আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

খালেদার মুক্তি নাকি নির্বাচন? কি ভাবছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-১২ ১৯:৪২:৩৬

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা পেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন কারারুদ্ধ। ছয় মাসেও তার জামিন না হওয়ায় হতাশ দলের নেতাকর্মীরা। চলতি বছরের ডিসেম্বরে (সম্ভাব্য) অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে বিএনপির। দলের শীর্ষনেতাদের সামনে এখন দুইটি বড় চ্যালেঞ্জ, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কোনটাকে গুরুত্ব দিবে বিএনপি?

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দলের শীর্ষনেতারা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। কেউ বেগম জিয়ার মুক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছে আবার কেউ নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে দলের অধিকাংশ নেতাই নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তাদের মনোভাব ইতিবাচক। নির্বাচন বলতে যা বুঝায় সেই নির্বাচন হলে দল অবশ্যই নির্বাচনে যাবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে আমরা আলোচনা করছি। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই এ মুহূর্তে এটা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা বেগম জিয়াকে কারামুক্ত করতে চাই। তারপর তাকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবীতে রাজপথে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচন করতে চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দলের হাইকমান্ডের যে মনোভাব তাতে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আছে। নির্বাচনে যাওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে লন্ডনে পলাতক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি আসনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে জরিপও হয়েছে। তিনি একটি প্রার্থী তালিকাও তৈরি করছেন। সেখানে প্রত্যেক আসনের বিপরীতে অন্তত তিনজন প্রার্থীর নাম রাখা হয়েছে; যাতে অসুস্থতা, মৃত্যু কিংবা মামলার কারণে কেউ নির্বাচন করতে না পারলে বিকল্প প্রার্থী বাছাই করা সহজ হবে। দলের গুলশান কার্যালয় থেকে কয়েকটি জরিপ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তারেকের নির্বাচনে অংশ গ্রহনের সিদ্ধান্তে দলের মধ্যে দটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একপক্ষ তারেকের সাথেই পথ হাটতে চায় অর্থাৎ নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। আবার আরেক পক্ষ বেগম জিয়াকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নেওয়াটা ছিল দলের একটি ভুল সিদ্ধান্ত, বিএনপির শীর্ষনেতারা তা স্বীকার করে নিয়েছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর অপেক্ষার পর আবারও ঘনিয়ে এসেছে নির্বাচনের সময়। তাই চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপির বেশিরভাগ নেতা মনে করছেন, নির্বাচনের অংশগ্রহণ করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন