আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নাচ-গানে জম-জমাট জাফলং ভ্যালির কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-১৬ ১৫:৪৯:২৩

মো. এনামুল কবীর :: সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই নগরীর রিকাবি বাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। একেবারে সামনের সারিতে উপস্থিত গুনীজন। আর আসনগুলো অলংকৃত করে রেখেছেন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।

শিক্ষার্থীরা এসেছেন সংবর্ধনা নিতে। আর তাদেরকে এখানে সম্মাণনা বা সংবর্ধনা দিতে জড়ো করেছে সিলেটে সদ্য প্রতিষ্ঠিত জাফলং ভ্যালি বোর্ডিং স্কুল। অনুষ্ঠানটির আয়োজক তারাই।

হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের সহযোগিতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠান শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। শুরুতেই সমবেত মেধাবী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক ও অতিথিদের জন্য পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান স্কলার্স হোমের ৬টি শাখার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠানটি বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠে। তাদের পরিবেশনার মধ্যে ছিল, গান-নাচ ও কবিতা আবৃত্তি। অবশ্য বেলাল আহমদ নামক একজন জাদু শিল্পী তার জাদু প্রদর্শনের মাধ্যমেও হাততালি পেয়েছেন বেশ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয় রবি ঠাকুরের বিখ্যাত ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ শুভ্র সুন্দর’ গানের সাথে নাচ। স্কলার্স হোমের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচটি দর্শকদের চিত্তে দারুণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। এরপরই ছিল ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিদেশী ভাষার গান। সাপ্লাই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে একটি নাচ। সাপ্লাই ক্যাম্পাসেরই ছাত্র ঐশী সাহা এরপর আবৃত্তি করে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘মানুষ’ কবিতাটি। এটিও দর্শকদের ব্যাপক হাততালি কুড়ায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এরপর একে একে পরিবেশিত হয় পাঠাটুলা ক্যাম্পাসের ‘ধিতাং ধিতাং’ গানের সাথে নাচ, দক্ষিণ সুরমা শাখার শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘হ্যালো হ্যালো’ শিবগঞ্জ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘আমি বাংলায় গান গাই’, মেজরটিলা শাখার ক্ষুদে শিক্ষার্থী রোজার ‘মোর ভাবানারে কি হাওয়ায় মাতালো’ গানের সাথে নাচটিও ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। পরে আবার শিবগঞ্জ শাখার শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে একটি ইংরেজী গান, সাপ্লাই শাখার শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে আব্দুল আলিমের বিখ্যাত ‘ছল ছল ছল ছল’, শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘মোরা চঞ্চল মোরা’ দক্ষিণ সুরমা শাখার ‘একতারা দুই দেশের কথা’, মেজর টিলা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘শোন একটি মুজিবুরের কন্ঠে’, শাহীঈদগাহ শাখার শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে ‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর’ এবং সবশেষ পরিবেশনা ছিল পাঠানটুলা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের ‘স্কলার্স হোমের’ নিজস্ব থিম-সঙ্গীত।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাঝে মাঝে সংবর্ধিত শিক্ষার্থী ও উপস্থিত সুধিজনের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের  উপ-পরিচালক তাহমিনা বেগম।

জাফলং ভ্যালি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মোস্তাক আহমদ পলাশ। বক্তব্য রাখেন হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কবির চৌধুরী।

সবশেষে বক্তব্য রাখেন, হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ হাফিজ  আহমদ মজুমদার।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে উপস্থিত কৃতি শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি অবশ্য জাফলং ভ্যালি বোর্ডিং স্কুলের বিজ্ঞাপন প্রচারেই বেশি গুরুত্বারোপ করেছেন বলে মত ও বিরক্তি প্রকাশ করলেন উপস্থিত কয়েকজন অভিভাবক।

কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন স্কলার্স হোমের শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাস থেকে জিপি-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রাইয়ান চৌধুরী, গুরু সদয় স্কুল থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী সৌমিত্র দাস ও পাঠানটুলা ক্যাম্পাস থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী নায়লা নৌশীন।

নায়লা ও রাইয়ানের ইংরেজী বক্তব্যও যথারীতি মার খেয়েছে সৌমিত্রের বাংলা বক্তব্যের কাছে। তার বক্তব্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে হাততালিতে ফেটে পড়েছে গোটা অডিটোরিয়াম।

সবশেষে উপস্থিত কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে লটারি করে ১০ জনকে মঞ্চে নিয়ে তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথি বৃন্দ। অন্যদের নিজ নিজ আসনেই তা পৌঁছে দেন অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৬ মে ২০১৮/এক

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন