজে যেমন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যারা বের হয়েছেন তাদেরকে যেতে দেয়া হচ্ছে, তবে প্রথমদিন বলে এতটুকু ছাড় দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এ ছাড় দেয়া হবে না।

রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এস এম শামীম বলেন, জনগণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে পুলিশ রাজপথে কাজ শুরু করেছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্ট এলেই তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে এবং মুভমেন্ট পাস আছে কিনা চেক করা হচ্ছে। মুভমেন্ট পাস না থাকলে অনেকেকই আটকে দেয়া হচ্ছে।

যেভাবে পাওয়া যাবে মুভমেন্ট পাস-

জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচলের জন্য ১৪টি শ্রেণিতে মুভমেন্ট পাস দেবে পুলিশ। মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচা বাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, পাইকারি বা খুচরা ক্রয়, পর্যটন, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসা ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে এই মুভমেন্ট পাস।

movementpass.police.gov.bd এ ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাস সংগ্রহ করতে পারবেন যে কেউ। তবে প্রতিটি পাস একবারই ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ যাওয়া-আসার জন্য আলাদা আলাদা পাস সংগ্রহ করতে হবে।

যার জন্য পাসটি দরকার সেই ব্যক্তির নাম, মোবাইল ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স, যে স্থানে যাচ্ছেন সে জায়গার নাম, যেখান থেকে যাবেন সেই স্থানের নাম ও যাত্রার কারণ ইত্যাদি তথ্য পূরণ করে উল্লেখিত লিংকে আবেদনের পর পুলিশ অনলাইনে কিউআর কোড স্ক্যানারসহ একটি পাস ইস্যু করবে। এই কোডটি স্ক্যান করেই চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা আবেদনকারীর তথ্য ও যাত্রার কারণ নিশ্চিত করবেন।

পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ছয় লাখ নাগরিক বাইরে চলাফেরার অনুমতি চেয়ে মুভমেন্ট পাসের জন্য পুলিশের ওয়েবসাইটে ঢুকেছেন। তাদের মধ্যে সব ধাপ সম্পন্ন করে পাসের রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন মাত্র ৬০ হাজার নাগরিক। বাকিদের রেজিস্ট্রেশনের কোনো না কোনো ধাপে সার্ভার কাজ না করায় তারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেননি। যেই ৬০ হাজার নাগরিক মুভমেন্ট পাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাদের মধ্যে ৩০ হাজার জনের পাস ইস্যু করা হয়েছে।

যা করা যাবে-

করোনার বিস্তার রোধে সাত দিনের বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি পণ্য পরিবহন করা যাবে; উৎপাদন ব্যবস্থা চালু থাকবে; জরুরিসেবা দেওয়া যাবে। শিল্প-কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখতে পারবে। সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্তস্থানে কাঁচাবাজার খোলা থাকবে এবং বাজার করা যাবে।

জরুরি পরিষেবা দেওয়া যাবে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (স্থল, নদী ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম চলবে। টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি) সেবা দেওয়া যাবে। গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া) কর্মীরা পেশাগতদায়িত্ব পালন করতে পারবেন। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মরদেহ দাফন/সৎকার সংশ্লিষ্ট কাজ করা যাবে। টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা নেওয়ার জন্য যাতায়াত করা যাবে।

যা করা যাবে না-

সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে জনসাধারণকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে না। শপিং মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখতে হবে।

এর আগে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য গণপরিবহন বন্ধসহ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। দুদিন পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। এর একদিন পর খুলে দেওয়া হয় শপিং মলও। তবে এবারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সেই সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 সৌজন্যে : জাগোনিউজ ২৪

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/মিআচৌ-১২
 

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.