Sylhet View 24 PRINT

বিকল্প না মিললে সংকট

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১৮ ০৩:৪২:০২

সিলেটভিউ ডেস্ক :: করোনাভাইরাস থেকে নিরাপত্তার অন্যতম উপায় দেশের বেশিরভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা। এজন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজের চুক্তি করে। কিন্তু সেই অনুযায়ী টিকা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। ফলে এই টিকা নিয়ে একরকম অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এখনই যদি বিকল্প ব্যবস্থায় টিকার সংস্থান করা না-হয়, তাহলে করোনা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

তাদের অভিমত, মাত্র একটি সোর্সের ওপর নির্ভর করে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের টিকাদান কার্যক্রম। বাংলাদেশ এসব টিকার অনুমোদন দিচ্ছে না। কারণ, এগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রি-কোয়ালিফাইড নয়। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক-ভি ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে। অন্যদিকে চায়নার টিকার ‘ইমার্জেন্সি অথরাইজেশন’ দেওয়া হয়েছে। এমনকি করোনা মহামারি বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো করোনার টিকার অনুমোদন দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এ ধরনের মহামারির ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

এদিকে সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে চীন এবং রাশিয়ার উৎপাদিত টিকা। এই দুটি দেশের পক্ষ থেকে টিকাদানের আগ্রহ দেখানো হলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এ মুহূর্তে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম একইসঙ্গে চালানোটা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে কি না, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা এখন চিন্তিত। কারণ, আমাদের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ টিকা নেই। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পরবর্তী চালান দেশে আসার বিষয়ে সরকার এখনো সুনির্দিষ্ট করে জানতে না-পারায় চলমান টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে চারটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান, অন্য তিনটি বিদেশি। একটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে প্রথম ফেজ থেকে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করতে। অন্য তিনটি প্রতিষ্ঠান দেশে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করবে। এর মধ্যে দুটি বিদেশি কোম্পানির আবেদনগুলো বিএমআরসি (বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল) গ্রহণ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি টিকা বিভিন্ন পরীক্ষায় সবচেয়ে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশে এই টিকার কম-বেশি ব্যবহার হয়েছে। দেশে এই টিকা আনতে একটি কনসোর্টিয়াম কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে একটি আবেদন করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল পরিচালনা করতে চায় ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্স (আইএমবিসিএএমএস)। চায়নার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠান ১৯৫৮ সালে সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পরেই ১৯৬০ সালে ওরাল পলিওমাইলেস্টি ভ্যাকসিন (ওপিভি) এবং ১৯৯২ সালে হেপাটাইটিস এ ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত দুই বিলিয়ন ওপিভি এবং ৫২ বিলিয়ন ডোজ হেপাটাইটিস-এ টিকা উৎপাদন ও বাজারজাত করেছে। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মনোনীত একটি বৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে করোনা মহামারি শুরু হলে প্রতিষ্ঠানটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে একটি ‘ইনঅ্যাকটিভেটেড ভ্যাকসিন’ উদ্ভাবনে কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে সার্সকোভ-২ নামের একটি টিকা উদ্ভাবন করে, যা আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুসারে প্রাণীদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এবং মানবদেহে পরীক্ষামূলক ফেজ-১ ও ফেজ-২ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

আইএমবিসিএএমএস টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনায় দেশের একটি ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে গত ২৩ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে আবেদন করে। যেটি পরিচালনায় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি)-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই টিকার ট্রায়াল পরিচালিত হচ্ছে এবং এর কোনো তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এদিকে ভারত বায়োটেক নামে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান একটি করোনার টিকা উদ্ভাবন করেছে। এটিও একটি ‘ইনঅ্যাকটিভেটেড ভ্যাকসিন’। ইতোমধ্যে এ ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল পরিচালনার জন্য বিএমআরসিতে আবেদন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ করার জন্য আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।

এ ছাড়া গত ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক তাদের উৎপাদিত করোনাভাইরাস টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অনুমতির জন্য বিএমআরসিতে আবেদন করে।

এ বিষয়ে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তো জটিল নয়। টিকার মতো জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ক্ষেত্রে যত বেশি ট্রায়াল পরিচালনা করা হবে ততই ভালো। ট্রায়ালে যদি অবস্থা ভালো হয়, তাহলে আমরা ওই টিকা নেব। ভালো না-হলে নেব না। তবে সরকার কেন ট্রায়ালের অনুমোদন দিচ্ছে না, সেটি বোধগম্য নয়।

আইএমবিএএমএএমএস-এর মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক মি. ইন কোভিড-১৯ টি ভ্যাকসিন বিষয়ে মঙ্গলবার টেলিফোনে জানান, তারা বাংলাদেশকে টিকা দিতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যে তাদের টিকার ব্রাজিল, মেক্সিকো, মালয়েশিয়া ট্রায়াল পরিচালিত হচ্ছে। এসব ট্রায়ালে ফল বেশ ভালো পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া এই টিকা চীনে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর ওপর প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার চাইলে প্রয়োজনীয় টিকা সরবরাহ করবে তারা। টিকার দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক দামেই প্রদান করা হবে।

ওয়ান ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে (আইএমবিএএমএএমএস) উৎপাদিত কোভিড-১৯ টিকার একমাত্র পরিবেশক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে তার প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চিকিৎসায় জীববিজ্ঞান চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস (আইএমবিএএমএএমএস), চীন আইসিডিডিআর,বি-এর সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার জন্য একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে।

তিনি বলেন, ওয়ান ফার্মা লিমিটেড স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে (দ্বিতীয় ধাপের প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল রেপোটাসহ) ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুমোদনের জন্য একটি চিঠিও জমা দিয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গত ২৪ ডিসেম্বর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল পরিচালনার অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। সম্প্রতি (গত ২৯ মার্চ) আইএমবিএএমএএমএস চীন-এর বাংলাদেশ দূতাবাসকে বাংলাদেশে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল পরিচালনায় একটি চিঠি দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ওয়ান ফার্মা লিমিটেড দীর্ঘদিন ধরে টিকা নিয়ে কাজ করে আসছে। ২০১৩ সালে টিকার নিবন্ধনকরণ, কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। সেই সময় থেকেই ওয়ান ফার্মার টিকা বাণিজ্যিক বিপণন শুরু হয়েছিল যা এফএও এবং ওআইই-এর কোয়ালিফাইড। ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের সমগ্র বাংলাদেশে তার নিজস্ব বিতরণ চ্যানেল রয়েছে। সারা দেশে ১০টি ডিপোসহ পর্যাপ্ত তাপমাত্রা (২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বজায় রাখার নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের দোরগোড়ায় টিকা বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত যৌক্তিক সহায়তা রয়েছে বিভিন্ন আকারের শীতল বাক্সগুলোর মতো, আইস প্যাকগুলো এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীরা যারা বছরের পর বছর ধরে টিকা নিয়ে কাজ করে চলেছেন।

ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিসিক শিল্পাঞ্চল বগুড়ায় ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ফ্যাক্টরি সাইটে একটি কোল্ড রুম রয়েছে। যেখানে ১০ মিলিয়ন ডোজ টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই সক্ষমতা ২১ দিনের সময়কালের মধ্যে ৪ গুণ বাড়ানো সম্ভব। উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও সারা দেশে মোট ১০টি ডিপোর উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রেখে অতিরিক্ত চার লাখ ডোজ টিকা সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এই ক্ষমতাও প্রায় তিন সপ্তাহের সময়ের মধ্যে চার গুণ বাড়ানো সম্ভব। সম্প্রতি সরকারের প্রাণিসম্পদ পরিষেবা অধিদপ্তর বগুড়ার স্টোরেজ সুবিধা পরিদর্শন করেছে।

ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের মূল সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার লিমিটেড কেন্দ্রীয়ভাবে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে সবচেয়ে আধুনিক স্টোরেজ ক্ষমতা বীজের জন্য এক হাজার ৬০০ টন, যা সহজেই স্বাভাবিক তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণে ব্যবহার করা যাবে। সম্প্রতি প্রাণিসম্পদ পরিষেবাদি বিভাগ এফজিবিআই ‘এআরআইএইচএইচ’ এবং এল/সি দ্বারা ৩৫ লাখ টাকার প্রথম চালানের জন্য উৎপাদিত এফএমডি টিকা এক কোটি সাঁইত্রিশ লাখ চৌদ্দ হাজার দু’শ আশি ডোজ সরবরাহের জন্য একটি কার্যাদেশ দিয়েছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এটি দেশে এসে পৌঁছাবে। এই প্রক্রিয়ায় আরও তিনটি কার্যাদেশে ১০ দশমিক ২ মিলিয়ন ডোজ টিকা আনা হবে। গত ৩০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে চার সদস্যের রাশিয়ার ভ্লাদিমিরের এফজিবিআইয়ের ‘এআরআইএইচ’ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে।

টিকার বর্তমান অবস্থা : দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরু হয়েছে গত ৮ এপ্রিল। এরপর থেকে এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ১১ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৭ জন। শনিবার একদিনেই টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ২১ হাজার ৬০৬ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ১৫৭ জন। এ পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪২ জন। এ পর্যন্ত দুই ডোজ মিলিয়ে ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ৮০৯ জন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা নিয়েছেন।

সেরামের টিকা : ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পরবর্তী চালান কবে আসবে, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। ফলে চলমান টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বর্তমান হারে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হতে থাকলে মজুতে থাকা টিকা আগামী ১৫ দিনে শেষ হয়ে যাবে। বর্তমানে দিনে প্রায় দুই লাখ মানুষ টিকার দ্বিতীয় ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রথম ডোজ নিচ্ছেন। দেশে আমদানিকৃত ও প্রাপ্ত এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকার মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘ভ্যাকসিন ডিপ্লয়মেন্ট কমিটি’র প্রধান অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী টিকা কেনার জন্য হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে।

এদিকে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘সেরাম আমাদেরকে জানিয়েছে যে, তারা রপ্তানি করতে প্রস্তুত। কিন্তু এজন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র প্রয়োজন। কিন্তু সেরামকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে মোট ছয়টি চালানে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী গত জানুয়ারি মাসে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় চালানে গত ফেব্রুয়ারিতে ৫০ লাখের পরিবর্তে মাত্র ২০ লাখ ডোজ টিকা দেয় তারা। এরপর মার্চ মাসে কোনো টিকা দেয়নি সেরাম। এ ছাড়া এপ্রিলে এখনো টিকা আসার কোনো পূর্বাভাস দিচ্ছে না সেরাম। এক্ষেত্রে বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী ৮০ কোটি ডোজ টিকা বকেয়া হয়েছে। গত মার্চে ভারত সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করে। তারা জানায়, ভারতে সংক্রমণের হার বাড়ায় অভ্যন্তরীণ টিকার চাহিদা বেড়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা চলতি মাসের শুরুর দিকে তার দেশের গণমাধ্যমকে জানান, ভারতে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় ‘সেরামের কোভিশিল্ড উৎপাদন কার্যক্রম খুবই চাপের মুখে রয়েছে।’

চলমান পরিস্থিতিতে টিকাদান কর্মসূচিতে বিঘ্ন ঘটবে কি না-জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে, আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি বিষয়টির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করার। যদি সেরামের কাছ থেকে দ্রুত টিকা পাওয়া না-যায়, তাহলে আমরা অন্যান্য উৎস থেকে টিকা আনার চেষ্টা করব।

সৌজন্যে : যুগান্তর


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ যুগান্তর /জিএসি-৩৫

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.