আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

বিশ্বনাথে পানির মধ্যে নদী পুনঃখনন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-২০ ১২:৪৫:০৯

প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু, বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে পানির মধ্যে চলছে ‘বাসিয়া নদী’ পুনঃখনন কাজ। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান কাজে এমন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ওই পুনঃখনন কাজ চলমান থাকলেও এলাকাবাসী (জনসাধারণ) প্রতিনিয়তই স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ করে আসছেন।

জনসাধারণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সরজমিনে ‘বাসিয়া নদী’র চলমান পুনঃখনন কাজ পরিদর্শনে নদীতে থাকা পানির মধ্যে কাজ চলমান থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া খনন কাজ শুরুর প্রথম দিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সামছুর রহমান এন্টারপ্রাইজ’ এক সাথে নদীর দুই (উত্তর ও দক্ষিণ) তীরে পুনঃখনন কাজ চালিয়ে আসলেও বর্তমান শুধু উত্তর তীরে খনন চলছে। এ কারণে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, পুনঃখনন কাজ চলমান অবস্থায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন অবৈধ পদ্ধতি অবলম্বন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে কারও জায়গা বেশি খনন করছেন, আবার কারও কম। পুনঃখনন কাজ চলাকালে কয়েকটি স্থানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন দোকান ভাংচুর করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন। আবার অনেক স্থানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি)’র অনুমতি ছাড়া নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী নদীর তীরের গাছ কাটাচ্ছেন।

জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলা সদর থেকে মটুককোনা খালপাড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার পর্যন্ত এরিয়াকে ৩টি খন্ডে ভাগ করে পুনঃখনন কাজ শুরু হয়। ২০১৬ সালের শেষ দিকে পুনঃখননের জন্য ফিতা দিয়ে ৩৩ মিটার (১১০ ফুট) সীমানা নির্ধারণ করেন। এরপর ২০১৭ সালে উপজেলা সদর থেকে কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত এরিয়ায় ‘বাসিয়া নদী’র দুই তীরে গড়ে উঠা ১৭২টি স্থাপনাকে অবৈধ হিসেবে চিহিৃত করে তালিকা তৈরী করেন বিশ্বনাথ উপজেলা প্রশাসন। এরপর একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমানে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ ও বহাল রাখা নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে বলে জনশ্রæতি রয়েছে। গত বছর কাজ শুরুর পর অতিবৃষ্টির কারণে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পুনঃখনন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারী মাসে পুনঃরায় পুনঃখনন কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামছুর রহমান এন্টারপ্রাইজ।

বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী বলেন, বাজার এলাকায় নদীর দুই তীরের পরিবর্তে এক তীরে (নতুন বাজার) পুনঃখনন কাজ চলছে, অথচ পূর্বে একই সাথে দুই তীরে এক সাথে খনন হয়েছে। বাজারে এসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কেন এমন আচরণ করছে জনগণ তা জানতে চায়। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। অনেক স্থানে অবৈধভাবে টাকা (ঘুষ) গ্রহণ করে খননের নির্দিষ্ঠ এরিয়া থেকে কম খনন করছে, আবার যে টাকা (ঘুষ) দিচ্ছেনা তার বেশি খনন করছে ঠিকাদারের লোকজন। এমন অভিযোগও রয়েছে। 

পানির মধ্যে ও দুই তীরের পরিবর্তে এক তীরে পুনঃখনন কাজ চলমান থাকার ব্যাপারে জনসাধারণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সামছুর রহমান এন্টারপ্রাইজের’ সত্ত¡াধিকারী মুসলিম মোল্লা বলেন, এব্যাপারে কাল (শুক্রবার)’কে এক্সেন স্যার এসে সিদ্ধান্ত দিবেন।

পানি উন্নয়নের বোর্ডের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, সঠিক নিয়মে ও মাপে বাসিয়া নদী পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করা হবে। সেচ না করে, পুনঃখনন কাজ করলে এব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। স্থাপনা ভাংচুর করা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নেই, এমনটি হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২০ এপ্রিল ২০১৮/পিঅ/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন