আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

রমজানে সিলেটে পৃথকভাবে বাজার তদারকি করবে ব্যবসায়ী সমিতি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৪-২১ ১০:৩০:৪২

মো. এনামুল কবীর :: রমজানের মাসখানেক আগে থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তে থাকে হু হু করে। বাংলাদেশে এই সংস্কৃতি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। তবে ব্যতিক্রম এ বছর। রমজান মাস আসতে ২০/২২ দিন বাকী থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার এখনও স্থিতিশীল রয়েছে। ছোলা, ডাল সয়াবিন, চিনি-রোজাদারদের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম সপ্তাহখানেক আগে যেমন ছিল এখনও সেরকমই আছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবার আর দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তবু সরকারের পাশাপাশি সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি নিজস্ব মনিটরিং দল গঠন করে বাজার তদারকি করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির নির্ভরশীল একটি সূত্র।

ক্রেতাদের জন্য খুবই স্বস্তির খবর কোন সন্দেহ নেই। শুক্রবার বিকালে সিলেটের প্রধান পাইকারি বাজার কালিঘাট ঘুরে জানাগেছে এসব তথ্য। অধিকাংশ দোকানই বন্ধ। যে কয়েকটি দোকান খোলা পাওয়া গেছে সেই সব দোকানের মালিক ও কর্মচারিদের কয়েকজন কথায় কথায় জানালেন আমদানী প্রচুর। আর তাই বাজারে কোন পণ্যেরই দামই এখনও বাড়েনি। আগামীতেও না বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

রোজাদারদের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছোলা। রমজানে হু হু করে যেসব দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় ছোলা তার অন্যতম। ইফতারিতে প্রায় অপরিহার্য এই উপদানটির বর্তমান বাজারদর এখনও স্থিতিশীল। পাইকারী বিক্রেতারা জানালেন, গেল ৫/৬ বছরের মধ্যে এর দাম এবার সবচেয়ে কম। গত প্রায় বছরখানেক থেকে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রী হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। এই মুহুর্তে প্রতিকেজি ছোলার দাম পাইকারি বাজারে প্রায় ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খুঁচরা বাজারে অঞ্চল বা এলাকাভেদে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। গেলো বছর পাইকারি বাজারে দাম ছিলো বর্তমানের প্রায় দ্বিগুন, ৯০টাকা।

পেঁয়াজ সবসময়ের জন্যই অতিপ্রয়োজনীয় মসলা। কয়েক মাস আগে রীতিমতো ভানুমতির খেল দেখানো শেষে এর বাজার এখন স্থিতিশীল। কিছুদিন থেকে এর দাম আর বাড়েনি। বর্তমানে যে কয়েক ধরণের আমদানি করা পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, পাইকারি বাজারে তার দাম প্রতিকেজি ১৬ থেকে ২২ টাকার মধ্যে। খুঁচরা বাজারে ২৬/২৭ টাকা থেকে শুরু করে ৩২/৩৩ টাকা।

কালিঘাটের অন্যতম প্রধান মসলা ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল মান্নান অ্যান্ড সন্সের কর্মচারী আবুল মিয়া জানিয়েছেন, গত মাসখানেক থেকে এই দামের মধ্যেই রয়েছে পিঁয়াজের বাজার। রমজানের ইফতারে খিচুড়ি খুবই জনপ্রিয় একটি নাম। আর খিচুড়ির অন্যতম প্রধান উপাদান ডাল। এবার সেই ডালের দামও একেবারে হাতের নাগালে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। অন্তত গেলো বছরের তুলনায়। সেবার প্রতিকেজি মসুরডালের পাইকারি দাম ছিল ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। কখনো কখনো তাও ছাড়িয়ে গেছে। এবার এখন পর্যন্ত ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে পওয়া যাচ্ছে। খুঁচরা বাজারে বিক্রী হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। পিঁয়াজের মতো ডালের আমদানীও যথেষ্ট। আর তাই এই পণ্যটির দামও তেমন একটা বাড়বে বলে মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, সয়াবিনের দামও স্থিতিশীল। সিলেটের পাইকারি বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন মানভেদে ৯৩/৯৪ টাকা থেকে শুরু করে ৯৯/১০০ দামে পাওয়া যাচ্ছে। চিনির দামও তুলনামূলকভাবে কম, ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। ব্যবসায়ীদের ধারণা, সরকারের উদার আমদানী নীতির কারণে এবার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বা পণ্যের সংকট নেই। আর তাই রমজানের শেষ পর্যন্ত দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনা নাই।

অশোক পাল নামক একজন ব্যবসায়ী জানালেন, সরকার সচেতন এবং কঠোর। আর তাই দ্রব্যমূল্য এবার হাতের নাগালে’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘ইবারতো নির্বাচনী বছর ভাইসাব। সরকার খুব সতর্ক। আমদানীও ভালা। এরলাগি ইবার দাম বাড়ার ডর নাই’।

এদিকে রমজান উপলক্ষে প্রতিবছরই জেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও পুলিশের সমন্বয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে  মনিটরিং দল গঠন করা হয়। সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মনিটরিং দল গঠনে প্রক্রিয়া শুরু না হলেও সময়মতো তা হবে। হবে সমিতিরি নিজস্ব মনিটরিং দলও বাজার তদারকি করবে।

এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক জানিয়েছেন, প্রশাসনের সাথে সাথে তারাও পৃথক মনিটরিং দল করবেন।

তিনি আরও বলেন,‘বাজার এখনও স্থিতিশীল আছে। আশা করি শেষ পর্যন্ত অলাউ থাকবো। দাম বাড়ার কোন কারণ দেখিয়ার না। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দাম বাড়াইত না পারে, এর লাগি আমরা প্রশাসনের পাশাপাশি সমিতির পক্ষ থাকি আলাদা মনিটরিং দল মাঠো লামাইমু।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ২১ এপ্রিল ২০১৮/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন