Sylhet View 24 PRINT

দলেই থাকছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০১-০৯ ০০:২৯:৫২

রফিকুল ইসলাম রনি :: দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে জেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক  কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। নির্বাচিত কিংবা পরাজিত এসব বিদ্রোহী প্রার্থী নিজ দলেই থেকে যাচ্ছেন। স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলটি কঠোর থাকলেও এবার ব্যতিক্রম অবস্থান নিয়েছে। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, সদ্য অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি অংশগ্রহণ না করার কারণেই তারা দলীয় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা  না নেওয়ার পক্ষে। এই প্রথমবারের মতো দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন নির্বাচনের আগে তাদের দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে ১৩ জন বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন।

জানা গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতেই স্থানীয় বা কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে বিদ্রোহীদের নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। বাধা দেওয়া হয়নি তাদের প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগে। তবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব পোষণ করা হলেও বিদ্রোহীদের মদদদাতাদের খুঁজে বের করে তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেন আগামীতে তাদের সম্পর্কে সতর্ক এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। এদিকে দায়িত্বশীল পদে থেকে বিদ্রোহীদের যারা মদদ দিয়েছেন এমন বর্তমান ও সাবেক এমপি, সাবেক মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা স্থানীয় সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ে তাদের সংশ্লিষ্টতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে নীতিনির্ধারকরা জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ বড় কোনো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর অবস্থানে গেলে সব জেলাতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। ফলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠত। তারা জানান, বেশ কিছু জেলায় যোগ্যতা থাকার পরেও সমর্থন প্রত্যাশী অনেক প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন। নানা কারণে ভুল সমর্থনের শিকার হওয়া এসব নেতা পরে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। দল সমর্থিত প্রার্থীদের তুলনায় যে কিছু বিদ্রোহী প্রার্থী যোগ্য ছিলেন নির্বাচনের মাধ্যমে তারা সে প্রমাণ দিতে পেরেছেন।

গত ২৫ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৬১ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এরপর ২১ জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সর্বশেষ ৩৮টি জেলার মধ্যে ৩০ জেলায় আওয়ামী লীগের শক্ত পতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থীদের পরাজিত করে ১৩ জন বিদ্রোহী বিজয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় জেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হলেও তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগও আনা হবে না। 

দলীয় সূত্রমতে, গত বুধবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলেও বিদ্রোহীদের ব্যাপারে নমনীয় ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিদ্রোহীদের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য বিদ্রোহীদের ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে যারা দায়িত্বশীল পদে থেকে দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহীদের মদদ দিয়েছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে হবে। এ সময় তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকদের লিখিত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেন।   আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল নির্দলীয় নির্বাচন। সে কারণে আমরা বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়টি আমলে নিইনি। আমরা চেয়েছি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। তাই আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে ঠিকই অনেক জেলায় উন্মুক্তও করে দেওয়া হয়েছে।   দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যারা দায়িত্বশীল পদে থেকে দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সৌজন্যে : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.