আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

জামায়াত নেতা নজমুলের প্ররোচনায় পুলিশ অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে

সংবাদ সম্মেলনে কানাইঘাটের আব্দুর রহমানের অভিযোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-২০ ১৫:২৫:১০

সিলেট :: কানাইঘাট থানা পুলিশের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন এই উপজেলার চরিপাড়া গ্রামের মৃত আবু ছিদ্দিকের পুত্র মো. আব্দুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এলাকার দুর্নীতিবাজ, দালাল ও সন্ত্রাসীদের গড ফাদার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পরিচয়ধারী জামায়াত নেতা নজমুল হক ও তার সহযোগীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পুলিশ তাদের উপর অন্যায়, অবিচার চালিয়ে যাওয়ায় তারা বাড়ি ঘরে থাকতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন।

রবিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলণে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলণে তিনি বলেন, গত বছরের  ২১ ডিসেম্বর রাতে মুখোশ পরা একদল পুলিশ সদস্য
আমার বাড়িতে ঢুকে বড়ভাই হাবিবুর রহমানকে খুঁজতে থাকে। এসময় তারা আমার মা, বড় ভাই ফয়জুর রহমান, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও আমার অপর বড় ভাই হাবিবুর রহমান হুরুহুনাকে রাতের খাবার থেকে তুলে বন্ধুকের নল দিয়ে গুতামেরে আহত করে। এক পর্যায়ে মা ভাইসহ অন্যদের বাঁচাতে হাবিবুর রহমান হুরুহুনা তার পরিচয় দিলে মুখোশপরা বন্দুকধারী একজন লোক বন্দুকের নালা দিয়ে উপর্যপুরিভাবে তাকে মারতে থাকে। এসময় আমার মা সায়বান বেগমসহ সবাই চিৎকার দিলে বন্দুকধারীরা নিজেদেরকে কানাইঘাট থানার এসআই আবু কাওছার, এসআই বসির আহমদ, কনস্টেবল পারভেজ, কনস্টেবল রাজ্জাক নুর পরিচয় দেয় এবং তাদের সাথে থাকা আরো ৩/৪ জনকে তাদের নিজস্ব লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা গুলি করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা হাবিবুর রহমান হরুহুনাকে হাত পা বেঁধে কয়েক দফা গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে আমার অপর ভাই ফয়জুর রহমানকে গুলি করলে তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময়ও আমার মা বোনদের সুর-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পুলিশের সাথে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন বাড়ীর উঠানে দাঁড়িয়ে কয়েক দফা ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে ও কেউ এগিয়ে গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পাশের বাড়ীর কামরুল ইসলাম এগিয়ে এলে তার উপরও তারা গুলি করে। এক পর্যায়ে পুলিশ আমার বড় ভাই ফয়জুর রাহমান ও হাবিবুর রহমানের নিথর দেহ সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমার মা ওসি আব্দুল আহাদকে অবগত করলে তিনিও তাকে পাল্টা হুমকি ধমকী দেন। ঐদিন রাত ৩টার দিকে আরেকদল পুলিশ বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটতরাজ চালায়। পরদিন রাতে পুলিশ হাবিবুর রহমান হরুহুনার লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে জোরপুর্বক দাফনের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী বাধাঁ দেন। এক পর্যায়ে  তারা ইউপি সদস্য শফিকুর রহমানের কাছে লাশ হস্তান্তর করে। এসময় ভাই ফয়জুর রহমানের সন্ধান করতে চাইলে এসআই আবু কাওছার ও এসআই বসির জানায় তিনি পুলিশ হেফাজতেই আছেন।

আব্দুর রহমান বলেন, এ ঘটনার ৪ দিন পর নিরুপায় হয়ে আমার ভাবি ফারহানা বেগম বাদী হয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ, এসআই আবু কাওছার, এসআই বশির, কনস্টেবল পারভেজ, কনস্টেবল রাজ্জাক নুরসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনের নাম উল্লেখ করে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (নং-৩৭১/২০১৭,  ২৬/১২/২০১৭)।  মামলটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।

মামলাদায়েরের পর থেকে আমাদের প্রানে মারার উদ্দেশ্যে কানাইঘাট থানা পুলিশের সহযোগীতায় চরিপাড়া গ্রামের মামলাবাজ ও ক্রিমিনাল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পরিচয়ধারী জামায়াত নেতা নজমুল হক ও তার বাহীনির অন্যান্যে সদস্যরা মামলা তুলে না নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, জামায়াত নেতা নজমুলের সাথে শলাপরামর্স করে পুলিশ গত ১৮ এপ্রিল ভাই ফয়জুর রহমানকে নরসিংদী থেকে উদ্ধার করেছে বলে প্রচার চালিয়ে একটি পাইপগানসহ আমাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। মামলাবাজ নজমুল কমান্ডারের প্ররোচনায় তারা আমার ভাইকে ডাকাত সাজিয়ে জেলের মধ্যে রেখেছে।

এক  প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, জামায়াত নেতা নজমুলের সাথে মসজিদের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরেই হাবিবুর রহমান হুরুহুনাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তার হয়েই কাজ করছে বলেও তিনি সংবাদ সম্মেলণে অভিযোগ করেন।

সবশেষে তিনি দেশের সাংবাদিক সমাজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিসহ সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় নিজের ভাইয়ের মুক্তি, হাবিবুর রহমান হুরুহুনা হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার ও পুলিশের অত্যাচার নির্যাতন থেকে তাদের পরিবারের সদস্যদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলণে উপস্থিত ছিলেন, তার মা সায়বান বেগম, খালা সিরাজুন বেগম, ও বোন জাকিরা বেগম।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ মে ২০১৮/এসজেপিকে/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন