আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মানবাধিকারের ‘প্রামাণ্যচিত্র’ দেখালো বিএনপি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১৩ ১১:২৩:৫৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে গোলটেবিল আলোচনায় বিদেশি কূটনীতিকদের ডেকে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর নির্মিত ‘প্রামাণ্যচিত্র’ দেখালো বিএনপি।
 
বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় আয়োজিত ‘রাইট টু লাইফ, এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ: ২০০৯- জুন ২০১৮’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রায় ২০ মিনিট ধরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ‘প্রামাণ্যচিত্র’ প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জমান।
 
প্রামাণ্যচিত্রে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর গত সাড়ে নয় বছরের বিভিন্ন ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়। যেখানে ‘বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ হওয়ার লোকজনের স্বজনদের বক্তব্য, পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট’ তুলে ধরা হয়।
 
এরমধ্যে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলম, নারায়ণগঞ্জে র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার হাতে সাত জন, চট্টগ্রামের ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরু, যুবদল নেতা মোহাম্মদ আলম, ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনসহ গুম ও খুন হয়ে যাওয়া লোকদের ছবি প্রদর্শন ও পরিবারের স্বজনদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
 
পরে কূটনীতিকদের হাতে ‘রাইট টু লাইফ, এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ: ২০০৯-২০১৭’ শীর্ষক একটি বই তুলে দেওয়া হয়। বইটির প্রকাশক বিএনপির থিংক ট্যাংক বলে পরিচিত ‘জি-নাইন’। বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, পাশে অন্য অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজঅনুষ্ঠানে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মানবাধিকার বিষয়ক সচিব মাইক ক্রেমার, ফ্রান্স দূতাবাসের উপ-প্রধান জ্যঁ-পিয়ের পঁশে, ভারতীয় হাইকমিশনের রাজনৈতিক বিভাগের শান্তনু মুখার্জিসহ কানাডা, সুইডেন, পাকিস্তান, ইরান এবং জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিগত দিনে পাঁচ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী হারিয়ে গেছে। ১০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। সারাদেশে ৭৮ হাজার মামলায় ১৮ লাখ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমরা প্রতিদিন খবরের কাগজে এই ছবিগুলো দেখছি। মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে লাশ পড়ে থাকছে। এ বিষয়গুলিকে আমরা অনেকবার সামনে নিয়ে এসেছি। কিন্তু সরকার কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছে না।

কূটনীতিকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আপনাদের সামনে যে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হলো, তারপর আর বেশি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, আপনারা গত কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেখেছেন। আর আগামী নির্বাচন বিএনপিকে ছাড়া গ্রহণযোগ্য হবে না।

এসময় তিনি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ‘নির্যাতনের’ বিষয়ও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমান, মানবাধিকার কর্মী সেলিনা বেগম ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
 
মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেন, মূল মামলায় উচ্চ আদালত থেকে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাকে কয়েকটি ছোট মামলায় আটকে রাখা হয়েছে। নিম্ন-আদালত সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ হওয়ার কারণেই খালেদা জিয়াকে জামিনযোগ্য মামলায়ও জামিন দেওয়া হচ্ছে না।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৩ জুলাই ২০১৮/ডেস্ক/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন