Sylhet View 24 PRINT

আজ আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-২৪ ০৯:৪৯:৫৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ঠিক পাঁচ দিন পর সরকারিভাবে জানা গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের পর ঠিক কী সমস্যা হয়েছিল মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের। গতকাল কোচ স্টিভ রোডস প্রি-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছেন যে, পিঠের সমস্যার কারণেই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ খেলেননি তরুণ এ অলরাউন্ডার। এখন তিনি সেরে উঠেছেন এবং ম্যাচ ফিটও। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাই আজ পয়েন্ট এবং সম্মান রক্ষার ম্যাচে সাইফ উদ্দিনের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। গতকাল নেট থেকে উড়ে আসা বল মাথায় লেগেছিল মেহেদী হাসান মিরাজের। আঘাত গুরুতর নয় বলে আবার নেটেও যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাবধানতার অংশ হিসেবে মিরাজকে বিশ্রামে যেতে হয়েছে। আজ তাঁর খেলার ব্যাপারে সংশয়মূলক কিছু শোনা যায়নি।

সাইফ উদ্দিন যদি খেলেন, তবে ধরে নেওয়া যায় যে এবারের বিশ্বকাপের ‘উইনিং কম্বিনেশনে’ ফিরছে বাংলাদেশ। সাইফ উদ্দিন ও মোসাদ্দেকের জায়গা ফিরিয়ে দিয়ে আবারও রিজার্ভে চলে যাচ্ছেন সাব্বির রহমান ও রুবেল হোসেন।

ডেথ ওভারে সাইফ উদ্দিনের ওপর অগাধ আস্থা মাশরাফি বিন মর্তুজার। আর কাঁধের চোটের কারণে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ থেকে দূরে থাকা মোসাদ্দেকের অফস্পিনকে সাউদাম্পটনের রোজ বৌল স্টেডিয়ামের উইকেটে ‘মহার্ঘভাতা’ হিসেবেই দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এক দিন আগে এ মাঠেই ভারতের হাই প্রফাইল ব্যাটিং লাইনকে লাইন ধরে মুজিব-উর-রহমান, রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবিকে সশ্রদ্ধ সালাম জানাতে দেখেছেন বাংলাদেশ দলের সবাই। তবে রোহিত শর্মারা যখন বল খুঁজে পান না আফগান স্পিনারদের, তখন বিশ্বের যেকোনো ব্যাটসম্যানের মনেই ‘কু’ ডাক দেওয়াটা স্বাভাবিক। বোধগম্য

 কারণেই ম্যাচের আগের দিন শিষ্যদের মনে ভয় ধরাতে চাননি। তাই ভয়কে শ্রদ্ধার ইতিবাচক রূপ দিয়েছেন স্টিভ রোডস, ‘আমি মনে করি সঠিক শব্দটা হবে শ্রদ্ধা। রশিদ খান দারুণ বোলার। ওদের বাকি দুই স্পিনার—নবি এবং মুজিবও ভালো বোলার। আমরা ওদের সম্মান করি, ভয় পাই না। আমার ছেলেরা স্পিন কন্ডিশনে খেলে বড় হয়েছে। তবু ওদের শ্রদ্ধা করব, কারণ ওরা আন্তর্জাতিক মানের বোলার।’

সাধারণ একটা অঙ্কই অবশ্য বলে দেয় আজকের ম্যাচে রশিদ-মুজিব-নবির বোলিং ম্যাচ ভাগ্যে কতটা প্রভাব ফেলবে। তিনজনে মিলে করবেন ৩০ ওভার। ওয়ানডেতে এরপর আর বাকি থাকে কী! ভারতের বিপক্ষে এ মাঠেই স্পিন কার্যকর মনে হওয়ায় রহমত শাহর খণ্ডকালীন লেগ স্পিনেও ভরসা রেখেছিলেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। সব মিলিয়ে সে ম্যাচে আফগান স্পিনারদের করা ৩৪ ওভারে রান উঠেছে মাত্র ১১৯ রান, উইকেট পড়েছে ৫টি। অথচ স্পিনের বিপক্ষে ভারতীয়দের শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজনস্বীকৃত।

গুরু তাঁর শিষ্যদের পাশে দাঁড়াবেন, অনুপ্রেরণাদায়ী কথা শোনাবেন—এটাই স্বাভাবিক। তবে এক দিন আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারতীয় ইনিংস শেষ হতেই ‘অ্যালার্ম’ বাজতে শুনেছি বাংলাদেশ দলের ভেতরে। ‘উইকেট দেখেছেন? আইসিসি আর কত রকমের উইকেটে খেলাবে বাংলাদেশকে’, উষ্মা দল-সংশ্লিষ্ট একজনের। শুরু থেকেই এ নিয়ে বিরাগ দেখা গেছে বাংলাদেশ দলে। ইংল্যান্ড ম্যাচ অদ্ভুতুরে আকৃতির কার্ডিফ কিংবা টন্টনের ছোট মাঠে কেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ দেওয়া হলো—প্রশ্ন আছে বাংলাদেশ দলের। তাই বলে আফগানিস্তান ম্যাচটা আইসিসি কি না দিল রোজ বৌলে, যেখানে স্পিনারদের বল ঘুরছে!

অবশ্য ধীর গতির ট্র্যাকে তো খেলে অভ্যস্ত বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। স্টিভ রোডস অবশ্য মিরপুরের সঙ্গে সাউদাম্পটনের উইকেটকে গুলিয়ে ফেলতে রাজি নন, ‘এটা ঠিক বাংলাদেশের উইকেটের মতো নয়। দেশে বল একটু থেমে থেমে আসে। এখানে উইকেট স্লো এবং টার্নও আছে।’ ৪৮ ঘণ্টা আগেই একটা ম্যাচ হওয়ায় উইকেটে বল একটু বেশি গ্রিপও করতে পারে।

সব মিলিয়ে আফগান স্পিন দুর্বোধ্য হয়ে ওঠার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রায় এক বছর আগে ভারতের ওই শহরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে রশিদ খানদের বিপক্ষে অসহায়ই দেখিয়েছিল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। সেপ্টেম্বরের এশিয়া কাপের প্রথম সাক্ষাতেও সে ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বারে দান উল্টে দেয় বাংলাদেশ। ২০১৯ বিশ্বকাপে দুই দলের ব্যাটিং নৈপুণ্যও সে ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছে। বাংলাদেশ যেখানে প্রতি ম্যাচেই তিন শর আশপাশে স্কোর গড়ছে, সেখানে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ স্কোর ২৪৭ রান। ভারতের ২২৪ রানের ইনিংসও টপকাতে পারেনি তারা।

তাই আফগান স্পিন নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ক্রিকেটারও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, ‘ওদের ব্যাটিংটা ভালো না।’ নিজেদের ব্যাটিংয়ের পক্ষাবলম্বন করার উপায়ও নেই আফগানদের। তবে খেলাটা ক্রিকেট, যেখানে তিন স্পিনারের ৩০ ওভার থাকছে আফগানদের পক্ষে। আছেন একজন ফিল সিমন্স, যিনি কাল গভীর মনোযোগের সঙ্গে দেখেছেন বাংলাদেশের অনুশীলন।

ভাবাই যায় না, ফুটবল বিশ্বকাপের সময় প্রতিপক্ষ কোচ প্র্যাকটিস সেশনে হাজির! মিডিয়ার জন্য কয়েক মিনিটের বরাদ্দ থাকে। এরপর রুদ্ধদ্বারের ভেতরে ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী প্র্যাকটিস করেন মেসি-রোনালদোরা।

সিমন্সের দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের রণপরিকল্পনা অবশ্য একমুখী। স্পিনারদের সামলানোতেই যে ম্যাচের ভাগ্য লেখা, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেট সমাজের সর্বস্তরেরই জানা।

ওয়ানডেতে দুই দলের ৪-৩ ব্যবধানের হ্রাসবৃদ্ধিও নির্ভর করছে একটা ফ্রন্টিয়ারে। বাংলাদেশের ব্যাটিং এবং আফগানিস্তানের স্পিন বোলিং। সাকিব-তামিম-মুশফিক বনাম রশিদ-মুজিব-নবি!

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ ২৪ডটকম/২৪ জুন ২০১৯/মিআচ


সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.